নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রায় চার দশক পর চিন ও ভারতের সীমান্ত সংঘর্ষ। করোনাভাইরাসের পর বিভিন্ন চিনা সংস্থা বা চিনা বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলি এমনিতেই বেশ চাপে। তার উপর বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও টলমল অবস্থা হতে পারে চিনা সংস্থাগুলি। তবে, শুধু চিনা নয়, চিন থেকে বিনিয়োগকারী জোগাড় করা ভারতীয় সংস্থাগুলিও পড়তে পারে আর্থিক গেরোয়। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দুই দেশের মধ্যে এই যুদ্ধ আবহে এখন চরম শঙ্কায় আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেড, শাওমি কর্প থেকে টাটা মোটরের মতো বিশাল সংস্থা। অর্থাত্ দুই দেশেই বিপুল সংখ্যক গ্রাহক ও বিনিয়োগকারী থাকা সংস্থাগুলির কর্তাদের কপালে এখন চিন্তার মেঘ।


সোশ্যাল মিডিয়ার গন্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন স্থানে পথে-ঘাটে পৌঁছেছে চিনা দ্রব্য বয়কটের ডাক। ভারতীয় সেনার উপর চিনের আক্রমণ ও গালোয়ার উপত্যকায় চিনের কার্যত দখলদারির ঘটনার পর চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন অনেকেই। সে সোশ্যাল মিডিয়ায় চিনা অ্যাপ বয়কটের হিড়িকই হোক বা চিনের দূতাবাসের সামনে চিনা দ্রব্য ভাঙচুর করে বিক্ষোভ প্রদর্শন। কিন্তু, বাস্তবে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্ দুই অর্থনীতি ওতপ্রোতভাবে পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। জড়িত দুই দেশের বহু বড় সংস্থা ও তার কর্মীদের রুটি-রুজি।


ভারতে অটোমোবাইল, স্মার্টফোন, যান্ত্রিক প্রযুক্তি ইত্যাদি অগণিত ক্ষেত্রে দেশীয় সংস্থাগুলি চিন থেকে আমদানিকৃত কাঁচামালের উপর নির্ভরশীল। ফলে, ভারত-চিন যুদ্ধের আবহে যে সমগ্র শিল্প ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে তা বলাই বাহুল্য। 


তবে, এখনই সংস্থাগুলির পক্ষে শঙ্কার কিছু নেই, এমনটাই মনে করছেন দাই মিঙ, সাংহাইয়ের একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার ফান্ড ম্যানেজার।


চিনা ধনকুবের জ্যাক মা-র সংস্থা আলিবাবা ভারতে বহু ডেটা সেন্টার চালায়। সেই সঙ্গে আলিবাবা সংস্থার ব্রাউজার 'UC Browser' এখনও পেজ ভিউয়ের নিরিখে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ। 


চিনা সংস্থা Xiaomi গত বছরের চতুর্থ কোয়ার্টারে ভারতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া স্মার্টফোন ব্র্যান্ড। ২০১৯-এর শেষ ৪ মাসে দেশের বিক্রি হওয়া মোট স্মার্টফোনের ২৯ শতাংশই ছিল Xiaomi-র।


অন্যদিকে স্মার্টফোনের কথা ভাবলেই এর পরেই আসে ইন্টারনেট কানেকশনের ভাবনা। সেক্ষেত্রেও ভারতে প্রথম 5G ইন্টারনেট প্রযুক্তির কাঁচামাল সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছে চিনা সংস্থা Huawei Technologies Co. নামের সংস্থা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথ্যের নিরাপত্তা খাতিরে Huawei-কে প্রবেশাধিকার দেয়নি। 


বৃহস্পতিবার ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ভারতের সরকারি সংস্থাগুলি চিন থেকে কাঁচামাল আমদানি বন্ধ করতে পারে বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে টেলিকম সংস্থাগুলিকে Huawei ও ZTE-র মতো সংস্থা থেকে কাঁচামাল কেনা বন্ধ করতেও বলা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।


অন্যদিকে ভারতীয় সংস্থা টাটা মোটর্সের অধীনস্থ বিলাসবহুল গাড়ির ব্র্যান্ড জ্যাগুয়ার ল্যান্ড রোভারের অন্যতম বৃহত্ বাজার চিন। করোনা পরিস্থিতি চিনে হ্রাস পাওয়ার পর ধীরে ধীরে চিনে বাজার আবার চাঙ্গা হচ্ছিল বলে জানিয়েছিল সংস্থা। তবে, এমন পরিস্থিতিতে বাজার আগের অবস্থায় ফিরবে কিনা, তাই নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।


ভারতের বিভিন্ন ইন্টারনেট ভিত্তিক স্টার্ট আপ সংস্থা, যেমন Ola, Swiggy-র মতো সংস্থা, বিভিন্ন চিনা সংস্থা যেমন আলিবাবা, টেনসেন্ট হোল্ডিংস, ফোসান ক্যাপিটালসের বিনিয়োগের উপর বৃহত্ভাবে নির্ভরশীল। অর্থাত্ ভারত-চিন সংঘর্ষের আবহে পরিস্থিতি জটিল হলে চাপে পড়তে হতে পারে ভারতীয় সংস্থাগুলিকেও।

আরও পড়ুন : চিনকে বাগে আনতে চিনা খাবার বর্জনের ডাক খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর