জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ২ জুলাই, হাথরসে ভয়ংকর দুর্ঘটনা। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ১২১ জনের। মর্মান্তিক এই ঘটনার ভয়বহতা এখনও কাটেনি। সেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভগবান শিবের সৎসঙ্গ। নারায়ণ সাকার হরি নামে একজন বাবার তত্ত্বাবধানে এই অনুষ্ঠানটি হয়েছিল। এই ভোলেবাবা নিজেকে স্বঘোষিত 'গডম্যান' বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। মর্মান্তিক ঘটনার পর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলেই দাবি করে পুলিস প্রশাসন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

৩ দিন পর তিনি নিজেই এবার এলেন ক্যামেরার সামনে। এক ভিডিয়ো বিবৃতিতে তাঁকে বলতে শোনা যায় যে, তিনি এই ঘটনায় গভীরভাবে দুঃখিত। তিনি বলেন, 'ভগবান আমাদের এই যন্ত্রণা সহ্য করার শক্তি প্রদান করবে। দয়া করে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখুন। আমার বিশ্বাস, যে এই হট্টগোল সৃষ্টি করেছিল সে রেহাই পাবে না। আমার আইনজীবী এপি সিং-এর মাধ্যমে আমি কমিটির সদস্যদের অনুরোধ করেছি, শোকাহত পরিবার এবং আহতদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সারা জীবন সাহায্য করার জন্য।'



জানা গিয়েছে, সৎসঙ্গের জন্য ৮০ হাজার মানুষের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে উপস্থিত হয়েছিল ২.৫ লাখ মানুষ। ফলত,তিন গুণের বেশি ভক্তদের ভিড়ে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু কীভাবে এত মানুষ পদদলিতের শিকার হল। জানা গিয়েছে, সৎসঙ্গের শেষের পর ভোলে বাবার গাড়ি যেখান দিয়ে গিয়েছিল সেখানের ধুলো সংগ্রহ ছুটেছিল লাখ লাখ ভক্তরা। স্বাভাবিকভাবেই, প্রচণ্ড হুড়োহুড়ি লেগে যায় সেখানে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে পুরুষ, মহিলা এবং শিশুরা একে অপরের উপড় দিয়ে দৌঁড়াতে শুরু করে। ফলে শতাধিক ভক্তদের মৃত্যু হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃ্ত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। শেষপর্যন্ত জানা যায়, ১২১ জনের মৃত্যু হয়। যার মধ্যে ১০০-র বেশি মহিলা এবং ৭ জন বাচ্চা আছে।


আরও পড়ুন:Lalu Yadav: চলে এল বিশাল আপডেট! মোদী সরকারের আয়ু কতদিন? জানিয়ে দিলেন বড় নেতা...


ঘটনাটির পর থেকে অধরা ছিলেন ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সাকার হরি। তাঁর আইনজীবী এপি সিং গতকাল জানিয়েছেন যে ভোলেবাবা তদন্তে সহযোগিতা করবেন। তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের জেলাভিত্তিক তালিকা রয়েছে। যারা মারা গিয়েছেন তাদের পরিবারের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিয়ের খরচ বহন করবে নারায়ণ সাকার হরির ট্রাস্ট।'


পুলিস জানিয়েছে, সৎসঙ্গের 'মুখ্য সেবাদার' দেবপ্রকাশ মধুকরকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে মোট গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে ৭ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, দেবপ্রকাশের হয়ে লড়ছেন ভোলেবাবারই আইনজীবী। তিনি দাবি করেছেন দেবপ্রকাশ আত্মসমর্পন করেছে, গ্রেফতার হয়নি। 


প্রসঙ্গত, হাথরস ঘটনায় ইউপি পুলিস দেবপ্রকাশকে প্রধান অভিযুক্ত করে। ফলত তার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করে পুলিস। এমনকি পুলিস তাকে গ্রেফতারের জন্য ১ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। সৎসঙ্গ-এর আয়োজক কমিটির অংশ থাকা ২ মহিলা স্বেচ্ছাসেবক-সহ আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


আরও পড়ুন:Honour Killing: বাড়ির অমতে নিজের ভালোবাসার মানুষকে বিয়ের 'শাস্তি', যুবতীকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারল পরিবার!


উল্লেখ্য, শুক্রবার স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। ৫ জুলাই, শুক্রবার সাতসকালেই দিল্লি থেকে সড়কপথে হাথরসের উদ্দেশে রওনা হন রাহুল। বিরোধী দলনেতার সঙ্গে ছিলেন রাজ্য কংগ্রেস প্রধান অজয় ​​রাই, রাজ্য কংগ্রেসের ইনচার্জ অবিনাশ পান্ডে, পার্টির মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাতে এবং অন্যান্য পদাধিকারীরা। রাহুল বলেন, 'অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবং বহু মানুষ মারা গিয়েছে। আমি এটা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। ব্যবস্থায় ঘাটতি রয়েছে। আমি মনে করি দুর্ঘটনাগ্রস্তদের আরও বেশি ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। কারণ তারা খুবই দরিদ্র। আমি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে অধিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের আরও ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। পরিবারের সদস্যদের দাবি যে সেদিন পুলিসের ব্যবস্থা যথেষ্ট ছিল না।'


 


 


 


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)