দিল্লির হার থেকে দলকে শিক্ষা নিয়ে বাংলা ভাগের প্রস্তাব দিলেন বিজেপি সাংসদ
পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে গোর্খাল্যান্ডের দাবি দীর্ঘদিনের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: আরও একটা রাজ্যে হার! দিল্লির ভোটের গণনা চলাকালীন দলকে প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর প্রস্তাব, গোর্খাল্যান্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। প্রতিশ্রুতি রেখে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা উচিত। স্বামীর টুইটে ২০২১ সালের আগে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য বিজেপি।
২০১৯ সালে দীর্ঘদিনের শত্রুতা ভুলে হাত মেলায় জেএমএম ও জেএনএলএফ। বিজেপির প্রতীকে তাদের প্রার্থী রাজু বিস্ত জয়লাভ করেন দার্জিলিঙে। নিন্দুকদের মতে, গোর্খাল্যান্ডই বিজেপি ও পাহাড়ি দুই দলের সংযোগসূত্র। বাস্তব বুঝে রাজ্য বিজেপি বাঙালির আবেগ মাথায় রেখে এনিয়ে শ্যাম ও কূল ধরে রেখেছেন। সেই রাখঢাক করে রাখা ব্যাপারকে প্রকাশ্যে এনে ফেললেন 'ঠোঁটকাটা' সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। দিল্লিতে প্রাথমিক ভোটপ্রবণতায় বিজেপির হার নিশ্চিত হতেই রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদের পরামর্শ,''২০১৪ সাল থেকে সংগঠনের কাঠামো নিয়ে নজর দেওয়ার দরকার। অনেক রাজ্যে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাখতে পারিনি। গোর্খাল্যান্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হোক।''
২০১৪ সাল থেকে বিজেপির সংগঠন সামলাচ্ছেন অমিত শাহ। গতমাসে তাঁর হাত থেকে সর্বভারতীয় সভাপতির ব্যাটন নেন জগত্প্রসাদ নাড্ডা। বিজেপির অন্দরের খবর, এখনও অমিতই শেষ কথা। সংগঠনের কাঠামো বদলের প্রসঙ্গ তুলে কি অমিত শাহকেই বার্তা দিলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী?
পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে গোর্খাল্যান্ডের দাবি দীর্ঘদিনের। দার্জিলিংকে আলাদা রাজ্য করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের সুভাস ঘিসিং। পরে সেই আন্দোলনকে এগিয়ে যান গোর্খা জনমুর্তি মোর্চার বিমল গুরুং। দার্জিলিং, তরাই-ডুয়ার্স নিয়ে আলাদা গোর্খাল্যান্ডের দাবি করে আসছে পাহাড়বাসীর একাংশ। সেই আবেগ ভাঙিয়ে ২০১৪ সালে দার্জিলিং থেকে জয়ী হন সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। তাঁকে সমর্থন দিয়েছিল জেএমএম। পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে সওয়াল করতেও শোনা গিয়েছিল বিজেপি সাংসদকে।
২০২১ সালে বাংলা জয়ের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। এমতাবস্থায় স্বামীর কথা মেনে প্রতিশ্রুতি পূরণ করলে বাংলায় তার বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাদের অভিমত, বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলা ভাগের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোর্খাল্য়ান্ডের ব্যাপারে এক পা এগোলেই ভোটের আগে মমতার হাতে হাতিয়ার তুলে দেবে তারা। বাঙালিয়ানায় শান দিয়ে সেই হাতিয়ার ব্যবহার করতে মমতা যে মওকা ছাড়বেন না, তা বাচ্চা ছেলেও জানে। সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর পরামর্শ শোনার অর্থ নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মারা। তবে ঘটনা হল, ঐতিহাসিকভাবে ছোট রাজ্যের পক্ষে বিজেপি। বাজপেয়ীর জমানায় জন্ম হয়েছিল ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীসগঢ়ের।
আরও পড়ুন- দিল্লিতে নিজের নাক কাটা গিয়েছে, BJP-র যাত্রা ভঙ্গে উত্ফুল্ল কংগ্রেস নেতৃত্ব