ভারতের সব থেকে সফল `সেলসম্যান` মোদী, এইগুলোই তার কারণ
ভারতবর্ষের মত উন্নতিশীল দেশে বর্তমান সময়ে বিপননের সবথেকে শ্রেষ্ঠ মুখ হিসেবে যদি কাউকে বাছতে হয়, কাকে বাছবেন আপনি? আপনার উত্তর যাই হোক, `দ্য ইকোনমিক্স টাইমস`-এর সেরা বাছাই কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। `দ্য ইকোনমিক্স টাইমস`-এর মতে, এই সময়ে যদি বিপননের সবথেকে সফল মুখ হিসেবে কাউকে বেছে নিতে হয়, তাহলে সেটা আর কেউ নন, ওয়ান অ্যান্ড অনলি, নরেন্দ্র মোদী। শুধু কথার কথায় নয়, তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে নিজেদের প্রতিবেদনকে যথাযথ এবং যুক্তিযুক্তও করেছে `দ্য ইকোনমিক্স টাইমস`।
সৌরভ পাল: ভারতবর্ষের মত উন্নতিশীল দেশে বর্তমান সময়ে বিপননের সবথেকে শ্রেষ্ঠ মুখ হিসেবে যদি কাউকে বাছতে হয়, কাকে বাছবেন আপনি? আপনার উত্তর যাই হোক, 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর সেরা বাছাই কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর মতে, এই সময়ে যদি বিপননের সবথেকে সফল মুখ হিসেবে কাউকে বেছে নিতে হয়, তাহলে সেটা আর কেউ নন, ওয়ান অ্যান্ড অনলি, নরেন্দ্র মোদী। শুধু কথার কথায় নয়, তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে নিজেদের প্রতিবেদনকে যথাযথ এবং যুক্তিযুক্তও করেছে 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'।
'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-মনে করেছে মোদীই বর্তমান সময়ের ভারতের শ্রেষ্ঠ 'ফেরিওয়ালা'। দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে পণ্য-পরিষেবা বিক্রিতে একজন দক্ষ সেলসম্যান যা করে থাকেন, মোদী সেটাই করেছেন আরও পেশাদার ভঙ্গিতে। 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-তাদের প্রতিবেদনে প্রথমেই যে তথ্য তুলে ধরেছে, সেটা হল মোদীর বিদেশ সফর। এমনিতে বিরোধীরা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে এই বলে, "দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশে কম, বিদেশে থাকেন বেশি"। আর 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এই ইস্যুকেই 'সেলসম্যান' মোদীর সবথেকে শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে (২০১৪ সালের মে মাস) নরেন্দ্র মোদী এই পর্যন্ত ৬০টি বিদেশ সফর করেছেন। কিলোমিটারে হিসেব করলে গত তিন বছরে নরেন্দ্র মোদী পৃথিবীতে সর্বমোট ৩.৪ লাখ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করেছেন। এই সপ্তাহতেও জার্মানি, স্পেন, রাশিয়া, ফ্রান্স সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। এবছরের শেষে আমেরিকা, ইজরায়েল সফরেও যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। মূলত ইউরোপের 'ধনবান' দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের মৈত্রী স্থাপনই তাঁর মূল লক্ষ্য। 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর দাবি মোদীর এই বিপুল সংখ্যার বিদেশ সফরে সুফল পেয়েছে ভারত। অবশ্য কংগ্রেস, বাম সহ আরও বিরোধীরা এই কথা মানতে নারাজ।
আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বন্ধুতা:
'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বারাক ওবামা রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন মোদী যেভাবে মার্কিন দেশের সঙ্গে ভারতের মৈত্রী স্থাপন করেছেন, তাতে 'আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক' সম্পর্কে ভারত এবং আমেরিকা আরও কাছাকাছি এসেছে। এতে একদিকে যেমন ভারত সামরিক দিক থেকে আমেরিকার মত শক্তিধর দেশের 'সাহায্য' আদায় করে নিয়েছে, অন্যদিকে বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকাকে পাশে নিয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেও সচেষ্ট হয়েছে ভারত।
'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর মত, আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুতা এবং মোদীর 'সৌদি সফর'-এর কারণে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ইস্যুতে ঘুরিয়ে পাকিস্তানকেই প্যাঁচে ফেলতে পেরেছে ভারত। তাদের আরও দাবি, মোদীর সৌদি সফর-এর কারণেই নাকি মুসলিম দেশ হওয়া সত্বেও আরব দেশের সমর্থন হারিয়েছে পাকিস্তান।
সার্ক সম্মেলনের কথাই ধরে নেওয়া যাক। ভারতের সেনা ছাউনিতে (উরি হামলা) পাকিস্তানের মদতে সন্ত্রাস হামলার কারণে সার্ক সম্মেলনে সামিল হয়নি দিল্লি। নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে সার্ক সম্মেলন বয়কট করেছিল অনেক প্রতিবেশী দেশই। এমনকী উরি অ্যাটাকের নিন্দাও করে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান। আর এতে বিশ্ব রাজনীতিতে কিছুটা হলেও একঘরে হয়ে পরে পাকিস্তান।
মেক ইন ইন্ডিয়া:
'মেক ইন ইন্ডিয়া', প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর মতে 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদী আসলে বিদেশের কাছে ভারতে বিনিয়োগের রাস্তা খুলে দিয়েছেন। 'মেক ইন ইন্ডিয়া' নিয়ে বিশ্বব্যপী ঢালাও প্রচারও চালিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। আর এতেই নাকি ভারতে বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ বেড়েছে। ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ইতিমধ্যেই হয়েছে ভারতে, যা তৎকালীন মনমোহন সরকারের তুলনায় ৬২ শতাংশ বেশি, দাবি 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর।
ব্র্যান্ড ইকুইটি:
কথায় আছে, 'যো দিখতা হ্যায়, ও হি বিকতা হ্যায়'। বর্তমান সময়ে ভারতীয় কোনও রাজনীতিবিদ যদি এই কথাকে আক্ষরিক অর্থে সর্বৈব সত্য হিসেবে প্রমাণ করে থাকেন, তাহলে তিনি নরেন্দ্র মোদী। মোদীর 'ব্র্যান্ড ইকুইটি' নিয়ে যদি এক কথায় সবটা বলে দিতে হয়, তাহলে এই কথাটাই বোধহয় যথেষ্ট, 'চায়েওয়ালা থেকে প্রধানমন্ত্রী'। দেশের ভোটের ফল থেকে শুরু করে গোটা বিশ্বে তাঁর জনপ্রিয়তার জোয়ার, সবই মোদীর 'ব্র্যান্ড ইকুইটি'র এক একটা ঝলক মাত্র, এমনই দাবি 'দ্য ইকোনমিক্স টাইমস'-এর।