গীতার ‘শিকড়’ খোঁজার লড়াইয়ে আর পাশে থাকতে পারবেন না সুষমা!
একাধিক ঘটনায় রাজনীতির উর্দ্ধে মানবিক ও আন্তরিক সুষমাকে পেয়েছেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ। গীতার দেশে ফেরার ঘটনা তারই একটি অন্যতম উদাহরণ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: লাহোর রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা সমঝোতা এক্সপ্রেস থেকে বছর এগারোর একটি ছোট্ট মেয়েকে উদ্ধার করে পাকিস্তান রেঞ্জার্স। সে সময় মূক ও বধির এই শিশুর বাড়ির ঠিকানা জেনে ওঠা সম্ভব হয়নি। পাকিস্তানের করাচির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে আশ্রয় পায় সে। সেখানেই বেড়ে ওঠে সে। এ সময় মেয়েটির থেকে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানতে পারে যে, তার বাড়ি ভারতে। দীর্ঘ ১১ বছর পর ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগ এবং দু’দেশের তত্পরতায় ২৬ অক্টোবর ২০১৫-এ দেশে ফিরে আসে মেয়েটি।
গীতা নামের সেই মূক ও বধির মেয়েটিকে মনে আছে তো? আজ যখন ভারতের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের প্রয়াণে গোটা দেশ শোকস্তব্ধ, তখন গীতার দেশে ফেরার কাহিনি যেন তাঁর অভাবকে আরও বেশি করে টের পাওয়াচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। বার বার একাধিক ঘটনায় রাজনীতির উর্দ্ধে মানবিক ও আন্তরিক সুষমাকে পেয়েছেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ। গীতার দেশে ফেরার ঘটনা তারই একটি অন্যতম উদাহরণ।
সলমন খান অভিনীত ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ ছবির গল্প বাস্তবে যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে গীতার দেশে ফেরার কাহিনীর সঙ্গে। তবে গীতাকে দেশে ফেরানোর জন্য যাঁর উদ্যোগ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, তিনি সুষমা স্বরাজ। দেশে ফেরার পরও গীতার পাশে ছিলেন তিনি। মূক ও বধির এই মেয়েটিকে তাঁর পরিবারে ফিরিয়ে দিতে সব রকম চেষ্টা করেছিলেন তিনি। দেশে ফেরার দিনে গীতাকে টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন ভারতের তত্কালীন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
দেশে ফেরার পর থেকে ইনদওরের মূক বধির সংগঠনের আশ্রয়েই রয়েছেন গীতা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সুষমা স্বরাজের ফের একটি টুইট সামনে আসে। উদ্দেশ্য গীতার পরিবার-পরিজনকে খুঁজে বের করা। কেউ গীতার পরিবারের হদিশ দিতে পারলে ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয় সে সময়।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে প্রত্যেকবার চকোলেট কেক আনতেন সুষমা, আবেগঘন স্মৃতিতে মূহ্যমান আডবাণী
এখনও মেলেনি তাঁর পরিবারের খোঁজ। এখনও ইনদওরের মূক বধির সংগঠনেই রয়েছেন গীতা। কিন্তু গীতার পাশে আর নেই সেই মানুষটা, যিনি গীতাকে তাঁর শিকড়ের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সুষমার প্রয়াণে ইশারায় তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন গীতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন ঘোরাফেরা করছে সেই ভিডিয়ো। গীতা মূক ও বধির বলে নয়, সুষমা স্বরাজের চলে যাওয়ায় যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা ভাষায় ব্যক্ত করার মতো শব্দ সত্যিই আছে কী?