ওয়েব ডেস্ক : অসমের গান্ধী মূর্তি দেখলে ঠিক গান্ধী বলে মনে হয় না। বরং তা তাঁর ‘বিকৃত’ প্রতিকৃতি। ওই মূর্তি ভেঙে ফেলা হবে। বদলে অন্য একটি মূর্তি প্রতিস্থাপিত হবে। ভারতীয় শিল্পকলার স্রষ্টা রামকিঙ্কর বেইজের সৃষ্টি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন অসমের গুয়াহাটির (পূর্ব) বিজেপি বিধায়ক সিদ্ধার্থনাথ ভট্টাচা‌র্য। গান্ধী মূর্তিটি ভেঙে ফেলতে উদ্যোগী রাজ্য সরকারও। ঘটনায় প্রবল সমালোচনার ঝড় উঠেছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সোমবার কামরূপ জেলা আধিকারিকদের একটি বৈঠকে ওই গাঁধী মূর্তিটি সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে জায়গায় গাঁধীর অন্য একটি মূর্তি বসানো হবে। তবে ওই মূর্তিটি যে রামকিঙ্কর বেইজেরই তৈরি তা জানেন না বৈঠকে উপস্থিত আধিকারিকেরা। বৈঠকে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক সিদ্ধার্থনাথ ভট্টাচার্য।


সর্বভারতীয় ইংরাজি সংবাদপত্র দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "গুয়াহাটির গান্ধী মূর্তি বিকৃত। মূর্তিটির হাত ও পায়ের গঠন ঠিক নেই। এমনকি চশমাটাও ঠিক জায়গায় নেই।"  এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। আরও বলেন, "আমরা মূর্তিটিকে ভেঙে ফেলে নতুন করে গড়ব। যেসব জায়গায় খুঁত রয়েছে, সেগুলিকে ঠিক করতে হবে। এই মূর্তিটিকে ভেঙে ফেলে অন্যত্র গড়ব আমরা, সেটি দেখার মতো হবে।"


তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, "আপনি কি জানেন এই মূর্তি কে গড়েছিলেন?" উত্তরে তিনি বলেছেন, "অনেককে বলতে শুনলাম এই মূর্তিটি নাকি রামকিঙ্কর বেইজ গড়েছিলেন। কিন্তু আমার বিষয়টি ঠিক জানা নেই।"
 
স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই মন্তব্য বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সোমবারের বৈঠকে স্থানীয় বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থনাথ ভট্টাচার্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার ডেপুটি কমিশনার, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শুধু বিজেপি সাংসদই নয়, এই মূর্তি আদৌ কে বানিয়েছিলেন? তাঁর পরিচয় কী?... এসব বিষয়ে কোনও স্বচ্ছ ধারণা নেই তাঁদের কারোর মধ্যেই।


এপ্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর ভাইস চ্যান্সেলর স্বপন দত্ত বলেছেন, "বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। রামকিঙ্কর বেইজের অন্যতম সৃষ্টিগুলির মধ্যে গুয়াহাটির গান্ধীমূর্তি অন্যতম। একজন ভারতীয় হয়ে তাঁকে না চেনা কিংবা তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে অজানা থাকা, অত্যন্ত নিন্দনীয়।" ঘটনাটিকে অসমের শিল্পীমহল 'ক্রিমিন্যাল অফেন্স' বলেও কটাক্ষ করেছে।


প্রসঙ্গত, গুয়াহাটির সারানিয়া পাহাড়ের গাঁধী মণ্ডপে ওই মূর্তিটি রয়েছে। ১৯৬৮-এ রাজ্য সরকারের অনুরোধে ওই মূর্তি গড়ার কাজে হাত দেন রামকিঙ্কর বেইজ। তবে তা তিনি শেষ করেননি। রামকিঙ্করের ছাত্ররাই তাঁর কাজ শেষ করেন। ১৯৭০-তে ২ অক্টোবর, গান্ধীজয়ন্তীতে ওই মূর্তির আনু্ষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুরাম মেধি।


আরও পড়ুন, আহমেদের জয়ে 'ঈশ্বরকে ধন্যবাদ' সোনিয়ার