দরজায় কড়া নাড়লেই এক ডাকে সাড়া দিতেন...
টুইট যুদ্ধে সুষমার মতো পরদর্শী খুব কম রাজনীতিকই ছিলেন বলে মনে করেন অনেক। তাঁর রসবোধ ওই কম শব্দের বাঁধনে বরাবর ধরা পড়ত। এই যেমন ধরুন না, মালয়েশিয়ায় এক প্রবাসী ভারতীয় তাঁর বন্ধুকে ফিরিয়ে আনতে সুষমা স্বরাজের দ্বারস্থ হয়েছিলেন
নিজস্ব প্রতিবেদন: তাঁর দরজায় কড়া নাড়লেই, এক ডাকে সাড়া দেন তিনি। পৃথিবী কেন মঙ্গলেও ভারতীয় নাগরিক যদি বিপদে পড়েন, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দু’বার ভাবেন না। তাঁর এই সাহায্যে কোনওদিনই ছাপ পড়েনি দল-দেশের বেড়াজালের সংঙ্কীর্ণতা। সেই জন্যই হয়ত তাঁকে ‘সুপারমম’ বলা হয়। তিনি সুষমা স্বরাজ, গতকাল রাতে হঠাত্ চলে গেলেন। অভিভাবকহীন হয়ে পড়লেন দেশের মানুষ। কারণ, বিদেশমন্ত্রক ছেড়ে দিলেও কথা দিয়েছিলেন, অসহায়দের জন্য তাঁর দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
বিদেশমন্ত্রী থাকাকালীন সুষমা স্বরাজই প্রথম বুঝিয়ে ছিলেন, টুইটারকে হাতিয়ার করে কীভাবে দূর দেশের অসহায় মানুষদের কাছে এক মুহূর্তে পৌঁছে যেতে হয়। তারপরই আশ্বাস দিয়ে বলতেন, ‘আপনার পাশে ভারতের বিদেশমন্ত্রক রয়েছে, চিন্তা করবেন না।’ এটা যে তাঁর কথার কথা নয়, কাজেও করে দেখিয়েছেন এমন একাধিক নজির রয়েছে।
টুইট যুদ্ধে সুষমার মতো পরদর্শী খুব কম রাজনীতিকই ছিলেন বলে মনে করেন অনেক। তাঁর রসবোধ ওই কম শব্দের বাঁধনে বরাবর ধরা পড়ত। এই যেমন ধরুন না, মালয়েশিয়ায় এক প্রবাসী ভারতীয় তাঁর বন্ধুকে ফিরিয়ে আনতে সুষমা স্বরাজের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। টুইটে ব্যকরণগত ত্রুটি রয়ে যায়। এক নেটিজেন কটাক্ষ করে ওই ব্যক্তিকে লেখেন হিন্দি বা পঞ্জাবিতে লিখে দিতে পারতেন। ওই নেটিজেনের কটাক্ষে স্বয়ং বিদেশমন্ত্রীর জবাব ছিল, সমস্যা নেই, বিদেশমন্ত্রী হওয়ার পর ইংরেজিতেই সব ভাষার উচ্চারণ রপ্ত করে নিয়েছি।
ইন্দিরা গান্ধীর পর দেশের দ্বিতীয় মহিলা বিদেশমন্ত্রী তিনি। কূটনৈতিক তরজার মতো ভারিক্কি বিষয় নিয়ে যে মন্ত্রক সব সময় ব্যস্ত থাকে, সুষমা থাকাকালীন আম জনতার মনে এই মন্ত্রকের গুরুত্ব বোঝাতে পেরেছিলেন। তাই তিনি একবার বলেছিলেন, মঙ্গলেও আপনি যদি আটকে থাকেন, সেখানেও ভারতীয় দূতাবাস সাহায্য করবে। হ্যাঁ, সাধারণ মানুষের মনে এই সাহস তিনি জুগিয়েছিলেন, একটা টুইট করেই সোজা বিদেশমন্ত্রীর কাছে দরবার করা যায়।