নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রয়াত জৈন মুনি তরুণ সাগর। দীর্ঘ রোগভোগের পর শনিবার ভোর তিনটে নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দিল্লির রাধাপুরী জৈন মন্দিরে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি জন্ডিস ও অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দিগম্বর এই জৈন গুরু বিখ্যাত ছিলেন তাঁর ‘কড়ভে প্রবচন’ এর জন্য। ধর্ম ছাড়াও বিভিন্ন সামজিক সমস্যায় তাঁর বক্তব্য রাখতেন অত্যন্ত স্পষ্ট ও কড়া ভাষায়। ২০১৬ সালে হরিয়ানা বিধানসভায় তাঁর বক্তব্যের জন্য তিনি দেশজুড়ে সমালোচনার শিকার হন। দিল্লি বিধানসভাতেও তাঁর বক্তব্য বিতর্ক তৈরি করেছিল। একজন দিগম্বর সাধুকে বিধানসভায় আনা নিয়ে প্রবল হইচই শুরু হয়ে ‌যায়। তরুণ সাগরের সমালোচনা করে নেটিজেনদের কড়া বিরোধিতার মুখে পড়েন সংগীত পরিচালক বিশাল দাদলানি। বাধ্য তিনি ক্ষমা চান।


প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তাঁকে রাধাপুরীর জৈন মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। তবে ফের তাঁর শারীরিক অবস্থার অবণতি হয়। সূত্রের খবর, শেষদিকে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তরুণ সাগর। সম্ভবত তিনি সান্থারা করতে চেয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫১ বছর।


আরও পড়ুন-ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি, জিডিপি বৃদ্ধির হারে চিনকে অনেকটাই পেছনে ফেলে দিল ভারত


তরুণ সাগরের আসল নাম পবন কুমার জৈন। জন্মেছিলেন মধ্যপ্রদেশের দাহো জেলায়। খুব অল্প বয়সেই তিনি সংসার ছেড়ে সন্ন্যাস নেন। জানা ‌যাচ্ছে উত্তর প্রদেশের মুরাদনগরে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।


কেন তিনি বারেবারেই বিতর্কে জড়িয়েছেন? দেশের একাধিক সমস্যা নিয়ে মন্তব্য করতেন তা সে সন্ত্রাসবাদ থেকে দুই সন্তান, তিন তালাক থেকে কন্যাভ্রূণ হত্যা, পাকিস্তান থেকে দুর্নীতি সব বিষয়েই নিজের মতামত দিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তাঁকে ঘিরে থেকেছে বরাবরই।


গত জুন মাসে পাকিস্তান ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, ‘পাকিস্তানে ‌যত জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে তার থেকে বেশি বিশ্বাসঘাতক লুকিয়ে রয়েছে ভারতে। এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের দাবি, তরুণ সাগর বলেন, ‘এদেশে থেকে ‌যারা পাকিস্তানের প্রশংসা করে তারা বিশ্বাসঘাতক নয়! ’


২০১৬ সালে হরিয়ানা বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তরুণ সাগর বলেন, কন্যাভ্রুণ হত্যা একটি বড় সমস্যা। সমাজের ভারসাম্য নষ্ট করছে কন্যাভ্রুণ হত্যা। আমার মনে হয় ‌যাঁর কন্যা সন্তান নেই তাঁর নির্বাচনে লড়াই করার অধিকার নেই।


আরও পড়ুন-অসুস্থ সন্তান, হতাশায় ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বাবা নিলেন চরম পদক্ষেপ


তিন তালাক নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, মুসলিম মহিলাদের উন্নতির জন্য কারও কোনও চেষ্টা নেই। ‌যা করা হচ্ছে তা স্রেফ লিপ সার্ভিস।


তারুণ সাগরের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, অরবিন্দ কেজরিওয়াল। প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করেছেন, তরুণ সাগরজি তাঁর উন্নত আদর্শের জন্য বরাবরই মানুষের মনে থেকে ‌যাবেন। তাঁর শিক্ষা মানুষকে চিরকাল শিক্ষা দিয়ে ‌যাবে।