৪২ দিন পর গলা ভেজাবো, ভেবেই আনন্দ লাগছে, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মন্তব্য সুরাপ্রেমীর
সরকার বাহাদুর হয়তো আশা করেছিল, এই সিদ্ধান্ত বিধিবাম হয়ে দাঁড়াবে মদের লাইনে। কিন্তু ভুল প্রমাণ করে ছাড়লেন সুরাপ্রেমীরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বাস নগরের মহারাজা সুরজমল মার্গের রাস্তায় সাত সকালে লম্বা লাইন। লাইনটা এঁকেবেঁকে বাঁ-দিকে ম্যাকডোনাল্ডের স্টোর ছাড়িয়ে চলে গেছে। যতদূর চোখ যায়, লাইন তার থেকেও বেশি। মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব মানার বালাই নেই ঘুম-ঘুম চোখে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সুরাপ্রেমীদের। গতকালই দিল্লি সরকারের ঘোষণা ছিল, মদের দামের উপর ৭০ শতাংশ করোনা ফি চাপানো হবে। সরকার বাহাদুর হয়তো আশা করেছিল, এই সিদ্ধান্ত বিধিবাম হয়ে দাঁড়াবে মদের লাইনে। কিন্তু ভুল প্রমাণ করে ছাড়লেন সুরাপ্রেমীরা।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সুরাপ্রেমীদের মন্তব্যেই বোঝা যাচ্ছে, দাম নিয়ে চিন্তিত নন তাঁরা, গলা ভেজাতে পারলেই স্বস্তি। দিল্লির কৃষ্ণনগর থেকে আসা এক ব্যক্তি জানাচ্ছেন, ৪২ দিন পর গলা ভেজাতে পারবো। এটা ভেবেই আনন্দ লাগছে। লক্ষ্মী নগরের এক ব্যক্তি বললেন, “সকাল ৫.৪৫ থেকে দাঁড়িয়ে আছি। ভেবেছিলাম ৯টার সময় দোকান খুলবে। তার আগে পুলিস এসে গেলো। এরপর যদি ক্যাওরা হয়, দায় কার?” কেজরীবাল সরকার যে মদের দামের উপর ৭০ শতাংশ ট্যাক্স বসিয়ে দিল, কী বলবেন? জনৈকের সাফ জবাব, ধরে নিন না দেশকে দান করছি...।
হ্যাঁ, এটা সত্যি সরকারের কোষাগারে যা খাজনা পড়ে, তার অধিকাংশই আসে আবগারি ক্ষেত্র থেকে। তাই লকডাউন শিথিল করার সঙ্গে সঙ্গে মদের দোকান খোলার তাগিদও দেখা গিয়েছে সরকারের মধ্যে। মন্দা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মদের উপর বসানো হয়েছে ‘অকল্পনীয়’ ট্যাক্স। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রাতারাতি অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গিয়ে সমাজকে আরও বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে না-কি! অধিকাংশ জায়গায় দেখা গিয়েছে লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করে জমায়েত তৈরি হচ্ছে। খণ্ডযুদ্ধ বাধছে পুলিসের সঙ্গে। করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা যেখানে প্রবল যেখানে মদের দোকান খোলা কতটা যুক্তিসঙ্গত, প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন মহল।