জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কোভিড লকডাউনের প্রেমকাহিনীর ভয়ংকর পরিণতি! করোনা মহামারীতে চারদিকে যখন মৃত্যুমিছিল, সেই ত্রাসের সময় শুরু হয়েছিল এই ভালোবাসার গল্প। কিন্তু সেই ভালোবাসার গল্পের পরিণতি হল অত্যন্ত নির্মম, নিষ্ঠুর। প্রেমের পরিণতি শেষে খুনে! বিয়ে পর্যন্ত গড়ালেও, টিকল না সংসার। স্ত্রী, শ্বশুর ও শাশুড়ি- একসঙ্গে ৩ জনকে খুন করল অভিযুক্ত যুবক। শিউরে ওঠার এখানেই শেষ নয়... খুনের পর ৯ মাসের শিশু কোলে থানায় হাজির হয় অভিযুক্ত যুবক। আত্মসমর্পণ করে সে! 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভয়ংকর সেই ঘটনার বিবরণ শুনে থানায় উপস্থিত পুলিস অফিসারদের তখন ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে অসমের গোলাঘাট জেলায়। মৃতার নাম সংঘমিত্রা ঘোষ, বয়স ২৪ বছর। অভিযুক্ত স্বামী নাজিবুর রহমান বোরা, বয়স ২৫ বছর। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই এই ভয়ংকর পরিণতি বলে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নাজিবুর রহমান বোরা একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। ২০২০ সালের জুন মাস, কোভিড লকডাউনের সময়, ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয় সংঘমিত্রা ও নাজিবুরের। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমে। তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। এরপর সেই বছরই অক্টোবরে দুজনে পালিয়ে কলকাতায় চলে আসে। কলকাতার আদালতে দুজনে বিয়েও করে নেয়। 


তারপর যদিও সংঘমিত্রাকে তাঁর বাবা-মা বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণে সে বিবাহিত। পরের বছর সংঘমিত্রার বাবা-মা সঞ্জীব ও জুনু ঘোষ পুলিসে মেয়ের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস সংঘমিত্রাকে গ্রেফতারও করে। মাসখানেক জেল খাটেন সংঘমিত্রা। তারপর জামিন পাওয়ার পর সংঘমিত্রা আবার বাপের বাড়িতেই ফিরে যান। এরপর ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে, নাজিবুর ও সংঘমিত্রা আবার পালিয়ে যান। এবার চেন্নাইতে। সেখানে তাঁরা ৫ মাস একসঙ্গে ছিলেন। তারপর অগাস্ট মাসে তাঁরা যখন আবার গোলাঘাটে ফিরে আসেন, তখন সংঘমিত্রা গর্ভবতী। 


অসমে ফিরে আসার পর সংঘমিত্রা এবার নাজিবুরের বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন। তারপর গত বছর নভেম্বরে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন সংঘমিত্রা। কিন্তু সন্তান জন্মের ৪ মাসের মাথায়, চলতি বছর মার্চে সংঘমিত্রা শিশুপুত্রকে নিয়ে নাজিবুরের বাড়ি ছেড়ে বাপেরবাড়ি ফিরে যান। পাশাপাশি, পুলিসে নাজিবুরের বিরুদ্ধে তাঁর উপর অত্যাচারের, গার্হস্থ হিংসার অভিযোগও দায়ের করেন সংঘমিত্রা। অভিযোগের ভিত্তিতে নাজিবুরের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়। নাজিবুরকে গ্রেফতার করে পুলিস। ২৮ দিন পর জামিনে মুক্তি পান নাজিবুর। এখন জেল থেকে ছাড়া পেয়েই নাজিবুর তার শিশুপুত্রের সঙ্গে দেখা করতে চায়। কিন্তু সংঘমিত্রার পরিবার বাধা দেয়। 


দুই পরিবারের ভিতর সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের মধ্যেই নাজিবুর রহমানের ভাই সংঘমিত্রা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পালটা পুলিসে অভিযোগ দায়ের করেন।  নাজিবুরকে হেনস্থার অভিযোগ করেন তিনি। এরপরই সোমবার সংঘমিত্রা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে নাজিবুরের বিবাদ চরমে পৌঁছয়। তর্কাতর্কি চলাকালীনই নাজিবুর স্ত্রী সংঘমিত্রা ও শ্বশুর-শাশুড়ি সবাইকে খুন করে। তারপর ৯ মাসের শিশুপুত্র কোলে সটান গিয়ে হাজির হয় থানায়। এদিকে ঘর তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। ঘরে পড়ে রয়েছে স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ির নিথর দেহ। অসম পুলিস প্রধান জানিয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। রাজ্য সিআইডি টিম ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে আছে।


আরও পড়ুন, Rapido: বাইক চালাতে চালাতেই হস্তমৈথুন র‌্যাপিডো চালকের! ভয়ংকর অভিজ্ঞতার বর্ণণা দিলেন তরুণী



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)