ওয়েব ডেস্ক: পাঁচশো-হাজার অচল। হাওয়ালা এজেন্টদের পিছনে ছুটছে কালো টাকার মালিকরা। আবার অফিসে-বাড়িতে জমা হওয়া বাতিল টাকা পাল্টাতে এখন হাওয়ালা কারবারীরাই বড় হাওয়ালা অপারেটরদের খোঁজে হন্যে। কারণ, নোট বাতিলের পর কালো টাকা সাদা করতে ব্যাঙ্ক ছাড়া গতি নেই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দুর্নীতি-মুক্ত ভারত গড়ার কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী। তার ধাক্কায় এক রাতে বাতিল পাঁচশো-হাজারের নোট। টাকা বদলাতে ব্যাঙ্কে-ATM -এ লাইন দিয়ে আপনি নাজেহাল। কিন্তু, কালো টাকার কারবারীদের এ সব ঝক্যি পোয়াতে হচ্ছে না। হাওয়ালা এজেন্ট মারফত তারা দিব্যি কাল টাকা সাদা করিয়ে নিচ্ছে। পাঁচশো-হাজারের অচল নোটে জমানো কালো টাকা ভাঙিয়ে চালু নোট পেতে হাওয়ালা অপারেটরদের কাছে যাচ্ছে কালো টাকার মালিকরা।


হাতে পর্যাপ্ত ছোট নোট না থাকায় এখন হাওয়ালা অপারেটররা কমিশন কেটে কিছুদিন পর টাকা ফেরতের আশ্বাস দিচ্ছে। না হলে বলা হচ্ছে, এখনই ফেরত চাইলে নিতে হবে বিদেশি মুদ্রা। বর্তমান পরিস্থিতিতে হাওয়ালা কারবারীদের সঙ্গে বিদেশি মুদ্রা ব্যবসায়ীদের একাংশের কালো টাকার লেনদেন চলছে বলে মনে করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।


আরও পড়ুন জানুন আরও কতদিন পুরনো ৫০০, ১০০০ টাকার নোট ব্যবহার করতে পারবেন


কালো টাকা ভাঙানোর চাহিদা বাড়ায় হাওয়ালা অপারেটররা এখন পাঁচ থেকে আটের বদলে দশ থেকে বারো শতাংশ কমিশন নিচ্ছে। কালো বাজারে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বিদেশি মুদ্রার দামও। তবে, এত পাঁচশো, হাজারের অচল নোট নিয়ে সমস্যায় হাওয়ালা এজেন্টরাও।


হাওয়ালা কারবার অনেকটা পিরামিডের মতো। নীচের তলায় থাকে ছোট অপারেটররা। তাদের ওপরে সেজ-মেজ-বড় মাথারা। নীচের তলার এজেন্টরা এখন অচল পাঁচশো-হাজারের গতি করতে ছুটছে ওপরের এজেন্টের কাছে। থিয়েটার রোডে ভুয়ো সংস্থার নামে অফিস খুলে বসা এরকমই একজন হাওয়ালা কিংপিন প্রবীণ আগরওয়াল এখন আয়কর কর্তাদের জালে। তার চব্বিশটা ভুয়ো সংস্থার নামে কয়েকশো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে।


আরও পড়ুন অপেক্ষার শেষ বাজারে চলে এল পাঁচশ টাকার নতুন নোট


হাওয়ালা কারবারের মাথারা এখন বহু ভুয়ো কোম্পানির অ্যাকাউন্টে অচল পাঁচশো-হাজারের নোট জমা করে দিচ্ছে। এই অ্যাকাউন্টগুলি থেকে একটু একটু করে করফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত দেশগুলিতে টাকা সরানোর অপেক্ষায় তারা। ট্যাক্স হেভেনগুলির সঙ্গে দ্বৈত কর প্রতিরোধ চুক্তি আছে এমন দেশ হয়ে এ সব টাকাই কিছুদিন পর প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বা বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক লগ্নির আকারে ভারতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। আর তা করতে পারলেই কালো টাকা হয়ে যাবে সাদা। সরাসরি হাওয়ালা লেনদেন ছাড়া অচল পাঁচশো-হাজারের গতি করতে কালো টাকার মালিকরা এখন আরও দুটি রাস্তা বেছে নিয়েছে। চড়া দামে সোনা-হীরে কিনে মজুত করছে তারা। পরে, সুযোগ বুঝে সেসব বিক্রি করে চালু নোটের তাড়া সিন্দুকে পোরার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। বিভিন্ন ভুয়ো NGO-র নামে খোলা অ্যাকাউন্টেও জমা পড়ছে দেদার পাঁচশো-হাজার।


প্রধানমন্ত্রীর টাকা বাতিলের ঘোষণার পর দুবাইয়ে হীরের লেনদেন এক ধাক্কায় বহুগুণ বেড়ে গেছে। ভারতীয় সংস্থার অংশীদারি রয়েছে এমন সংস্থা মারফত তাদের দেশে বড় অঙ্কের লগ্নি এলেই দিল্লিকে যাতে তা জানানো হয়, সেজন্য প্রায় চল্লিশটি দেশের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে মোদী সরকার। এই চুক্তির ফলে ট্যাক্স হেভেনে কালো টাকা পাচারে রাশ টানা যাবে বলে আশা করছেন আয়কর কর্তারা।