দুধ কিনে ফিরে দেখি মা জ্বলছে, ছেলেরা বলছে, “পাপা বাঁচাও আমাদের”
সালমানি জানান, সকাল ১১টা নাগাদ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ছিলাম দুধ কিনতে। ফিরে এসে দেখি শ’দুয়েক দুষ্কৃতী তাণ্ডব করে বেড়াচ্ছে বাড়িজুড়ে। তখন কে হিন্দু, কে মুসলিম ভাবার সময় পায়নি। ছুটে গিয়েছি সন্তানদের বাঁচাতে
নিজস্ব প্রতিবেদন: ছেলেরা সইদ সালমানিকে বলেছিল, “বাবা খুব খিদে পেয়েছে। ঘরেতে একফোঁটা দুধ নেই।” শাহদারার গমরী তখন থমথমে। দোকানপাট বন্ধ। দূরে জটলা চিত্কার। কখনও কখনও বোমার আওয়াজ। সন্তানদের পেটের খিদে মেটাতে প্রাণ হাতে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে ছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী সইদ সালমানি। কিন্তু কে জানতো বাড়ি ফিরে তাঁকে দেখতে হবে, চোখের সামনে তাঁর বৃদ্ধা মাকে জ্বলতে!
সালমানি জানান, সকাল ১১টা নাগাদ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ছিলাম দুধ কিনতে। ফিরে এসে দেখি শ’দুয়েক দুষ্কৃতী তাণ্ডব করে বেড়াচ্ছে বাড়িজুড়ে। তখন কে হিন্দু, কে মুসলিম ভাবার সময় পায়নি। ছুটে গিয়েছি সন্তানদের বাঁচাতে। সালমানির কথায়, “ওরা খুঁজছিল আমায়। হত্যা করতে।” ও দিকে তাঁর ৪ সন্তান চিত্কার করছে “পাপা আমাদের বাঁচাও।” সালমানির মা আকবরী আটকে উপরতলায়। নিচে কাপড়ে দোকান। দাউ-দাউ করে জ্বলছে। সন্তানরা কোনও ভাবে প্রাণে বাঁচলেও, বৃদ্ধা মা-র ঘরেতেই মৃত্যু হয় বলে জানান সালমানি।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মেনেই বিচারপতি মুরলীধরের বদলি, সাফাই কেন্দ্রের
দশ ঘণ্টা পর আকবরীর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। শরীরে বেশকিছু জায়গায় ঝলসে গিয়েছে। প্রথমিক অনুমান, ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে আকবরীর। দিল্লির বেশ কিছু জায়গা এখন শ্মশানের শান্তি। ধ্বংসস্তুপে ধিকধিক করে জ্বলছে আগুন। মানুষের মনে আতঙ্ক, স্বজনহারা আর্তনাদ, গুমোট বাতাসে পোড়া পোড়া গন্ধ। সালমানি বলেন, “আমার অনেক হিন্দু কর্মচারী রয়েছে, তাদের সঙ্গে কত শান্তিতে কাজ করি। আগুন নিয়ে খেলা করে কার লাভ হল বলুন তো!”