নিজস্ব প্রতিবেদন- কোনও মা তো বটেই, কোনও মানুষই হয়তো এমন ছবি দেখতে চায় না। আমরাও চাইনি, এমন কোনও ছবি প্রকাশ করতে! কিন্তু লজ্জা, দুঃখ, রাগ, হতাশা সত্ত্বেও কখনও কখনও অস্বস্তিকর সত্যিটাকে তুলে ধরতে হয়। না হলে এই সমাজের নিকৃষ্ট, জঘন্য, বর্বর চেহারাটা তুলে ধরা যায় না। অপরাধেরও একটা সীমা থাকে। অপরাধী ও অপরাধ তুলে ধরতে অনেক সময় নগ্ন সত্যিটাকে সামনে আনতে হয়। এই ছবি অস্বস্তিজনক। এই ছবি দেখে লজ্জা, ঘেন্নায় এই সমাজের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মাতে পারে। তবুও এই ছবি না দেখালে সমাজের অন্ধকার পরিসর সম্পর্কে সবটা জানা হবে না হয়তো!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চারপাশে যখন দেবীপক্ষের দেখনদারি, তখন এমন ছবি আমাদের বাস্তব চেনাতে পারে। চারপাশে যখন দেবী দুর্গার পুজোর জন্য সাজো সাজো রব, তখন এই ছবি দেখাতে পারে, আসলে ওসব উত্সবে মেতে ওঠার অজুহাত। মা, মেয়েদের প্রতি এই সমাজ যতটা ক্রুঢ় ছিল, ততটাই আছে। দুদিনের দেবীবরণের উত্সব। তার পর আবার পরিস্থিতি সেই একই দাঁড়াবে। এমনকী, এই দেবীপক্ষ চলাকালীনও এদেশে মেয়েদের রক্ষে নেই। সদ্যোজাত মেয়ে হলেই জুটবে শাস্তি। মেয়ে সন্তান হলে অবহেলা জুটতে পারে। কখনও কখনও চরম মূল্য চোকাতে হতে পারে। এ কোন সমাজ! এ কেমন মানুষের মাঝে রয়েছি আমরা! কোন পথে হেঁটে এসেছি। কোন পথ ধরেই বা হাঁটছি আমরা। এই পথ শেষ পর্যন্ত কোনও অবক্ষয়ের মাঝে নিয়ে দাঁড় করাবে আমাদের! 


ছত্তশগঢ়ের দুর্গের ঘটনা। সেখানে শিবনাথ নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে এক শিশু কন্যার নিথর দেহ। সেই মৃতদেহ দেখেই বোঝা যায়, হাসপাতাল থেকে সোজা নদীতে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে সেই নিরপরাধ শিশুকে। এদেশে মেয়ে হয়ে জন্মানোর শাস্তি পেয়েছে সে। পৃথিবীর আলো তার আর দেখা হল না। সেই ছোট্ট মেয়েটির নাড়ি পর্যন্ত এখনও শরীর থেকে আলাদা হয়নি। তার আগেই...। জেবরা সিরসা এলাকা থেকে সেই একরত্তির দেহ উদ্ধার করেছে পুলিস। ওই এলাকায় চারটি গ্রাম রয়েছে। পুলিস এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি ও আশা কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। গ্রামের কোন কোন মহিলা গর্ভবতী ছিলেন! এবং তাঁদের মধ্যে কারা এরই মধ্যে শিশুর জন্ম দিয়েছেন, সেটা খতিয়ে দেখা হবে। তার পরই হয়তো জানা যাবে সেই নিষ্ঠুর, নির্দয় মায়ের পরিচয়। মা শব্দটা এই দুনিয়ার সমস্ত মায়া, মমতা, ভালবাস, স্বার্থত্যাগ ধারণ করে। কিন্তু এ কেমন মা! এ কেমন দেবীপক্ষ!


পুলিস জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে ওই এলাকায় এই নিয়ে সাতটি শিশুর মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই শিশু কন্যাকে যখন নদীতে ফেলা হয়েছে তখন সে জীবিত ছিল নাকি মৃত, সেটা এখনই বলতে পারছে না পুলিস।