নিজস্ব প্রতিবেদন— মন্দির, মসজিদ, গির্জা, সব বন্ধ। ভগবানের দেখা নেই। ভগবানের বাড়িতে গিয়ে প্রার্থনা করবেন সে পথও খোলা নেই। একমাত্র ভগবান রূপে লড়ে যাচ্ছেন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনার প্রকোপে সারা বিশ্ব নাজেহাল। এমন দুঃসময়ে যাঁরা পাশে থাকেন তাঁরাই তো ভগবান। আর সেই ঈশ্বরকেই অপদস্থ করে চলেছেন একদল মানুষ। এর পর ডাক্তারদের রূপে লড়াই করে যাওয়া ঈশ্বররা মুখ ফিরিয়ে নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ, অপমান সহ্য করার সীমা পার হয়ে গেলে তাঁরাও হয়তো বলে দেবেন— রইল ঝোলা, চলল ভোলা! তখন কিন্তু পৃথিবীকে এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচানোর মতো কেউ থাকবে না। তবে বহু মানুষ এখ্নও ডাক্তারদের ভূমিকা বুঝতে পারছেন না।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করলে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। নতুন অর্ডিন্যান্স জারি করেছে সরকার। তবে তাতেও এক শ্রেণীর মানুষের টনক নড়ছে না। এবার ভয়ঙ্কর অভিযোগ করলেন দিল্লির লোক নায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনা সন্দেহভাজন কয়েকজন তাঁদের সঙ্গে শুধু দুর্ব্যবহারই করেননি, এমনকী হুমকিও দিয়েছেন। সেন্ট্রালাইজড অ্যাম্বুল্যান্স ট্রমা সার্ভিসেস করে কয়েকজন সন্দেহভাজনকে এদিন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ডাক্তারদের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। একজন ডাক্তার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বললেন, সকাল ৯টা থেকে টানা ১২ ঘণ্টা আমরা ডিউটি করছি। ১২০ জন রোগীকে এখান থেকে আজ কোয়ারানটিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। অনেক রোগী আজই ভর্তি হয়েছেন। সকালে একজন রোগীর সঙ্গে আরও দুই জন এসে উপস্থিত হন। প্রায় সব ডাক্তারই সেই সময় রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাই ওই রোগী এবং তাঁর পরিবারকে কিছুক্ষণের জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়। এর পর অধৈর্য হয়ে ওরা অন্য এক ডাক্তারের কাছে যান। মুখের মাস্ক খুলে বেপরোয়াভাবে ওই ডাক্তারের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন তাঁরা। ওদের সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলতে বলি আমরা। তখন হুমকির সুরে ওরা বলে, আমরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে আপনাদেরও মেরে মরব। ডাক্তাররা ওদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এর পর ওরা ইচ্ছাকৃতভাবে ডাক্তারদের শরীর স্পর্শ করতে শুরু করেন। যিনি স্পর্শ করছিলেন তিনি ছিলেন মহিলা। তাই ওয়ার্ড থেকে একজন মহিলা গার্ড এসে ওনাকে প্রতিহত করেন। এই ধরণের অপমান আর কতদিন আমরা সহ্য করব!


আরও পড়ুন— কোয়ারান্টিনের নিয়ম ভেঙেছে ছ'মাসের শিশু! মামলা দায়ের করল পুলিস



ওই হাসপাতালের এক মহিলা ডাক্তার বলেন, এই ধরনের হুমকি ও শাসানি আমাদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। এরকম চললে কাজ করা সত্যিই দুষ্কর হয়ে যাবে। আমরা দিন—রাত এক করে রোগীদের সারিয়ে তুলতে কাজ করছি। কিন্তু তার পরও এমন অপমান হজম করতে হচ্ছে। কয়েকজন বর্বর, অসভ্য মানুষের জন্য অনেককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।