নিজস্ব প্রতিবেদন: সামনেই উৎসবের সিজন। এদিকে করোনার চোখরাঙানি এখনও বন্ধ হয়নি। এর মধ্যেই চলে এল আনলক-৫-এর লগ্ন। সারা দেশের মানুষ এখন তীব্র উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করছেন, ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার ছাড় দেবে বা ছাড়ের মাত্রা বাড়াবে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সিনেমা হল কি খুলবে? এটাই এখন লাখটাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্য ১ অক্টোবর থেকে সিনেমা হল খোলার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু দেশের বাকি রাজ্য? ট্যুরিজমে বা শিক্ষাক্ষেত্রেই-বা কী রকম শিথিলতা মিলবে, এটা নিয়েও জল্পনা আছে।


প্রতিটি আনলক-পর্বেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে আনলক-৪-এ ছাড়ের ব্যালান্স শিট ছিল মানুষের কাছে সব চেয়ে বেশি আনন্দের। মেট্রো রেল খুলে দেওয়া হয়েছিল। স্কুলে-স্কুলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, নির্ধারিত পড়ুয়াসংখ্যা নিয়ে তারা ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভ-এর ক্লাস আয়োজন করতে পারে। অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও নানা ছাড় মিলেছিল।



যে সাতটি রাজ্যের অবস্থা করোনায় বেশি সঙ্গিন হয়ে পড়েছে তাদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে দিয়েছিলেন, আর ব্যাপক লকডাউন নয়। প্রয়োজনে এ বার 'মাইক্রো-কনটেনমেন্ট' করা হবে। মানে, ধরা যাক, পাড়ায় কারও করোনা হল, তখন সেই বাড়িটুকুই শুধু সিল করে দেওয়া হবে। বাকি জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে। 


কিন্তু এ বার এই আনলক-পাঁচে কী হবে? বিভিন্ন সূত্র থেকে ছাড়ের যে ফিরিস্তি শোনা যাচ্ছে, তা কিন্তু মন্দ নয়। ইউনিয়ন হোম মিনিস্ট্রি-র তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আনলক-৫-এ কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। যেমন, দর্শকসংখ্যা বা দর্শকাসনের ব্যাপারে কিছু রেসট্রিকশন-সমেত অক্টোবর থেকেই সিনেমা হল খুলে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৫০ জন দর্শক নিয়ে হল খোলার কথা ভেবেছে। এখন দেখা যাক, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কী বলে। এ ছাড়া, সুইমিং পুল বা এন্টারটেনমেন্ট পার্কের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি ইতিবাচক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। 



তবে, সব চেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ রিলাক্সেশন আসতে চলেছে ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে। সিকিম সরকার যেমন অনেক আগেই জানিয়ে রেখেছে, অক্টোবরেই তারা পর্যটনক্ষেত্রে খুলে দেবে। সেই মতো ১০ অক্টোবর থেকেই তারা হোটেল, হোম স্টে এবং পর্যটনের সঙ্গে জড়িত সেক্টরগুলি খুলে দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগও তারা ১ অক্টোবর থেকেই চালু করে দেবে বলে জানা গিয়েছে। 


উত্তরাখণ্ডের সরকারও করোনা-পরবর্তী পর্যটনের প্রক্রিয়া নিয়ে এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছে। তারা ঘোষণা করে দিয়েছে, সেখানে বেড়াতে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের আর করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট  জমা দিতে হবে না। তা ছাড়া, সেখানে কোনও হোটেল বা হোম স্টে-তে থাকার বিষয়ে বাধ্যতামূলক দিনসংখ্যার দিক থেকে যে কড়াকড়ি পর্যটকদের ওপর এতদিন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, শিথিল হচ্ছে তা-ও। 


ওড়িশা সরকারও ১ অক্টোবর থেকে তাদের সমস্ত ডেস্টিনেশন খুলে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। তবে হেলথ সেফটি গাইডলাইনস মেনেই তারা সব খুলবে। 


শিক্ষা ক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই আরও ছাড় আসবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলিতেও আসবে প্রত্যাশিত ছাড়। সব মিলিয়ে মানুষের মধ্যে খোলা ও স্বাধীন জীবনযাত্রা নিয়ে একটা জল্পনা-কল্পনার অবকাশ এসে গিয়েছে।


সামনেই পুজো। তারপর আছে লক্ষ্মীপুজো, দীপাবলি, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। পর পর উৎসব। রাজ্য সরকার দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে তাদের ভাবনাচিন্তার কথা জানিয়েছে। পুজো হচ্ছে। তবে একটু নিয়মকানুন মেনে। ফলে বাঙালি খুশি। এখন সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, আনলক-৫-এ ঠিক কী কী ছাড় তার কপালে জোটে।  আর পুজোর আনন্দ সে কতটা হাসিল করতে পারে!