রামু-শ্যামু বিভ্রান্তি ছড়ানোর মাস্টার, মোদী-শাহের NRC-ভোলবদলে খোঁচা অধীরে
গরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে প্রতিবাদ তুঙ্গে ওঠায় আপাতত শুধু ধীরে চলছেন মোদী-শাহ, দাবি বিরোধীদের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: গোটা দেশে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য মঙ্গলবার পর্যন্তও মিলছিল না। রবিবার নরেন্দ্র মোদী রামলীলা ময়দানের সভায় বলেছিলেন, সারা দেশে এনআরসি চালুর বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তার ৪৮ ঘণ্টা পর অমিত শাহের গলাতেও একই সুর। তাঁদের এমন মতবদল নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী। তাঁর মন্তব্য, রামু ও শ্যামু বিভ্রান্ত করার মাস্টার। ওদের বক্তব্য খতিয়ে দেখা দরকার।
সংসদে অমিত শাহ বলেছেন, এনআরসি হচ্ছেই। গত রবিবার, দিল্লির রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়নি। বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টায় মঙ্গলবার অমিত শাহের মন্তব্য, এই মুহূর্তে NRC নিয়ে সরকারের অভ্যন্তরে কোনও কথাবার্তা চলছে না। যখন প্রক্রিয়া শুরু হবে, তখন তা লুকিয়ে হবে না। রামলীলায় প্রধানমন্ত্রীর দাবি, দেশে কোনও অ-নাগরিক শিবির নেই। অথচ, অমিত শাহ মানছেন, অসমে অ-নাগরিক
শিবির রয়েছে। ফলে ধোঁয়াশা এখনও থাকছে। বুধবার লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন,''মোদীজি এমন বলছেন, যেন কখনও এনআরসি-র নামই শোনেননি। অথচ গোটা দেশে এনআরসি চালুর কথা সংসদে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।'' মোদী-শাহকে বিঁধে অধীরের কটাক্ষ, ইয়ে রামু ঔর শ্যামু ক্যা ক্যাহতে হ্যায়, ক্যায় নেহি ইসপে হামকো ধ্যান দেনা পড়েগা, কিঁউকি ইয়ে গুমরা কে মাস্টার হ্যায়। (রামু আর শ্যামু কী করেন, কী করেন না সেটা ভেবে দেখতে হবে। কারণ এরা বিভ্রান্ত করার মাস্টার)
দেশজুড়ে এনআরসি ও সিএএ বিক্ষোভের মাঝে রবিবার রামলীলা ময়দানের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন,''১৩০ কোটি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, ২০১৪ সালে আমার সরকার আসার পর থেকে এনআরসি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অসমে এনআরসি হয়েছে। '' তিনি আরও বলেন,''মিথ্যা রটানো হচ্ছে। অনেক নেতা টিভি চ্যানেলে দাবি করছেন, গোটা দেশে এনআরসি করতে বিশাল খরচ বইতে হবে। কিন্তু যে জিনিস নেই, তার জন্য কেন মগজ লাগাচ্ছেন?'' প্রশ্ন উঠেছিল, কে ঠিক বলছেন? মঙ্গলবার মোদীকে সমর্থন করেন অমিত শাহ। বলেছেন,''প্রধানমন্ত্রীই সঠিক। গোটা দেশে এনআরসি নিয়ে মন্ত্রিসভা বা সংসদে কোনও আলোচনাই হয়নি।''
বিরোধীদের দাবি, ধোঁয়াশাই প্রমাণ করছে, দেশজুড়ে নাগরিক পঞ্জির কাজ শুরু করার চেষ্টা করবেই মোদী সরকার। নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে প্রতিবাদ তুঙ্গে ওঠায় আপাতত শুধু ধীরে চলছে তারা।
আরও পড়ুন- CAA-এ নিয়ে মেরুকরণে হাত পোড়ায় বিক্ষোভকারীদের আত্মসমালোচনার পাঠ মোদীর!