`বাংলায় আসবেন`, বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আমন্ত্রণ মমতার, পাল্টা `ইলিশ আমন্ত্রণ` হাসিনার
নিজস্ব প্রতিবেদন: নরেন্দ্র মোদী, শেখ হাসিনা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, 'বন্ধন'-এ আবদ্ধ হলেন ত্রয়ী। বাংলা ভাষা মেলাল দুই যুযুধানকে। হাসিনা-মমতার দুই বাংলা মিলেছিল আগেই, বন্ধন এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে 'বাংলা'তে এসে মিশলেন মোদীও। শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন জ্ঞাপন করতে বাংলা ভাষাকে আধার করে নমো জানালেন নমস্কার। অন্যদিকে রেল পরিষেবার উদ্বোধনের মধ্যেই একে অপরকে আমন্ত্রণের পালাও সারলেন দুই বঙ্গকন্যা। নরেন্দ্র মোদী এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে বাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা 'দিদি'র জন্য 'ইলিশ আমন্ত্রণ' জানিয়ে রাখলেন হাসিনাও।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশে ফাঁস ৯-১১ ধাঁচে জঙ্গিহামলার ছক, গ্রেফতার ৪
এদিন দিল্লি-কলকাতা-ঢাকা ভিডিও কনফারেন্স যোগে শুরু হল কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রা। বহু প্রতিক্ষিত এই রেল পরিষেবা চালু হওয়ার জন্য, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একে অপরকে অভিনন্দন যেমন জানালেন তেমনই দুই দেশের মধ্যে আরও সুদীর্ঘ, সুদৃঢ় বন্ধন গড়ে তোলার আহ্বানও করলেন। নবান্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিন্দন জানালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও। একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি মৈত্রীর বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, "গোটা বিশ্বে বাংলাদেশ ভারতের বেস্টফ্রেন্ড। বন্ধন এক্সপ্রেসের মাধ্যমে আমাদের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হোক।" নিজের স্বল্প বক্তব্যের শেষে স্বভঙ্গিমায় বঙ্গবন্ধু কন্যাকে বাংলায় আসার জন্য আমন্ত্রণও জানান তিনি। আমন্ত্রণ পেয়ে খুশি হাসিনা। দিদি'কে পাল্টা নিমন্ত্রণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, "বাংলাদেশে আসবেন। ইলিশ খাওয়াব।"
আরও পড়ুন- যাত্রা শুরু কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেসের
ভারতের জনগণকে দিওয়ালি আর বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, "নরেন্দ্র মোদীজি, সুষমা স্বরাজজি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা। বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হওয়াতে ভারত-বাংলাদেশের যাত্রীরা অনেক সুবিধা পাবে। আশা রাখছি, আগামী দিনে সংস্কৃতি, পর্যটনেও সুদীর্ঘ মৈত্রী গড়ে তুলবে দুই দেশ। কেবল রেলের বন্ধন নয়, জনগনের বন্ধন গড়ে উঠবে।" বন্ধন এক্সপ্রেস সহ দুটি রেলসেতুর উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, "মানুষের স্বার্থে কাজ করবে দুই দেশ।"
বৃহস্পতিবার বন্ধন এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষেলগ্নে নরেন্দ্র মোদীও বাংলাদেশের মানুষের প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশের সব ভাই-বোনের উদ্দেশে নমস্কারও জানান নমো। বাংলাদেশের প্রাণের ভাষা বাংলায় কথা বলে আরও চমক দেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। বাংলায় তিনি বলেন, "আজ শুভ উপলক্ষে দুই দেশবাসীদের আমার অভিনন্দন জানাই। আজ আমাদের মৈত্রীর বন্ধন আরও সুদৃঢ় হল"। এরপরই হিন্দিতে নরেন্দ্র মোদী মোদী বলেন, "প্রতিবেশী দেশের নেতাদের সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশীর মতই সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। কোনও প্রোটোকলে আবদ্ধ থাকার প্রয়োজন নেই। আমাদের লক্ষ্যের সঙ্গেই সামঞ্জস্য রয়েছে 'মৈত্রী' আর 'বন্ধনে'র।" বাংলাদেশের উন্নয়নে সামিল হয়ে তিনি গর্বিত বলেও জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন- আইএসআইকে মদত! খালেদার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা বাংলাদেশে
এদিনের অনুষ্ঠান নিয়ে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বর্তমান সময়ে দুই রাজনীতিকের মত পার্থক্য থাকলেও বাংলাদেশই মেলাল দুজনকে।" কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি কমিশনার তৌফিক হাসানও তৃণমূল সাংসদের কথায় সহমত প্রকাশ করেন। "বন্ধন দু'পারের সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে", আশাবাদী তৌফিক হাসান।
উল্লেখ্য, রেল নিয়ে আজকের অনুষ্ঠান উঠে এসেছে 'তিস্তা জল' প্রসঙ্গও। মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়েই বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াবে ভারত, প্রধানমন্ত্রীর এই সুরে সুর মিলিয়ে তৌফিক হাসানও বললেন, "আগামী দিনে এপারের জল যেমন ওপারে যাবে তেমন ওপারের পদ্মাও এপারে আসবে।"