সনিয়াকে ফোন করেছিলেন উদ্ধব, বাগে পেয়ে শিবসেনাকে ঝুলিয়ে রাখল এনসিপি-কংগ্রেস
বিজেপি হাত তুলে নেওয়ায় কংগ্রেস ও এনসিপি-কে জোট সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মহারাষ্ট্রে কী হতে চলেছে? শিবসেনার জোট-প্রস্তাবে সাড়া দেওয়া নিয়ে এখনও ধন্দে কংগ্রেস-এনসিপি। দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকের সাংবাদিক বৈঠকে সনিয়ার গান্ধীর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা আহমেদ পটেল জানালেন, শিবসেনার প্রস্তাব নিয়ে কংগ্রেস ও এনসিপি আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেবে। শরদ পাওয়ারও জানিয়ে দিলেন, তাড়াহুড়ো করতে রাজি নন তাঁরা।
বিজেপি হাত তুলে নেওয়ায় কংগ্রেস ও এনসিপি-কে জোট সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। তাঁর প্রস্তাব নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধেয় আলোচনায় বসেন এনসিপি ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। তবে বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং 'ধীরে চলো' নীতিতে আগ্রহী দুই দল। যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেল বলেন, ''সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে শিবসেনা। এব্যাপারে আরও আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। তারপর শিবসেনার সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে।'' এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও জানিয়ে দেন, তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিতে চান না। কংগ্রেসের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
রাজ্যপাল কেন কংগ্রেসকে সরকার গঠনের জন্য ডেকে পাঠাননি সেনিয়ে প্রশ্ন তোলেন আহমেদ পটেল। জানান, ১১ নভেম্বর সনিয়া গান্ধীকে ফোন করেন উদ্ধব ঠাকরে। তবে এনসিপি-র সঙ্গে আলোচনা না করে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না কংগ্রেস।
মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের ২০ দিন পরও কুর্সির দখল নিয়ে চলছে ঠান্ডাযুদ্ধ। মঙ্গলবারই সে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করেছেন রাজ্যপাল ভগতসিং কোসয়ারি। তাঁর সুপারিশ মঞ্জুর করেছেন রামনাথ কোবিন্দ। মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসনের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস-এনসিপি। রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছে শিবসেনা। কংগ্রেসের আহমেদ পটেলের কথায়,''গত ৫ বছরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়ে একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে বিজেপি।''
শিবসেনা ও বিজেপি জোট করে নির্বাচনে লড়াই করলেও মুখ্যমন্ত্রিত্বে দাবি নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। ৫০-৫০ শর্তে জোট হয়েছিল বলে মনে করিয়ে দেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। শিবসেনা দাবি করে, আড়াই আড়াই বছর করে দু'দলের মুখ্যমন্ত্রী থাকবে মহারাষ্ট্রে। প্রথম পর্যায়ে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী থাকলেও আড়াই বছর পর তাঁকে সরে দাঁড়াতে হবে। আর সেটা লিখিত দিতে হবে বিজেপিকে। কিন্তু উদ্ধবের শর্ত মানতে রাজি হয়নি গেরুয়া শিবির। রাজ্যপালের কাছে গিয়ে হাত তুলে দেয় মোদীর দল।
বলে রাখি, মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে জোট করে শিবসেনা পেয়েছে ৫৬টি আসন। এনসিপি ও কংগ্রেসের আসন সংখ্যা যথাক্রমে ৫৪ ও ৪৪। ১০৫টি আসন নিয়ে বৃহত্তম দল হয়েছে বিজেপি। ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় সরকার গঠনের জাদু সংখ্যা ১৪৫। কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনা জোট করে আসন দাঁড়াবে ১৫৪টি।
আরও পড়ুন- আদিত্য ঠাকরেকে মুখ্যমন্ত্রী করা চলবে না, জোটের শর্ত দিল কংগ্রেস: সূত্র