নিজস্ব প্রতিবেদন: খেলোয়াড়দের বাধ্যতামূলকভাবে মাদক পরীক্ষায় বসায় কোনও অভিনবত্ব নেই, কিন্তু তা বলে রাজনীতিকরাও! হ্যাঁ, রাজনীতির ময়দানে বল পায়ে এগিয়ে যাওয়া মানুষগুলোকেও এবার হয়ত 'ড্রাগ টেস্ট'-এ অবতীর্ণ হতে হবে। তবে, 'বাধ্যতামূলকভাবে' না, 'রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা' থেকে! আর এই তালিকায় রাজনীতিক হিসাবে প্রথম নাম তুলতে চলেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। বিরোধীদের কটাক্ষের সামনে ক্যাপ্টেন নিজেই জানিয়েছেন যে তিনি 'ডোপ টেস্টে'র জন্য প্রস্তুত।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

'উড়তা পঞ্জাব' ছবির মুক্তি নিয়ে যত বিতর্কই বাঁধুক, মাদকাসক্তি পঞ্জাবের অন্যতম বাস্তবতা। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে অন্যতম 'ইস্যু' হয়ে উঠেছিল এই সমস্যা। সব দলই দাবি করেছিল, তারা ক্ষমতায় আসলে মাদক মুক্ত পঞ্জাব গড়তে বড় পদক্ষেপ করা হবে। নির্বাচনের ফলে অকালি-বিজেপি জোটকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। আর ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-এর নেতৃত্বাধীন সেই সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মাদক রোধে তারা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেই অনুযায়ী কাজ করছে না। এমতাবস্থায় মাদকাসক্তিতে রাশ টানতে কড়া সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।


মাদক রোধে আমরিন্দর সিং-এর সরকার যে অত্যন্ত দায়বদ্ধ তা প্রমাণ করতে গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে রাজ্যের ক্যাবিনেট। সিদ্ধান্ত হয়েছে, পঞ্জাব সরকারের যেকোনও নিয়োগের ক্ষেত্রে (পুলিস-সহ) 'ড্রাগ টেস্ট' বাধ্যতামূলক। এই মুহূর্তে যারা সরকারি পদে চাকরিরত, তাঁদেরও পদোন্নতির সময় 'ডোপ টেস্ট'-এ পাশ করতে হবে। পাশাপাশি, 'ডোপ টেস্ট'কে বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার অঙ্গও করা হয়েছে। তবে এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে এই পরীক্ষার ফল 'পজিটিভ' হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হবে না কি চাকরি চলে যাবে।


বিভিন্ন মহল থেকে পঞ্জাব সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রশংসা করা হলেও, শুধুমাত্র সরকারিকর্মীদের পরীক্ষায় বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনাতেও মুখর হয়েছেন অনেকে। সে রাজ্যের সরকারিকর্মী সংগঠনের সভাপতি সুখচৈন সিং খৈরার দাবি, রাজনীতিকরাও রাজকোষ থেকে বেতন নেন, তাই তাঁদেরও 'ড্রাগ টেস্টে' বসা উচিত। সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্বাগত জানালেও কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারিও মনে করেন, রাজনীতিকদেরও এই পরীক্ষায় বসা উচিত। নতুবা 'শ্রেণি বৈষম্য' তৈরি হবে।


এদিকে, আম আদমি পার্টির আমান অরোরা এবার এক ধাপ এগিয়ে সরাসরি ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং ও তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মীদেরও এই পরীক্ষায় বসার আর্জি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে আমান নিজেও এই পরীক্ষায় স্বেচ্ছায় বসেছেন। আর আমানের এমন 'অনুরোধে' সাড়া দিয়েই 'ড্রাগ টেস্টে' আগ্রহ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমিরিন্দর সিং। তবে, তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, "আমি আমার সহকর্মীদের এই পরীক্ষায় বসার জন্য বাধ্য করতে পারি না। এটা তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে আমি নিশ্চিত, তাঁরা সকলেই এই পরীক্ষায় নেশা মুক্ত হিসাবে চিহ্নিত হবেন"।


পঞ্জাব সরকারের এমন সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে 'ঐতিহাসিক'। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছে, যাক দেশটা বোধ হয় এগোচ্ছে। কারণ, রাজনীতিকদের মধ্যেও 'পেশাদারিত্ব' আসছে ধীরে ধীরে। আরও পড়ুন- ‘বিস্ফোরক’ মেসেজ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হোয়াটসঅ্যাপের