`তোষামদ নয়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই জেহাদ`, বন্ধের হুমকি ১০ হাজার পুলিসের
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু/
ওয়েব ডেস্ক: যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু/
নিভাইছে তব আলো/
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ/
তুমি কি বেসেছ ভালো।
'প্রশ্ন'টা ছিলই! এই উত্তর খুঁজেছে ইতিহাস, উত্তর খুঁজছে বর্তমান, বিশ্বাস-আগামী দিনেও এই উত্তর হাতরে বেড়াবে গোটা রাষ্ট্র। উত্তর মেলেনি যতবার, ততবারই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে বিদ্রোহীরা। এই তালিকাটা বেশ লম্বা। কবি থেকে কৃষক, শ্রমিক থেকে শাসক- হ্যাঁ, শাসকও বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদে যে দ্বন্দ্বে শ্রমিক-মালিক লড়াই চলছিল, আজ সেই দ্বন্দ্বেই রাষ্ট্র সম্মুখীন হল তেমনই এক রাষ্ট্রদ্রোহের বিরুদ্ধে। বেনজির আর নজির এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে না গিয়ে, কেবলমাত্র ঘটনার ওপর দৃষ্টি রাখলেই সবটা আলোর থেকেও পরিষ্কার হয়ে যাবে। কী এমন ঘটল বা ঘটতে চলেছে, যাতে এত বড় গৌরচন্দ্রিকা করতে হল! শাসকের বিরুদ্ধেই জেহাদ ঘোষণা করল রাষ্ট্র যন্ত্রের শ্রমিকরা। কর্ণাটকের মোট ৬০ হাজার পুলিস কর্মীর ১০ হাজার পুলিস কর্মী জানিয়ে দিল, 'অবস্থার বদল না হলে, বন্ধ'।
বাংলার একটা 'সুনাম' আছে গোটা ভারতের কাছে। মিটিং মিছিলের শহর কলকাতা আর 'পার্টিবাজি'র রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। এতকমায় আরও একজন ভাগীদার হয়েছিলেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। নিজে শাসন যন্ত্রের মাথায় বসে জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই। একথা অস্বীকার করা যায় না, প্রতি ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি আলাদা, ভিন্ন ভিন্ন ভাবে গড়ে উঠেছে আন্দোলন। আর তার সঙ্গে এটাও বলে দেওয়া, ১০ হাজার পুলিস কর্মী একসঙ্গে ধর্মঘট ঘোষণা করলে 'অচলাবস্থা' অবশ্যম্ভাবী। ৪ জুন, ধর্মঘট করার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। পাল্টা অবস্থানও গ্রহণ করেছে রাষ্ট্র। পুলিস কোনও ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবে না, এটা অনৈতিক, জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর প্রধান পুলিস অধিকর্তা। ইতিমধ্যেই ৪ জুন ছুটির আবেদন করেছেন ৫০ হাজার পুলিস। ৭৩ হাজার মোট পুলিস কর্মীদের মধ্যে সিংহভাগই যদি ৪ জুন ছুটি নেয় তবে তা ভারতবর্ষের ইতিহাসে 'নজির' হবে।
কেন এই জেহাদ?
'বিগত দু'বছর সরকার পুলিসকর্মীদের জন্য কিছুই করেনি। অর্থিক সঙ্কট থেকেই এই জেহাদ', দাবি বিদ্রোহীদের একাংশের। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ, শীর্ষ আধিকারিকরা। তাঁদের মত, 'সরকার অনেক কিছুই করেছে। আগামী দিনে পুলিসের স্বার্থে আরও ভাল কিছু করার ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার'। কিন্তু অবস্থা যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, 'পুলিস তুমি যতই মারো, মাইনে তোমার একশো বারো', পুলিসের মুখেই বসেছে এই স্লোগান, সেটাও পুলিসের বিরুদ্ধেই।