সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম মেনেই বিচারপতি মুরলীধরের বদলি, সাফাই কেন্দ্রের
এজলাসের মধ্যে কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুরদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের ভিডিয়ো দেখেন বিচারপতি এস মুরলীধর। কেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার মাঝরাতে পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন দিল্লির হিংসায় আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর। বুধবার মাঝরাতে তাঁর কাছেই নির্দেশ এল দিল্লি হাইকোর্ট থেকে অন্যত্র বদলির। এই মুহূর্তেই! সাধারণত, এমন ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি জারির পর হাতে ১৪ দিন সময় পান বিচারপতিরা, কিন্তু বিচারপতি মুরলীধরের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। সেখানেই উঠছে প্রশ্ন? কী এমন হল হঠাত্ বুধবার রাত ১১ নাগাদ নোটিস দিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে বিচারপতি মুরলীধরকে বদলি করা হল?
সরকারের যুক্তি, নিয়ম মেনেই হয়েছে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কলেজিয়ামের গত ১২ ফেব্রুয়ারির সুপারিশ মেনেই বিচারপতি মুরলীধরের বদলি হয়েছে। কলেজিয়ামের বিচারপতিদের সম্মতিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ দিন সকালে দিল্লি হিংসা নিয়ে মামলার শুনানিতে কেন্দ্রকে কড়া ভর্তসনা করেন বিচারপতি মুরলীধর। অমিত শাহের পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
Remembering the brave Judge Loya, who wasn’t transferred.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) February 27, 2020
এজলাসের মধ্যে কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুরদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের ভিডিয়ো দেখেন বিচারপতি এস মুরলীধর। কেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি। কেন্দ্রের জবাব, অন্য পক্ষ থেকেও এমন উস্কানিমূলক অনেক ভিডিয়ো রয়েছে। তা সত্ত্বেও কারোর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়নি কেন? প্রশ্ন তুলে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি মুরলীধর। তিনি বলেন, দিল্লিতে ১৯৮৪-র হিংসার পুনরাবৃত্তি হতে দিতে পারি না। কাকতালীয়ভাবে এদিনই তাঁর বদলির চিঠি আসে।
আরও পড়ুন- দিল্লির ঘটনা জাতীয় লজ্জা, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর বললেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী
সরকারের এই পদক্ষেপে সরব হন বিরোধীরা। রাহুল গান্ধী টুইট করে জানান, মনে পড়ে যাচ্ছে সাহসী বিচারপতি লোয়াকে। যাঁকে বদলি করা হয়নি। উল্লেখ্য, সোহরাবুদ্দিন শেখের ভুয়ো এনকাউন্টার মামলার মুখ্য তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন অমিত শাহ। ২০১৪ সালে বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু হয়। রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, বিচারপতির বদলি নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। বিচারব্যবস্থার উপরই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ১৯৭৫ সালে ইমার্জেন্সির উদাহরণ টেনে রবিশঙ্করের কটাক্ষ, যে দল একটি পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং বিচারব্যবস্থার উপর আক্রমণ করে, তাদের মুখে এসব কথা মানায় না।