লং মার্চের পর ফের পথে বামেরা, সংসদ অভিযানে হাতে হাত ব্যারিকেডে কিষান-মজদুর
এই প্রথম একই দাবি নিয়ে একসঙ্গে সংসদ অভিযান করছে ভারতের বামপন্থী শ্রমিক এবং কৃষক সংগঠনগুলো। এদিনের ঘটনাকে তাই ভারতে অভূতপূর্ব বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শ্রমিকের ন্যূনতম পারিশ্রমিক, চাষীর ফসলের লাভজনক দাম এবং কৃষি ঋণ মুকুব – মোদী সরকারের থেকে এই দাবিগুলি আদায়ের লক্ষ্যে বুধবার দিল্লির পথে নেমেছেন অসংখ্য কিষান-মজদুর। লাল নিশান নিয়ে চলা দেহাতি মানুষগুলি হাতে হাত ব্যারিকেড গড়ে এদিন রাজধানীর পথে নেমেছেন।
এই প্রথম একই দাবি নিয়ে একসঙ্গে সংসদ অভিযান করছে ভারতের বামপন্থী শ্রমিক এবং কৃষক সংগঠনগুলো। এদিনের ঘটনাকে তাই ভারতে অভূতপূর্ব বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মার্চের লং মার্চের পর বামেদের এই কিষান-মজদুর সংঘর্ষ মিছিলই হতে চলেছে সরকারবিরোধী শ্রমিক-কৃষক আন্দোলনের অন্যতম হাতিয়ার, এমনই দাবি কমিউনিস্টদের। সারা ভারত কৃষক সভার নেতা হান্নান মোল্লার কথায়, “সরকার কর্পোরেটদের মুনাফা আদায়ের রাস্তা করে দিয়েছে। এতে আম আদমির দুর্দশা বাড়ছে। আমরা চাই, সরকার নীতি বদল করুক। আর সে কারণেই এই প্রথম কৃষক-শ্রমিক হাতে হাত ধরে লড়াইয়ে নেমেছ”। সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য হান্নান মোল্লার এই সুরে সুর মিলিয়েছেন সারা ভারত শ্রমিক সংগঠনের নেতা তপন সেনও। তাঁর বক্তব্য, “যদি সরকার শ্রমিক-কৃষকের দাবি না মেনে নেয়, আন্দোলন আরও তীব্র হবে”।
আরও পড়ুন- বিজেপি নেতাকে দেখে বিমানে মোদী বিরোধী স্লোগান, অবতরণের পরই গ্রেফতার গবেষক
এই সংসদ অভিযান কর্মসূচিতে বামপন্থী কৃষক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর তরফে ১৫টি দাবির উল্লেখ করা হয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম- অসংগঠিত ক্ষেত্রে একজন শ্রমিকের ন্যূনতম বেতন (মাসিক) ১৮ হাজার টাকা করতে হবে, কৃষি ঋণ মুকুব করতে হবে, চাষী যেন তাঁর ফসলের লাভজনক মূল্য পায়, সেই বন্দোবস্ত করতে হবে সরকারকেই। একই সঙ্গে বেকারদের রোজগারের সুরক্ষার বিষয়টিও সামনে রেখেছে বামেরা। আজ (বুধবার) এই সমস্ত দাবি নিয়েই দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে মিছিল শুরু করবে বামপন্থী কৃষক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। এরপর দিল্লির রাজপথের দখল নিয়ে মিছিল পৌঁছবে সংসদে। জানা যাচ্ছে, শুধু এআইকেএস, সিআইটিইউ-ই নয়, এই মহামিছিলে সামিল হওয়ার কথা রয়েছে অঙ্গনবাড়ি ও আশা কর্মীরাদেরও।
আরও পড়ুন- কর্ণাটকে কুপোকাত বিজেপি, পুর নির্বাচনে কংগ্রেস-জেডিএস ঝড়
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চে লং মার্চের কায়দায় মহারাষ্ট্র সরকারের থেকে নিজেদের দাবিদাওয়া আদায় করেছিলেন কৃষকরা। আন্দোলনের সামনে মাথা নুইয়ে কৃকদের ঋণ মুকুবের কথা মেনে নিয়েছিল বিজেপি সরকার। লিখিত ভাবে কৃষি ঋণ মুকুবের কথা ঘোষণা করেছিল দেবেন্দ্রে ফড়নবীশের সরকার। ঠিক একই কায়দায় মোদী সরকারের থেকেও নিজেদের দাবি আদায়ে পথে নামল বামেরা। তবে এবারও সেই সাফল্য আসবে কি না, সেটাই এখন দেখার।