নির্ণয় ভট্টাচার্য্য


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

জেহাদ। তবে কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে নয়, সম্পূর্ণ ধর্ম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে নামকরণের মাধ্যমে ধর্মের বীজ বপন করিয়ে দেওয়ার প্রচলিত পরম্পরার বিরুদ্ধে। রুখে দাঁড়ালেন 'আরভি১৫৫৬৭৭৮২০'। না না, চমকাবেন না, এটিই তাঁর নাম বা বলা ভাল তাঁর পছন্দের নাম। আর অপছন্দের নাম- 'রাজবীর উপাধ্যায়'।



আরভি১৫৫৬৭৭৮২০


অপছন্দের এই নামটাই বদলে ফেলতে চান আহমেদাবাদের বছর তেত্রিশের অটোচালক। কারণ, নামের মাধ্যে ব্যাক্তির ধর্ম পরিচয়ের সংকেত থাকে। আর সেই সংকেতকেই সংহার করতে চান 'আরভি১৫৫৬৭৭৮২০'। তাঁর সাফ কথা, মানুষ একে অন্যের নামের দ্বারা ধর্মীয় পরিচয় বুঝে নিতে চায়, কিন্তু তিনি এটা চান না। তিনি চান, 'ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু'। তাই, সরকারের কাছে তিনি আবেদন করেছেন তাঁকে 'আরভি১৫৫৬৭৭৮২০' নামেই অভিহিত করতে। সম্প্রতি তথ্যের অধিকার আইনে তিনি জানতেও চেয়েছেন, নাম বদলের প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে। তিনি নিজেই তাঁর এই আলফা-নিউমেরিক নামটি বেছেছেন, যার প্রথম দুটি অক্ষর আসলে তাঁর অপছন্দের নাম ও পদবীর প্রথম দুটি অক্ষর, আর বাকিটা স্কুলের রোল নম্বর।


যে ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে দেশ ময় দ্বেষ ও ধর্মীয় মৌলবাদের জন্ম দেওয়ার অভিযোগ, সেই বিজেপিরই 'দুর্জয় ঘাঁটি' গুজরাটের এক সামান্য অটো চালকের এহেন আবেদন চমকে দিয়েছে গোটা দেশকে। গোধরা কাণ্ড, গুজরাট দাঙ্গার রাজ্যের যুবকের এহেন মনোভাবকে দেখে অনেকেই বলছেন, যেখানে চাপ পড়ে বেশি, ফাটলটাও সেখানেই ধরে আগে। তবে এই একটা ঘটনাকে এখনই 'ফাটল' হিসাবে চিহ্নিত করার সময় বোধ হয় এখনও আসেনি। বরং, আপাতত যেটা বলা যায় তা হল দুর্বল আর্থ-সামাজিক অবস্থায় থাকা এই যুবক একুশ শতকের ভারতকে এক অনন্য দিশা দেখাচ্ছেন। আর তাঁর দেখানো আলো আরও উজ্জ্বল হচ্ছে নাম বেছে নেওয়ার ধরণের মাধ্যে দিয়ে। তিনি নিজের পছন্দের নামের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রমিক সংখ্যা তথা শিক্ষার সংকেতকে যুক্ত করেছেন। সত্যিই তো, নাম যদি পরিচয় হয়, আর তাতে যদি চিহ্ন বা সংকেত রাখতেই হয়, তাহলে তা হোক শিক্ষার। ভাল থাকুন আরভি১৫৫৬৭৭৮২০।