ওয়েব ডেস্ক: সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় নাগাল্যান্ডের সুরহোজেলি লিজিত্সু সরকারের পতন ঘটালেন রাজ্যপাল পিবি আচার্য। লিজিত্সুর বদলে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াংকে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বিকাল তিনটের সময় নাগাল্যান্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করতে চলেছেন জেলিয়াং। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, জেলিয়াংকে আগামী ২২শে জুলাইয়ের মধ্যে বিধানসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলা হয়েছে রাজভবনের তরফে। আর এর ফলে গত ২২শে ফেব্রুয়ারি যে কুর্সি হারিয়ে ছিলেন জেলিয়াং তা আবারও ফিরে পেলেন তিনি। উল্লেখ্য, রাজ্যের পুর নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করায় তুমুল আদিবাসী অসন্তোষের মুখে পড়ে তাঁকে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিতে হয়েছিল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন ধরেই নাগা রাজনীতির নাটকে মোড় বদল ঘটছে। টি আর জেলিয়াং-এর নেতৃত্বে ৪৩ জন বিধায়ক রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ক্ষমতাসীন লিজিত্সুর নেতৃত্বের প্রতি। ফলে ৫৯ সদস্যের নাগা বিধানসভায় কার্যত কোণঠাসা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সুরহোজেলি লিজিত্সুর সরকার। তাই লিজিত্সু চেয়েছিলেন বিধানসভা নির্বাচনে জিতে আবার ক্ষমতায় ফিরতে। কিন্তু রাজ্যপাল পি বি আচার্য নাগা বিধানসভার অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেন জরুরী ভিত্তিতে অধিবেশন ডেকে সরকারকে তার পক্ষে সংখ্যা গরিষ্ঠের সমর্থন প্রদর্শন করতে। কিন্তু রাজ্যপালের এমন সিদ্ধান্ত কিছুতেই মানতে পারছিলেন না লিজিত্সু। তাই তিনি গুয়াহাটি হাইকোর্টে রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন জানান। গতকালই লিজিত্সুর সেই আবেদন বাতিল করে দেয় আদালত। আর তারপরেই আজকের আস্থাভোট এবং হার।



উল্লেখ্য, জেলিয়াং-এর নেতৃত্বে নাগা পিপলস ফ্রন্টের (এনপিএফ) ৪৩ বিধায়ক দীর্ঘ দিন ধরে লিজিত্সুর নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে যাচ্ছিলেন। নিজের পুত্রকে ক্যাবিনেটের বেতনভোগী উপদেষ্টা পদে নিয়োগ করায় জেলিয়াং শিবির লিজিত্সুর বিরুদ্ধে 'স্বজনপোষণে'র অভিযোগ আনে। যদিও দিন তিনেক আগে জেলিয়াংদের সঙ্গে বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার বার্তা দেন লিজিত্সু। প্রাথমিক ভাবে তাতে সাড়া দিলেও বিভেদের চিড় যে তাতে জোড়া লাগেনি তা আজ স্পষ্ট হয়ে গেল।



এদিকে নিজের দলের মধ্যে এই প্রবল বিরোধিতা এবং রাজ্যপালের আস্থাভোটের সিদ্ধান্তের প্যাঁচে পড়ে লিজিত্সু চেষ্টা করেন এনপিএফ-এর জরুরি বৈঠক ডেকে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে অনুরোধ করবেন রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে নস্যাত্ করে দিতে। কিন্তু কাজে আসেনি সেই পথও। এরই মধ্যে বর্তমানে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোটের সঙ্গে প্রায় এক দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনপিএফ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মোট ৫৯ বিধায়কের নাগা বিধানসভায় বর্তমানে চার বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন। কিন্তু সবরকম চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব কায়েম রাখতে পারলেন না লিজিত্সু। এখন দেখার কতটা মসৃন হয় জেলিয়াং-এর পথ। নাকি নাগা রাজনীতিতে অপেক্ষা করছে আরও নাটক!