ওয়েব ডেস্ক: লালকেল্লা দত্তক দেওয়া নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মধ্যেই সাফাই এল সরকারের তরফে। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের পক্ষে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ঐতিহাসিক সৌধ দত্তক দেওয়া মানে তা বিক্রি করে দেওয়া নয়। সৌধের নির্মাণে কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না দত্তক গ্রহণকারী সংস্থা। শুধুমাত্র সৌধ পরিসর ও সৌধের ভিতরে পর্যটন সংক্রান্ত পরিকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণ করবে তারা। এটি একটি অলাভজনক উদ্যোগ বলেও স্পষ্ট করেছে সরকার। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

শনিবার লালকেল্লা দত্তক দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেশজোড়া সমালোচনার ঝড় ওঠে। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ২৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ডালমিয়া ভারত গোষ্ঠীকে ৫ বছরের জন্য সৌধটি দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্র। এর পরই নাগরিক সমাজ থেকে বিরোধীরা প্রতিবাদে মুখর হয়। অভিযোগ ওঠে, বেসরকারি সংস্থার হাতে দেশের ঐতিহাসিক সৌধ বিক্রি করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। 


কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, এভাবেই বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে দেশের সৌধগুলি তুলে দিচ্ছে কেন্দ্র। তাঁর প্রশ্ন, এর পর কোন সৌধকে বেসরকারি হাতে দিতে পারে কেন্দ্র? বিরোধিতায় সামিল হয়, তৃণমূল ও সিপিএমও। কেন্দ্রের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ঐতিহাসিকরাও। 


সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ঐতিহাসিক সৌধে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ বেসরকারি হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়নি। ফলে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত। 


সরকারের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে, 'অ্যাডপ্ট অ্যা হেরিটেজ' প্রকল্পের আওতায় সৌধগুলির পর্যটন পরিকাঠামো উন্নয়নে হাত দিয়েছে সরকার। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি অলাভজনক উদ্যোগ। আরও পর্যটক টানতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী কেজে আলফোনস জানিয়েছেন, সৌধগুলি রক্ষণাবেক্ষণে সাধারণ মানুষের যোগদান বাড়াতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই দায়িত্ব শুধু ধূলাধূসরিত দফতরে বসে থাকা বাবুদের ঘাড়ে থাকা উচিত নয়। আমরা চাই বাণিজ্যিক সংস্থা, স্কুল, সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাও সৌধের সঙ্গে জড়িত থাকা গৌরব ভাগ করে নিক। এর মধ্যে মুনাফা করার কোনও ভাবনা নেই। আর সরকারি সংস্থা হোক বা বেসরকারি, যেই দত্তক নিক না কেন, সৌধের গায়ে হাত দিতে পারবেন না কেউ। 


ফের বেফাঁস বিপ্লব, সরকারি চাকরির আশা ছেড়ে পান বিক্রির পরামর্শ তরুণ প্রজন্মকে


পর্যটন সচিব রশ্মি ভার্মা জানিয়েছেন, দত্তক নেওয়ার সমস্ত চুক্তি ভারতীয় পুরাতাত্বিক সর্বেক্ষণের অনুমতিতেই হবে। শর্তভঙ্গকারীর চুক্তি সঙ্গে সঙ্গে বাতিলের অধিকার থাকবে তাদের হাতে। তেমন হলে দত্তক গ্রহণকারী সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপও গ্রহণ করতে পারবে সংস্থাটি। 


সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় কোনও মুনাফা করতে পারবে না দত্তকগ্রহণকারী সংস্থা। বাণিজ্যিক সংস্থার সামাজিক দায়িত্ব খাতে বরাদ্দ এক্ষেত্রে খরচ করতে পারবে তারা। তার বিনিময়ে সৌধে ও পর্যটন মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে কয়েকটি জায়গায় সংস্থার নাম দেখা যাবে। সৌধের যে এলাকায় পর্যটকরা যেতে পারে শুধুমাত্র সেই এলাকাতেই নিয়ন্ত্রিত থাকবে সংস্থার গতিবিধি। ফলে সৌধ বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।