জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশে হাথরসে মর্মান্তিক ঘটনা। মঙ্গলবার ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ সাকার হরির সৎসঙ্গে পদদলিত হয়ে ১০০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই ঘটনার জেরে ওই বাবা গ্রেফতার শীঘ্রই গ্রেফতার হতে পারে। নারায়ণ সাকার হরি নিজেকেই 'গডম্যান' বলে ঘোষণা করেছিলেন। যার আসল নাম সুরজ পাল।  তিনি এখন ফুলরাই গ্রাম থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে মাইনপুরীতে তাঁর 'আশ্রমে' ছিলেন। যেখানে তিনি হাজার হাজার ভক্তদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠানটি করেছিলেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ইতোমধ্যেই একাধিক সিনিয়র পুলিস অফিসাররা হাথরসের ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। বাকি অফিসাররা নারায়ণ সাকার হরির আশ্রমে জড়ো হয়েছেন। এছাড়াও হাথরসে ফরেনসিক টিম এবং ডগ স্কোয়াডও রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের প্রাদেশিক আর্মড কনস্ট্যাবুলারি (PAC), ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (NDRF), এবং স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (SDRF) এর দলগুলিও উপস্থিত রয়েছে।


এখনও পর্যন্ত ১২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে, যার মধ্যে ১০০-র বেশি মহিলা এবং ৭ জন বাচ্চা আছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, পদদলিত হয়ে মারা যাওয়া বেশিরভাগ নিহতদের শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে ১৫০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার মৃতদের ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।


আরও পড়ুন:Lynching: ট্রাকে রয়েছে গোরু, ধাওয়া করে ধরে ২ লেবু ব্যবসায়ীকে আধমরা করল গো রক্ষকরা


কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাথরসের ঘটনাটি মঙ্গলবার দুপুরে ঘটে। বিপুল পরিমাণে লোক জড়ো হওয়ায় জায়গাটি ছোট পড়ে যায়। সৎসঙ্গে যোগ দেওয়া এক মহিলা জানান, অনুষ্ঠান শেষের পর সবাই যেতে শুরু করলে পদদলিত এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, 'সৎসঙ্গ'-এর পরে, ভক্তরা গুরুর পা স্পর্শ করতে ছুটে আসেন, যার ফলে একটি ছোট এলাকায় একটি বড় ভিড় তৈরি হয়। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলা এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে ভক্তরা 'সৎসঙ্গে' এসেছিলেন। ঘটনা তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, প্যানেলের নেতৃত্বে থাকবেন অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিস, আগ্রা এবং আলিগড় কমিশনার। এছাড়া ইতিমধ্যে সৎসঙ্গে আয়োজকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এফআইআর অনুসারে, ৮০ হাজার লোকের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সেখানে ২.৫ লাখেরও বেশি ভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল।


এফআইআর থেকে জানা গিয়েছে, 'অনিয়ন্ত্রিত ভিড় অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে আসার সময়, মাটিতে বসে থাকা ভক্তরা পিষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার অপর পাশে জল এবং কাদা ভরা মাঠের ভিড়কে আয়োজক কমিটি লাঠি দিয়ে জোর করে থামিয়ে দেয়, যার কারণে ভিড়ের চাপ বাড়তে থাকে এবং মহিলা, শিশু এবং পুরুষরা পিষ্ট হতে থাকে।'


আরও পড়ুন:Chennai: যেন সিনেমা! স্যুভেনির শপের মাধ্যমে এয়ারপোর্টের বুকের উপরে বসেই সোনা পাচার...


এছাড়া আরও জানা গিয়েছে, টনায় উপস্থিত পুলিস ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা যথাসম্ভব চেষ্টা করেছিল এবং আহতদেরকে উপলব্ধ সংস্থান দিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। কিন্তু আয়োজকদের দ্বারা কোনও সহযোগিতা করা হয়নি। এই সব কারণেই আয়োজকদের বিরুদ্ধে নতুন ফৌজদারি কোড ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস) এর ১০৫, ১১০, ১২৬(২), ২২৩ এবং ২৩৮ ধারার অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।


স্বঘোষিত গুরু নারায়ণ সারাই হরি দাবি করেছেন যে তিনি ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোতে কাজ করেছেন। তিনি তাঁর ভক্তদেরও বলেছিলেন যে তিনি যখন কাজ করছিলেন তখনও তিনি আধ্যাত্মিকতার পথ বেছে নিয়েছিলেন এবং আধ্যাত্মিক পথে চলার জন্য ১৯৯০ এর দশকে পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি উত্তরপ্রদেশে ইটা জেলার বাহাদুর নাগরি গ্রামে একজন কৃষক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছেন। এমনকি তিনি ইউপি পুলিশের স্থানীয় গোয়েন্দা ইউনিটের হেড কনস্টেবল ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি ১৯৯৯ সালে তার পুলিসের চাকরি ছেড়ে দেন এবং তারপর তার নাম পরিবর্তন করে নারায়ণ সাকার হরি রাখেন।


 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)