নিজস্ব প্রতিবেদন: ফের রক্তাক্ত শিক্ষাঙ্গন। হামলার পর জেএনইউ গেটে রাত থেকেই কড়া নিরাপত্তা। সকালেও চলছে নজরদারি। পড়ুয়াদের ব্যাগেরও তল্লাসি নেওয়া হচ্ছে। ঘটনা তীব্র নিন্দা জানিয়ে সরব হয়েছে রাজনৈতিক মহল। নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে পুলিসের বিরুদ্ধেও। শাসক থেকে বিরোধী, সর্বত্রই উঠেছে নিন্দার ঝড়। বিজেপির প্রথম সারির নেতা মন্ত্রীরাও ঘটনার বিরোধিতা করে টুইট করেছেন। বাদ যায়নি অন্যান্য বিরোধী দলও। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল। গতকাল রাতেই টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লিখেছেন, "জেএনইউতে যা ঘটছে, তা বিশ্বের বড়চেয়ে বড় গণতন্ত্রে সামাজিক ও নাগরিক অধিকারের অবমাননা। ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যত্‍। আমরা JNU-র পড়ুয়াদের প্রতি সহমর্মি। তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি। আমরা JNU-র পড়ুয়াদের পাশে আছি।" 



পাশাপাশি কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানিয়েছেন, দিল্লি পুলিসের কাছে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চাইলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। হামলার খবর ছড়াতেই দিল্লির পুলিস কমিশনারকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চান। দিল্লি পুলিস কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন। তাই এদিনের ঘটনার পরই অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। তারপরই তত্‍পর হন অমিত শাহ।


JNU ক্যাম্পাসের হামলার কড়া নিন্দা করেছে বিজেপি। টুইটে বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, "আমরা JNU ক্যাম্পাসে হামলার কড়া নিন্দা করছি। এটা নৈরাজ্যবাদী শক্তির মরিয়া প্রচেষ্টার বহিঃপ্রকাশ। যারা চায় পড়ুয়াদের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতে  ।বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পড়ুয়াদের জন্য শিক্ষা ও জ্ঞান আহরণের জায়গা হয়ে উঠুক।" অন্যদিকে "শুধু ABVP নয়। বহিরাগত গুণ্ডারাও তাণ্ডব চালিয়েছে JNU ক্যাম্পাসে। ঠুঁটো জগন্নাথের ভূমিকায় পুলিস।" কড়া সমালোচনার সুর সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাটের মুখেও।


আরও পড়ুন: CAA-র বিরোধীদের মুখের ওপরে জবাব দিয়েছে নানকানা সাহিবে হামলা, কেজরি-রাহুলকে নিশানা অমিত শাহর


ঘটনায় কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেন, " টিভিতে লাইভ সম্প্রচারে যা দেখছি তা ভয়াবহ। মুখোশধারীরা JNU হস্টেলে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের আক্রমণ করছে। পুলিস কী করছে? পুলিস কমিশনার কোথায়? সরকারি মদতেই লাগামছাড়া এই আক্রমণ। এটা বিশ্বাস করাই কঠিন।" জেএনইউতে হামলার কড়া নিন্দায় সরব বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। টুইটে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, JNUতে যা ঘটছে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তার নিন্দা করছি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পরিপন্থী।


মোদী সরকার সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। হস্টেল ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলনে তাই নির্মম হামলা। ABVP বাইরে থেকে গুন্ডা এনে হামলা চালিয়েছে। অভিযোগ SFI সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাসের।


JNU-তে হামলার ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। টুইটে সীতারামণ লিখেছেন, "JNU-তে হামলার ছবি অত্যন্ত ভয়াবহ। আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই হামলার নিন্দা করছি। গত কয়েকদিনে যাই ঘটে থাকুক না কেন,এই সরকার চায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ছাত্রদের জন্য নিরাপদ হোক।"


টুইটে প্রশ্ন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সূরজেওয়ালা লিখেছেন, JNU তে ছাত্রদের মারা হচ্ছে। মার খাচ্ছেন অধ্যাপকরা। গুন্ডারা মহিলা হস্টেলে তাণ্ডব চালাচ্ছে। নির্মমতা ও গুন্ডাগিরির খুল্লামখুল্লা প্রদর্শন। পুলিস কোথায়? কোথাও JNU কর্তৃপক্ষ? এভাবেই কী মোদী সরকার ছাত্র যুবদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে ?


এদিন রাতেই JNU ক্যাম্পাসে পৌছন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। পুলিস তাঁকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়। বাইরে থেকেই ফিরে যান ইয়েচুরি। মুখোশধারী হামলাকারীরা কে? কীভাবে তাঁরা ক্যাম্পাসে ঢুকে হামলা চালালেন প্রশ্ন তোলেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক। JNU থেকে আসা রিপোর্ট বলছে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের ওপর হামলার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ ও ABVP-র গুন্ডাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের নেতৃত্বে এটা পরিকল্পিত হামলা। হিন্দুত্ব এজেন্ডার প্রেক্ষিতে JNU পড়ুয়াদের প্রতিরোধে তারা ভীত। টুইটে প্রতিক্রিয়া সীতারাম ইয়েচুরির।


আরও পড়ুন: JNU হামলার ১৭ ঘণ্টা পর এফআইআর দায়ের করল দিল্লি পুলিস


রবিবার সন্ধেবেলা JNU ক্যাম্পাসের সন্ধেয় সবরমতী হস্টেল, মাহি মান্ডভি হস্টেল ও পেরিয়ার হস্টেলে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী।  মাথা ফাটে স্টুডেন্টস্ ইউনিয়নের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের। হামলায় জখম হন অধ্যাপক সুচরিতা সেন। মুখোশধারী গুন্ডাবাহিনীর তাণ্ডবে আহত JNU-র বহু পড়ুয়া। তাদের মধ্যে কুড়িজনকে ভর্তি করা হয়েছে AIIMS-এ। রাতেই তাদের দেখতে হাসপাতালে পৌছে যান প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। আহত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। 


আরও পড়ুন: বাম, কংগ্রেস-আপের ‘ইন্ধনেই’ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিংসা হচ্ছে, পাল্টা তোপ জাভড়েকরের


ঘটনায় বহিরাগতদের নিয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে ABVP-র বিরুদ্ধে। যদিও হামলার সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করে ABVP-র দাবি, নয়া নাগরিক আইন নিয়ে বামপন্থীদের আন্দোলন স্রোত হারিয়েছে। তাই লাইম লাইটে আসতেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে SFI।