জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো:  ঠিক যেন সিনেমার দৃশ্য। বর এবং বরযাত্রী এসে নিয়ে গেল ৩৬০ কোটি টাকার সম্পত্তি। তবে পুরোটাই যে সাজানো তা বুঝতে পারেননি গৃহকর্তা। বলিউডের ছবিতে যেমনটা হয়। ঠিক সেভাবেই আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা অভিযান চালিয়েছেন জালনায়। আয়কর দফতরের আধিকারিকরা বর ও বরযাত্রী সেজে এসেছিলেন যাতে কেউ রেইডের খবর না পান। 'দুলহন হাম লে যায়েঙ্গে' স্টিকার সেঁটে নিয়ে বিয়ের গাড়িতে করে জালনায় আসেন এবং প্রায় আট দিনের অভিযানে ৩৯০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেন। ইস্পাত উৎপাদনের জন্য মহারাষ্ট্রে বিখ্যাত জানলা। কিন্তু, আয়কর বিভাগ খোঁজ পেয়েছিল ইস্পাত প্রস্তুতকারকদের আড়ালের শিল্পের। স্টিল প্রস্তুতকারদের কারখানার বাড়ি, খামারবাড়ি ও অফিসে হানা দেয় আয়কর বিভাগ। এই অভিযান যদিও সহজ হয়নি বেশ আয়কর বিভাগের জন্য। প্রায় ৩৯০ কোটি হিসাব বর্হিভূত সম্পদ প্রকাশ্যে এসেছে। যার মধ্যে রয়েছে নগদ ৫৮ কোটি টাকা, ৩২ কেজি সোনার অলংকার, হীরাসহ ১৬ কোটি টাক। এ ছাড়া ৩০০ কোটি টাকার সম্পত্তির নথিও পাওয়া গেছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, Nitish Kumar vs Sushil Modi: আমি মোটেই উপরাষ্ট্রপতি হতে চাইনি, মোদীকে মিথ্যাবাদী বললেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ


এই অভিযানের শুরুটা হয়েছিল গত ১ আগস্ট থেকে। অভিযানটি চলে প্রায় ৮দিন ধরে। আয়কর দফতরের আধিকারিকরা বিভিন্ন দলের মাধ্যমে একযোগে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালান। আয়কর বিভাগ নতুন এমআইডিসিতে ৩টি রোলিং মিল এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত আর্থিক লেনদেনের তদন্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ঔরঙ্গাবাদের একজন প্রভাবশালী প্রোমোটার এবং ব্যবসায়ী। এই অভিযানে ৩৯০ কোটি টাকা নগদ পাওয়া গিয়েছে। এই নগদ গণনা করতে কর্মকর্তাদের প্রায় ১৬ ঘন্টা লেগেছে। জালনার এই চারটি বড় স্টিল মিল লেনদেন থেকে কোটি কোটি টাকার বাড়তি আয় করেছে এবং এই লেনদেন নগদে করেছে ফলে তা রেকর্ডে আনা হয়নি। তাই অত্যন্ত গোপনে এই অভিযান চালায় আয়কর বিভাগ। 


প্রথমে শিল্পপতিদের বাড়ি, অফিস, খামারবাড়িতে অভিযান চালানো হয়। একই সঙ্গে পাঁচটি দল হানা দেয়। শুরুতে তেমন কিছুই পায়নি আয়কর আধিকারিকরা। কিন্তু পরে, যখন দলটি শহর থেকে দূরে একটি খামারবাড়িতে অভিযান চালায় তখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিছানায়, বাথরুমের প্যানের নীচে টাকার বান্ডিল পাওয়া যায়। এমনকী কারখানার তিন শ্রমিকের কাছে নগদ টাকা পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে সোনার গয়না, সোনার বিস্কুট, ইট, কয়েন ও হীরা পাওয়া গেছে। মোট ৩২ কেজি সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রায় ৩০০কোটি টাকার বেহিসাবি সম্পত্তি পাওয়া গেছে। ঔরঙ্গাবাদেও দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। তাদের কাছ থেকে নগদ ৫৮ কোটি টাকা, ১৬ ক্যারেট সোনার অলংকার ও হীরা পাওয়া গেছে। এই অপারেশনে ২৫ টি কাপড়ের ব্যাগে নোটের বান্ডিল প্যাক করা হয়। তারপর সেই টাকা স্থানীয় স্টেট ব্যাঙ্কে নিয়ে গিয়ে গণনা করা হয়। সকাল ১১টার দিকে গণনা শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর ১টায়।


মজার ব্যাপার হলো, জালনায় আসার আগেই আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা বরযাত্রী সেজে যান। যাতে কেউ যাতে বিষয়টি জানতে না পারে। 'দুলহান হাম লে যায়েঙ্গে' স্টিকারও গাড়িতে লাগানো হয়েছিল যাতে বোঝানো যায় যে তারা সত্যিই বিয়ের জন্য এসেছে। নাসিক, পুনে, থানে এবং মুম্বাইয়ের কর্মকর্তারাও তাদের গাড়িতে এই ধরনের স্টিকার লাগিয়েছিলেন। একটি গাড়িতে বর-কনের স্টিকার লাগানো ছিল। প্রতিটি কর্মকর্তাদের একটি বিশেষ 'কোড-ওয়ার্ড'ও দেওয়া হয়েছিল। বহরে মোট ২৬০ জন অফিসার এবং ১২০ টি গাড়ি ছিল।


আরও পড়ুন, Indian Army, Kashmiri Pandit: বড় সাফল্য! কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যাকারীকে নিকেশ করল ভারতীয় সেনা ও পুলিস


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)