কামাখ্যাই কামের মুক্তি, এখানে সতীর যোনিই শক্তির উত্স
বিশ্বজিত্ চক্রবর্তী: কামেশ্বরী হলেন কামাখ্যার দেবী। মানব-মানবীর কামানা, বাসনা পূরণের পরমেশ্বরী তিনি। কিন্তু দেবী কামাখ্যা সব রকম কামনা থেকে ভক্ত মনকে মুক্ত করেন। প্রকৃত ফল কিন্তু এটাই। তাঁর আশীর্বাদ সত্যি কেউ পেলে তখন জাগতিক চাওয়া-পাওয়ার আর ইচ্ছা হয় না। কাম ও খ্যায়া দুটি শব্দ মিলেই কামাখ্যা।
কাম্মা হচ্ছে ‘পালি’ শব্দ। এর অর্থ কর্ম। সত্ কর্ম ও পরোপকার সাধনের মধ্য দিয়ে কামাখ্যা মায়ের কাছে পৌছনোর পথ চিনে নিতে হয়। তিনি হলেন এক স্নেহময়ী জননী। কামাখ্যার প্রাচীন নাম হল প্রাগজ্যোতিষপুর। ধর্মারণ্য নামেও পরিচিত কামাখ্যা।
বৌদ্ধতন্ত্রের ভিতরেই দেবী কামাখ্যার ধারণা নিহিত। বজ্রযামী বৌদ্ধধর্ম ও অনুত্তর যোগ তন্ত্র এই ধারণা গড়ে তুলতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। বৌদ্ধ ধর্ম থেকেই হিন্দু ধর্মে এই দেবীর রূপান্তর যে ভাবে ঘটেছে- বজ্রযোগিনী
কামাখ্যা
কামাখ্যী
কামেশ্বরী
ষোড়শী
বৌদ্ধতন্ত্রে দেবীর অবয়ব উপস্থিতি মানা হয় না। শূন্যজ্ঞানে তাঁর পূজাঅর্চনা হয়। কামাখ্যা মন্দিরে গর্ভগৃহে রয়েছে মহামায়ার মহামুদ্রা ‘যোনিপীঠ’। ষোড়শীরি প্রতীক চিহ্ন। যা রক্তাভ রেশম বস্ত্রে আচ্ছাদিত। রেশম বস্ত্রের আবরণে মহালক্ষ্মী এবং মহাসরস্বতীর শিলাপীঠ যথাক্রমে দশ মহাবিদ্যার দুই মহাবিদ্যা কমলা ও মাতঙ্গীর পরিচয় বহন করে।
যে পর্বতে কামাখ্যা মন্দির, তা স্বয়ং মহাদেব। এখানেই সতীর যোনিমণ্ডল পড়েছিল। তারপরই এই পর্বত নীল বর্ণ ধারণ করে। তখন থেকে পর্বতের নাম ‘নীলাচল’। এই নীল শব্দটি বৌদ্ধতন্ত্রে বহুল ব্যবহৃত।