নিজস্ব প্রতিবেদন: পালাবদলের ভোর? রাজ্যরাজনীতিতে ইদানীং যা চলছে তাতে বঙ্গবিজেপি একবাক্যে তা বলতেই পারে। তবে 'পালা'বদলের পরিবর্তে এই মুহূর্তে দলবদল বলাটাই বোধ হয় সমীচীন। একের পর এক তৃণমূলনেতা যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এখনও বিজেপিতে যোগ দেননি, কিন্তু দলত্য়াগ করে এই তালিকায় নিজের নাম তুলে ফেলেছেন দীনেশ ত্রিবেদীও (Dinesh Trivedi)। ১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেন তিনি। ছাড়েন তৃণমূল কংগ্রেসের সংস্রবও।


আরও পড়ুন: সঠিক সময়ে আলাদা রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে জম্মু ও কাশ্মীরকে: Amit Shah


দীনেশ ত্রিবেদী কি আবেগের বশে এই সিদ্ধান্ত নিলেন? এদিকে কিছুই কি আগে থেকে আঁচ করতে পারেনি তাঁর পূর্বতন দল তৃণমূল? সব উত্তর প্রত্যাশামতো পরিষ্কার নয়। তবে, এই লেখায় 'আচমকা ইস্তফা' কথাটা লেখা হয়েছে বটে; 'আচমকা' শব্দটি দীনেশের ক্ষেত্রে সম্ভবত সুপ্রযুক্ত নয়। 


কেন নয়?


কারণ, দীনেশের দলত্যাগের পরে সময় একটু গড়াতেই ক্রমে নানা তথ্য় সামনে আসছে। জানা যাচ্ছে, গত সেপ্টেম্বর থেকেই বেসুরো বাজছিলেন দীনেশ। বিষয়টা হয়তো ততটা প্রকাশ্যে আসেনি। হয়তো তা নিয়ে তেমন কাটাছেঁড়াও হয়নি। কিন্তু তৃণমূল দল এই পরিবর্তনশীল দীনেশকে বেশ কয়েকমাস ধরেই তন্নিষ্ঠ ভাবে লক্ষ্য করে আসছিল। এবং এটা করতে গিয়েই দীনেশ ত্রিবেদীর কাজকর্মে বেশ কিছু অসংগতিও ধরা পড়ছিল দলের চোখে।


কেমন সেই অসংগতি?


এক এক করে আলোচনা করা যাক। অসংগতি-১-- কৃষি বিল (Farm Bill) নিয়ে  তৃণমূল যেদিন রাজ্যসভায় বিক্ষোভ দেখাল, সেদিন তাতে যোগ দেননি দীনেশ। উল্টে সেই সময়ে তাঁকে বিজেপি এমপিদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যাচ্ছিল। বিষয়টি সেই সময়ে দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েওছিলেন এক সাংসদ।


অসংগতি-২-- তৃণমূল ভবনে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন নেতা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। দীনেশ ত্রিবেদীকে বারবার ডাকা হলেও তিনি একবারের জন্য়ও আসেননি। সূত্রে র খবর, একবার তাঁকে 'মোদীর গুজরাট বনাম দিদির বাংলা' নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে বলা হয়। তিনি রাজি হননি।


বেসুরোর খতিয়ান তো কিঞ্চিৎ মিলল। সুর মেলার হিসাবটা কি কিছু-কিছু মিলছে? দীনেশের সদ্য প্রাক্তন দলের একাংশ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলের একাংশের মত, দীনেশ বিজেপিতেই যাচ্ছেন। 


দীনেশকে ঘিরে কেন তাঁদের এমন গৈরিক-প্রত্য়য়? কারণটা আর কিছু নয়। স্রেফ কিছু সহজ সমীকরণ। সেই সব সমীকরণ ঘিরেই চলছে নানা জল্পনা।


কী সেই জল্পনা? 


সেটাও এক-এক করে আলোচনা করা যাক। জল্পনা-১-- আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহলের মত, দীনেশকে হয়তো সরাসরি ভোটরাজনীতিতে ব্য়বহার না-ও করতে পারে বিজেপি। গুজরাট থেকে রাজ্যসভার টিকিট পেতে পারেন তিনি। তার আগেই পথ পরিষ্কার করে রাখলেন দীনেশ।


জল্পনা-২-- যে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল মনোনীত হতে পারেন দীনেশ। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহলের মত, বিজেপি নিশ্চয়ই জানে, মোটেই দারুণ জনসংযোগসম্পন্ন নেতা নন দীনেশ; নন সংগঠকও। ফলে তাঁকে রাজ্যপাল পদে ভাবতেই পারে বিজেপি।  


জল্পনা-৩--আবার অন্য় সমীকরণে দীনেশকে সরাসরি ভোট-মঞ্চেও ব্যবহার করতে পারে বিজেপি, এমনটাও ভাবছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সেক্ষেত্রে হয়তো ব্যারাকপুর থেকেই বিজেপি'র হয়ে দাঁড়ালেন তিনি।


তবে, এ সবই 'যদি-কিন্তু'র স্তরে বিরাজ করছে। রাজনীতির জার্নি মুহূর্তে-মুহূর্তেই রোমাঞ্চকর চমৎকারিত্বে ভরা। দল ও পদ ত্যাগ করে দীনেশ কিন্তু বলে দিয়েছেন, তিনি তাঁর অন্তরাত্মার কথা শুনেছেন। আর চুপ করে থাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। ফলত, তাঁর নিভৃত 'অন্তরাত্মা' আগামী দিনে তাঁকে কোন পথে, কোন দলে টানবে তা বাইরে থেকে আঁচ করা কঠিনই। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহল এ বিষয়ে একমত।


আরও পড়ুন: Congress, জনতা দল হয়ে TMC-তে, দীনেশ ত্রিবেদীর জার্সি বদলের ইতিহাস পুরনো