নিজস্ব প্রতিবেদন: দরজায় পিওন কড়া নেড়ে যদি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামাঙ্কিত একটি চিঠি আপনার হাতে ধরিয়ে দেয়, তা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বুঝে নিতেই পারেন, ওই চিঠিটি এসেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে। বিষয়বস্তু? প্রধানমন্ত্রীর জন আরোগ্য যোজনার অধীনে বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য বিমা ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর ১০০ দিনের খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে। আর তাতে আপনার মাতৃভাষায় লেখা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জীবনের লড়াইয়ের কড়চা। এখানেই শেষ নয়। সাড়ে চার বছরে মোদী সরকারের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের ‘গুণগান’ গাওয়া রয়েছে ওই চিঠিতে। ভোটের মরসুমে এ ভাবেই প্রায় সাড়ে ৭ কোটি চিঠি পৌঁছে গিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- উচ্চবর্ণের সংরক্ষণের বৈধতা নিয়ে মোদী সরকারের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট


এনডিটিভি-র দাবি, ওই ৭ কোটি চিঠি ছাপাতে কেন্দ্রের খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। ফুল স্কেপ-এ দুই পাতার ওই চিঠির পোস্টাল চার্জও রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের মুখে পড়েছে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ। বিরোধীদের কটাক্ষ, এটি আদপে নির্বাচনী ‘গিমিক’।


সিপিএম সাংসদ এমবি রাজেশ বলেন, স্বাস্থ্য বিমার নাম করে চিঠিতে যথাসম্ভব কেন্দ্রের সব প্রকল্পের বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি নাগরিকের নামে স্পিডপোস্টে পাঠানো হয়েছে এই চিঠি। প্রত্যেকটি চিঠি পাঠাতে খরচ হয়েছে কমপক্ষে ৪০ টাকা। স্বাস্থ্যবিমার মোট বাজেট ২ হাজার কোটি টাকা। তা হলে কোথা থেকে এত টাকা এল? প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএম নেতা এমবি রাজেশ।



‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর সিইও ইন্দু ভূষণ যদিও এ সব অভিযোগ খারিজ করে বলেন, এটি কোনওভাবেই নির্বাচনী প্রচার নয়। এই প্রকল্প সম্বন্ধে নাগরিকদের সচেতন করে তোলার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর খরচের বিষয়ে কেন্দ্রের যুক্তি, ওই চিঠির বিল প্রশাসনিক ব্যয় হিসাবে দেখানো হয়েছে। স্বাস্থ্যবিমার বরাদ্দ অর্থে এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানানো হয়েছে। বিজেপি সাংসদ ভি মুরলীধরণ বলেন, যারা এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক পদক্ষেপ বলে দাবি করছে, ক্ষমতায় থাকাকালীন তারাই ওই অর্থের অপব্যবহার করেছে। আয়ুষ্মান ভারত-এর মতো প্রকল্পের সুবিধা সবাইকে দিতেই আরও সচেতন করা হচ্ছে তাঁদের।



উল্লেখ্য, নবান্ন কেন্দ্রের এই প্রকল্প প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেয়, বিভ্রান্তি তৈরি করছে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ। রাজ্যের সঙ্গে চুক্তির শুধু বিরোধিতা হচ্ছে তাই নয়, রাজ্যস্তরে বিভ্রান্ত তৈরি হচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, পশ্চিমবঙ্গের মতো ধন্দে রয়েছে অ-বিজেপি রাজ্যগুলোও। তাদের অভিযোগ রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই ওই চিঠি বাড়ি বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১২ লাখ চিঠি পৌঁছেছে বাম শাসিত কেরলে।


আরও পড়ুন- হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে সিবিআই হানা, তল্লাশি ৩০ জায়গায় 


তিরুবন্তপুরমের বছর কুড়ির যুবক বিষ্ণুর কথায়, গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর নামে একটি চিঠি আসে। তা দেখে প্রথমে অবাকই হয়েছিল তাঁর পরিবার। পরে মলায়ালম ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর জীবনী পড়ে খুশি হয়ে যান তাঁরা। কী লেখা রয়েছে তাতে? “... জীবনে খুব কাছ থেকে দারিদ্র দেখেছি। তাই মনে হয়, মানুষের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়াই দারিদ্র দূরীকরণের শ্রেষ্ঠ পথ। এই কারণে, যখন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মানুষ আমায় নির্বাচিত করে, তাঁদের সেবা করার সুযোগ আমাকে  দেন, আমি সর্বতোভাবে  নারী, পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের দারিদ্র দূরীকরণের চেষ্টা করেছি।”