শুধু ৩৭০ ধারা রদই নয়, সব লক্ষ্যপূরণেই সঙ্ঘের কৌশল `বিকাশপুরুষ`-`লৌহপুরুষ` জুটি?
৫ অগাস্ট অমিত শাহ বোধহয় সকলকেই ছাপিয়ে গেলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিরোধীরা যতই ছত্রভঙ্গ, বিজেপি ততটাই শৃঙ্খলাবদ্ধ। বাজেট অধিবেশনে একের পর এক বিল পাশ করিয়ে নিল বিজেপি। রাজ্যসভায় শাসক দলের সংখ্যা গরিষ্ঠতা নেই। কিন্তু, সেখানেও বিরোধী ঐক্যে ভাঙন ধরিয়ে কাজ হাসিল করে নিয়েছেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়েই ইচ্ছেপূরণের স্বপ্ন দেখছে সঙ্ঘ। বল্লভভাই প্যাটেলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই তাঁর তুলনা শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপি মানেই মোদী। ২০১৩ থেকে চলছে পরম্পরাই। আসছে নির্বাচনী সাফল্যও। গত ৫ বছরে দেখা গিয়েছে মাত্র ২টি বিকল্প। বিদেশমন্ত্রী হিসেবে সুষমা স্বরাজের অসাধারণ মুন্সিয়ানা। আর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভূমিকায় রাফাল নিয়ে নির্মলা সীতারমনের সওয়াল।
৫ অগাস্ট অমিত শাহ বোধহয় সকলকেই ছাপিয়ে গেলেন। এমনকি মোদীকেও। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের প্রস্তাব পেশ হয় সংসদে। তার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা ম্যানেজ করেছেন শাহ। এবং সংসদের দুই কক্ষে দাঁড়িয়ে বিরোধীদের প্রশ্ন ও আক্রমণের মোকাবিলাও করেছেন সর্বভারতীয় সভাপতি। সবেতেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অমিত শাহ আক্রমণ করছেন। আর ট্রেজারি বেঞ্চে বসে মোদী সঙ্গত করছেন। চোখে দেখার পর বিশ্বাস না করে উপায় নেই। সঙ্ঘ পরিবারে তো ইতিমধ্যেই অমিতের সঙ্গে বল্লভ ভাই প্যাটেলের তুলনা হয়ে গেছে। বিজেপি সূত্রে খবর, ৩৭০ ধারা বিলোপে অমিত শাহের ভূমিকায় সঙ্ঘ যারপরনাই খুশি। বিজেপির অন্দরে অমিতকে লৌহপুরুষ হিসেবে ডাকা শুরু হয়ে গেছে। 'বকেয়া এজেন্ডাগুলি'ও অমিত শাহকে দিয়েই কার্যকর করাতে চায় সঙ্ঘ। অমিত না থাকলে এক ঝটকায় ধারা বিলোপ হত না, বিশ্বাস বিজেপি নেতাদের একাংশের।
তাহলে কি বিজেপির অন্দরে ফাটল ধরল? মেন্টর মোদীকে পিছনে ফেলে এগিয়ে এলেন অমিত শাহ? বিজেপির খবর যারা রাখেন তাঁরা বলছেন, সমীকরণটা অত সরল নয়। দু'জনের ৪০ বছরের সম্পর্ক। গুজরাটেও মুখ্যমন্ত্রী মোদীর ছত্রছায়ায় স্বরাষ্ট্র দফতর সামলেছেন অমিত শাহ। তিনি নিজেও মোদীকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। তাহলে?
বিজেপিরই আরেকটি সূত্রে খবর, পরিকল্পনা করেই মন্ত্রিসভায় আনা হয়েছে অমিত শাহকে। কারণ, এবার কঠিন ও বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলি সেরে ফেলতে চায় বিজেপি। বাজপেয়ী জমানাতেও একইভাবে অটল ও আডবাণী জুটির সরকার চলেছে। বিজেপি বলত, লৌহ পুরুষ ও বিকাশ পুরুষ। বিরোধীরা বলত মুখ ও মুখোশ। ২০০৪ বিজেপি হেরে যাওয়ায়, লক্ষ্যপূরণ হয়নি। মোদী ও অমিত শাহের টিম বানিয়ে অধরা সাধপূরণের আশাতেই বুক বাঁধছেন নাগপুরের নেতারা। ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে অমিত শাহের সঙ্গে সর্দার পটেলের তুলনা।
আরও পড়ুন- ইমরান কী চান আমরা ঘাস খেয়ে থাকি? ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য রদে প্রশ্ন পাকিস্তানিদের