Winter Session: জেটলি-সুষমারা কী করেছিলেন! তোপ সুখেন্দু শেখরের, গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ, সরব কুণাল
তৃণমূল সাংসদ বলেন, আমরা জেটলি-সুষমাদের পক্ষে নেই। তবে বিরোধিতা করার অধিকার গণতন্ত্রে রয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদন: বাদল অধিবেশনে বিশৃঙ্খল আচরণের জন্য রাজ্যসভার অধিবেশনের বাকী দিনগুলি থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ১২ সাংসদকে। এদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দোলা সেন ও শান্তা ছেত্রী। এছাড়াও রয়েছেন কংগ্রেসের ৬, শিবসেনার ২, সিপিএম ও সিপিআইয়ের একজন করে সাংসদ। এনিয়ে সরব তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দ শেখর রায় ও কুণাল ঘোষ।
সোমবার সংসদে সাসপেনশনের ঘোষণার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আজ আচমকাই ঘোষণা করেন, গত অধিবেশনে যারা কিছু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরই কাউকে কোনও সুযোগ না দিয়ে চেয়ারম্যান ঘোষণা করে দেন, ওইসব অভিযুক্ত সাংসদদের বিরুদ্ধে মোশন পাস করা হবে। রাজ্যসভায় ওরা সংখ্য়াগরিষ্ঠ হওয়ায় ১২ সাংসদের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হয়। শাস্তি প্রাপকদের মধ্য়ে রয়েছেন দোলা সেন ও শান্তা ছেত্রী। আমাদের দাবি হল, যদি কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ যদি থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হোক। গণতন্ত্রে বিরোধিতা করার অধিকার রয়েছে। আমাদের বলা হয়েছে, ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি তার রিপোর্ট দিয়েছে। জানি না ওই রিপোর্টে কী রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থন করতে সুয়োগ দেওয়া হয়নি। কোনও শুনানি হয়নি। আমাদের মনে হয় যারা এই শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন তাদের ভারতীয় সংবিধান সম্পর্কে কোনও শ্রদ্ধা নেই।
তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, সাসপেন্ডের নামে যা করা হয়েছে তা একেবারেই বেআইনি ও অগণতান্ত্রিক। আমাদের বিরুদ্ধে সংসদ অচল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যারা এতদিন সংসদ অচল করে এসেছে তারা এখন এনিয়ে পরামর্শ দিচ্ছে। অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজরা যখন রাজ্যসভায় ছিলেন তখন তাঁরা সংসদ অচল করা নিয়ে কী বলেছিলেন? ইউপিএ জমানায় একের পর এক অধিবেশন বিজেপি সাংসদদের বাধায় বাতিল হয়ে গিয়েছে। সুষমা স্বারাজ একসময় লোকসভায় বলেছিলেন, সংসদের অধিবেশন অচল করে দেওয়াও গণতন্ত্রের একটি অংশ। ২০১২ সালের অগাস্ট অরুণ জেটলি এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, অধিবেশনে বাধা দেওয়াকে বিশৃঙ্খলা বলা যায় না।
আরও পড়ুন-BJP Candidate List: পুরভোটে BJP-র পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা, ১৪৪ ওয়ার্ডে আস্থা তরুণ ও মহিলাদের উপর
তৃণমূল সাংসদ বলেন, আমরা জেটলি-সুষমাদের পক্ষে নেই। তবে বিরোধিতা করার অধিকার গণতন্ত্রে রয়েছে। গণতন্ত্রে বিরোধিতার স্বরকেও গুরুত্ব দিতে হবে। সংসদে যদি কোনও বিষয় আলোচনা না করা যায় তাহলে কি তা কফি হাউসে আলোচনা হবে! তাই সংসদের উচ্চকক্ষে যদি আলোচনা করার সুয়োগ না দেওয়া হয় তাহলে কোথায় আলোচনা হবে? শান্তি ছেত্রী কী করেছিলেন? উনি ওয়েলে ছিলেন। পেগাসাস নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারপরও তাঁকে এই অধিবেশনে সাসপেন্ড করা হল। এটা জাস্টিস!এভাবেই কি গণতন্ত্র চলবে? গোটা দেশের মানুষকে বলব, দেখুন গণতন্ত্রের নামে কী চলছে!
অন্যদিকে, ১২ সাংসদের সাসপেনশন নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, এটা পুরোটাই গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ। সংসদে যে গণতান্ত্রিক কাঠামোয় হওয়া উচিত, যেসব বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত তা বিজেপি দিচ্ছে না। সেখানেই প্রতিবাদ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। সঙ্গে আরও কয়েকটি দল রয়েছে। তাদের প্রতিবাদ বিজেপি সহ্য করতে পারছে না। সংসদের ওরা কথা বলতে দেবে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। বিজেপি যেভাবে সরকার চালাচ্ছে তাতে গণতন্ত্রের কোনও জায়গা থাকছে না। সংসদে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। গোটা দেশের মানুষ তা দেখছেন। সাসপেনশনের মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ কোনও ভাবেই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না বিজেপি।