স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে বুদ্ধিজীবীদের গুলি করার নির্দেশ দিতাম, বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের
কার্গিল বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিজয়পুরার বিধায়ক বসনাগৌড়া পাটিল যটনালের মন্তব্যে বিতর্ক।
নিজস্ব প্রতিবেদন: তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে পুলিসকে সমস্ত বুদ্ধিজীবীদের খতম করার নির্দেশ দিতেন। ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে শিরোনামে কর্ণাটকের বিজেপি বিধায়ক বসনাগৌড়া পাটিল যটনাল। বুদ্ধিজীবীদের 'দেশবিরোধী' বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি। এর আগে মুসলিমদের সহযোগিতা না করার নির্দেশ দিয়ে বিতর্ক জড়িয়েছিলেন এই বিধায়ক।
কার্গিল বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিজয়পুরার বিধায়ক বসনাগৌড়া পাটিল যটনাল বলেন, ''এই ধরনের লোকেরা (বুদ্ধিজীবী) এদেশে থাকেন। আমাদের করের টাকায় সব ধরনের সুবিধা ভোগ করেন। তাঁরাই আবার সেনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। সেকুলার ও বুদ্ধিজীবীরাই দেশের সবচেয়ে বড় বিপদ। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে পুলিসকে ওদের খতম করার নির্দেশ দিতাম।''
এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন যটনাল। তখন তিনি স্থানীয় পুরসভার সদস্যদের মুসলিমদের সাহায্য না করার অনুরোধ করেছিলেন। ভাইরাল ভিডিওয় যটনালকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ''আমি সমস্ত কাউন্সিলরদের ডেকে বলে দিয়েছি, তাঁরা যেন হিন্দুদের জন্যই কাজ করেন। মুসলিমদের কোনও কাজ করবেন না। বিজয়পুরায় তাঁরাই আমাকে ভোট দিয়েছেন।'' তিনি এও বলেছিলেন, ''টুপি ও বোরখা পরে কেউ যাতে আমার অফিসে না আসে।''
১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বিজেপির বিধায়ক ছিলেন যটনাল। ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত সাংসদও ছিলেন তিনি। অটলবিহারীর জমানায় রেল ও বস্ত্রমন্ত্রকের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছিলেন তিনি। ২০১০ সালে বিজেপি ছেড়ে জনতা দলে (সেকুলার) যোগ দেন যটনাল। ২০১৩ সালে বিজেপিতে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুতে নিজের বাড়ির সামনে খুন হন সাংবাদিক ও সমাজকর্মী গৌরী লঙ্কেশ। হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মূল অভিযুক্ত ওয়াগমোরে পুলিসের কাছে স্বীকার করেছেন, ''ধর্মকে বাঁচাতে একজনকে খুন করতে বলা হয়েছিল আমাকে। প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু জানতাম না যাঁকে মারতে বলা হয়েছিল, তিনি একজন মহিলা। নইলে মারতাম না''।
বেঙ্গালুরু পুলিসের এক কর্তার দাবি, গৌরী লঙ্কেশের হত্যাকারী দলে প্রায় ৬০ জন রয়েছেন। পাঁচটি রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে এই দলটি। কিন্তু দলের কোনও নাম নেই। মহারাষ্ট্রের হিন্দু জাগ্রুতি ও সনাতন সংস্থার মতো কট্টর সংগঠন থেকে সদস্যদের নেয় তারা। তবে লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি এই সংগঠনগুলির কোনও যোগ নাও থাকতে পারে। হত্যাকাণ্ডে তারা জড়িত নয় বলে জানিয়েছে দুটি সংগঠনই। গোবিন্দ পানসারে, এম এম কালবুর্গি ও গৌরী লঙ্কেশকে খুন করতে একই ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- মানব পাচার-বিরোধী বিল পাশ লোকসভায়, যৌনকর্মীদের আশ্বস্ত করলেন মানেকা