মাত্র ১ দিনেই রকেটের ত্রুটি সারিয়ে ফেলেছিলেন বিজ্ঞানীরা, সফল উৎক্ষেপণের পর জানালেন ইসরো প্রধান
এদিন উৎক্ষেপণের পর কে শিবন জানান, `গত ১৫ জুলাই ত্রুটি ধরা পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের প্রযুক্তিবিদরা তা সারিয়ে ফেলেন। তার পর চলে পরীক্ষা নিরীক্ষার পালা। রকেটের সমস্ত যন্ত্রাংশ যে সঠিক ভাবে কাজ করছে তা নিশ্চিত করা হয়।`
নিজস্ব প্রতিবেদন: যাবতীয় বাধাবিঘ্ন কাটিয়ে চাঁদের পথে পাড়ি দিল চন্দ্রযান ২। সোমবার দুপুর ২.৪৩ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে GSLV Mark III রকেটে চড়ে নির্দিষ্ট কক্ষে পাড়ি দেয় সে। উৎক্ষেপণের সময় মিশন কন্ট্রোলে হাজির ছিলেন ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবম। উৎক্ষেপণের পর নির্ধারিত ১৬ মিনিটে চাঁদের কক্ষে পৌঁছে যায় যানটি। প্রাথমিক ধাক্কার পর এই সাফল্যের জন্য চন্দ্রযান ২ এর সঙ্গে জড়িত সমস্ত প্রযুক্তিবিদদের কৃতিত্ব দেন শিবম।
মোট ৩ ধাপে ভূপৃষ্ঠ নির্দিষ্ট কক্ষে পৌঁছয় চন্দ্রযান। প্রতিটি ধাপই নিখুঁতভাবে পূর্বপরিকল্পনা মতো কাজ করেছে বলেছে জানিয়েছে ইসরো। উৎক্ষেপণের পর চাঁদের কক্ষে পৌঁছবে মোট ১৫ বার জ্বলবে চন্দ্রযানের রকেট। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের বুকে নামবে চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রম।
এদিন উৎক্ষেপণের পর কে শিবন জানান, 'গত ১৫ জুলাই ত্রুটি ধরা পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের প্রযুক্তিবিদরা তা সারিয়ে ফেলেন। তার পর চলে পরীক্ষা নিরীক্ষার পালা। রকেটের সমস্ত যন্ত্রাংশ যে সঠিক ভাবে কাজ করছে তা নিশ্চিত করা হয়।'
চাঁদের পথে পাড়ি দিল চন্দ্রযান ২, শ্রীহরিকোটা থেকে সফল উৎক্ষেপণ
ইসরোর চেয়ারম্যানের কথায়, চন্দ্রযান ২ উৎক্ষেপণের জন্য জিএলএলভি মার্ক থ্রি রকেটের ক্ষমতা ১৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
চন্দ্রযান ২-এ রয়েছে মোট তিনটি অংশ। অরবিটারটির নাম চন্দ্রযান ২। যানের যে অংশটি চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে তার নাম বিক্রম। আর চাঁদের মাটিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর জন্য তৈরি গাড়ি বা রোভারটির নাম প্রজ্ঞান।
ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, অরবিটারের ওজন ২ টনের কিছু বেশি। সৌরশক্তি থেকে ১০০০ ওয়াট বিদ্যুৎশক্তি তৈরি করতে পারে এই যান। চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার এক কক্ষে আবর্তন করবে এটি। প্রায় ১ বছর ধরে চাঁদের ভূস্তরের নানা বৈশিষ্ট নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে এটি।
চাঁদের কক্ষে প্রবেশের পর চন্দ্রযান থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে ল্যান্ডার 'বিক্রম'কে। চাঁদের বুকে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে অবতরণ করবে যানটি। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের জন্য আদর্শ স্থান খুঁজে অবতরণ করবে বিক্রম।
বিক্রমের ভিতরে রয়েছে রোভার 'প্রজ্ঞান'। ২৭ কিলোগ্রাম ওজনের এই যানটি সৌরশক্তি ব্যবহার করে ৫০ ওয়াট বিদ্যুৎশক্তি তৈরি করতে পারে। চাঁদের পৃষ্ঠে ৫০০ মিটার পথ পরিক্রমা করবে এই যান। বিক্রম ও প্রজ্ঞানের আয়ু ১ চন্দ্রদিবস বা পৃথিবীতে ১৪ দিন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনো পর্যন্ত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেনি কোনও যান। ওই এলাকায় খাদে জমে থাকা বরফের চরিত্র জানা যাবে এই অভিযান থেকে। তাছাড়া চাঁদের ওই এলাকায় রয়েছে হিলিয়াম থ্রি বা টিট্রিয়াম পরমাণু। যা বৈজ্ঞানিক গবেষণার এক মূল্যবান সম্পদ।