নিজস্ব প্রতিবেদন: ব্যাঙ্কে অনাদায়ী ঋণের সমস্যা নতুন নয়। এবার জীবনবিমা নিগমে সেই ছবি। অনুত্‍পাদক সম্পদ বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয়ের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে চলে এসেছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। রুগ্ন সংস্থা আইডিবিআই অধিগ্রহণে এলআইসি-কে বাধ্য করায়, আগেই সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এখন দেখা যাচ্ছে, গত ৫ বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত জীবনবিমা নিগমের অনুত্‍পাদক সম্পদ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

শুধুমাত্র চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ৬ মাসেই অনাদায়ী ঋণ ৩০ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়েছে। এলআইসির অনুত্‍পাদক সম্পদের পরিমাণ বহুদিনের গড় ২% থেকে বেড়ে ৬% হয়েছে। ঋণ খেলাপির তালিকায় আইএল অ্যান্ড এফএস, ভূষণ পাওয়ার, ভিডিওকন, ইউনিটেক-সহ বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে অনুত্পাদক সম্পদের সমস্যা আর্থিক বিকাশের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এর ফলে টান পড়ছে ব্যবসার জন্য নতুন ঋণের জোগানে।


ক্রেডিট রেটিং সংস্থা আইসিআরএ-র তথ্য বলছে, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর, বছর-বছর ব্যাঙ্কগুলি হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ হিসেবের খাতা থেকে মুছে ফেলছে। আর, টাকার অঙ্কে প্রতি বছরই, তা বেড়েই চলেছে। ২০১৪ থেকে ১৮-র মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি তাদের ব্যালেন্স শিট থেকে ৩ লক্ষ তিরিশ হাজার কোটি টাকার অনুত্‍পাদক সম্পদ মুছে দিয়েছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে, তা ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকার ঋণ, রাইট- অফ করা হয়েছে। 


আরও পড়ুন- মৃত্যুঞ্জয়ী সুভাষচন্দ্র: ১২৩তম জন্মদিনেও তাঁর মৃত্যু নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত দেশবাসী


তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে এসবিআই। তারপর, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, কানাড়া ব্যাঙ্ক এবং পিএনবি। পাঁচ নম্বরে বেসরকারি আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণ ৭.২৭ লক্ষ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ৬ মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এনপিএ মোট ঋণের ১১.২% হয়েছে। আবার গত অর্থবর্ষে ব্যাঙ্ক প্রতারণার অঙ্ক ৭৪% বেড়ে ৭১,৫৪৩ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। ব্যাঙ্ক প্রতারণায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে দেওয়া ঋণের পরিমাণই ৯০% পেরিয়ে গেছে। এলআইসি হোক বা ব্যাঙ্ক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনাদায়ী ঋণের কারণ মূলত দুটি।


আরও পড়ুন- বাংলা নেই, আছে কলকাতা, প্রজাতন্ত্র দিবসে জায়গা পেল শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর ট্যাবলো


হয় আর্থিক টানাটানির জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলি ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে পারছে না। বা প্রতারণা করে ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিয়ে আর তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। যদি, আর্থিক অনটন, কোম্পানিগুলির কাছে ব্যাঙ্ক ঋণ শোধ করতে না পারার কারণ হয়, তাহলে মানতে হবে, অর্থনীতির অবস্থা ঠিক নেই। আর যদি, প্রতারণা, ব্যাঙ্কের ঋণ বকেয়া থাকার কারণ হয়, তাহলে বুঝতে হবে, নজরদারি ঠিক নেই। দুই ক্ষেত্রেই সরকারে সদিচ্ছা, অর্থনীতি পরিচালনার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজেটের আগে মোটেই বলা যাচ্ছে না অল ইজ ওয়েল।