নিজস্ব প্রতিবেদন: বুধবার পাঞ্জাবের ফেরোজপুর জেলায় মাঝ উড়ালপুলে প্রায় ২০ মিনিট আটকে থাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয়। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে দেশে। প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মোদীর কনভয়ের সামনে কীভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হল, কেনই বা 'ফাঁক' থাকল নিরাপত্তায় তা নিয়ে ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এক নজরে জেনে নেওয়া যাক দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা কীভাবে পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষা ছক সাজানো হয়?


প্রধানমন্ত্রীর কোনও সফরের সময় নিরাপত্তা কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং রাজ্য পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে দেখভাল করে। SPG-এর ব্লু বুক যাকে বলা হয় তাতে বিস্তৃত এই নির্দেশিকা দেওয়া আছে। প্রধানমন্ত্রীর যে কোনও পরিকল্পিত সফরের তিন দিন আগে, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দেখভালকারী এসপিজি (স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ), সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর আধিকারিক এবং সেই রাজ্যর পুলিশ মিলিতভাবে কাজটি করে৷ শুধু তাই নয় একটি অ্যাডভান্স সিকিউরিটি লিয়াজোঁ মেনেও চলা হয়। পুলিশ আধিকারিক, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বৈঠক করে আগেই একটি ASL রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যার ভিত্তিতে সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়।


আরও পড়ুন, Gujarat: সুরাটে লিক বিষাক্ত রাসায়নিক; মৃত ৬ আশঙ্কাজনক ২০


বৈঠকের সময় কোন কোন বিষয়ে জোর দেওয়া হয়? 


বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে পৌঁছবেন (বিমান, সড়ক বা রেলপথে) তা আগে ঠিক হয়। এরপর তিনি অবতরণ করলে, কীভাবে তিনি তাঁর কর্মসূচির স্থানে পৌঁছবেন (সাধারণত হেলিকপ্টার বা সড়কপথে) তা ঠিক করা হয়। কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করে তা ঠিক করে নেওয়া হয়। অনুষ্ঠান স্থলের নিরাপত্তার দিকটিও আগাম দেখে নেওয়া হয়। যার মধ্যে রয়েছে প্রবেশ এবং প্রস্থান। উপস্থিতদের তালিকা, প্রবেশ পথে মেটাল ডিটেক্টর বসানো মত বিষয় খতিয়ে দেখে নেওয়া হয়। এমনকি মঞ্চটি প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত কি না তাও পরীক্ষা করা হয়। 


এছাড়াও ফায়ার সেফটি, আবহাওয়া, জলপথের যান প্রস্তুত করে রাখা, এই বিষয়গুলিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। প্রধানমন্ত্রী যে রুটে নিয়ে যাবেন সেখানে যদি ঝোপঝাড় থাকে, তাহলে SPG সেগুলি কেটে ফেলতে বলতে পারে। নিরাপত্তার স্বার্থে বড় রাস্তা ধরেই নিয়ে যাওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। 


তবে প্রাক্তন ইউপি ডিজিপি ওপি সিং যিনি এর আগে এসপিজিতে কাজ করেছেন, তিনি বলেন, "এসপিজি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়। প্রধানমন্ত্রী যখন কোনও রাজ্যে সফরে যান, তখন সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের থাকে। তাদের গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহ, রুট ক্লিয়ারেন্স, ভেন্যু স্যানিটাইজেশন এবং ভিড় ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে থাকে।" 


রাজ্য পুলিশ অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত এসপিজি কখনই প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের অনুমতি দেয় না। রাজ্য পুলিশ একজন পাইলটও সরবরাহ করে যে প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের নেতৃত্ব দেয়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একজন এসপি স্তরের অফিসারকে ক্যাম্প কমান্ড্যান্ট হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। জনসভা, সমাবেশ এবং রোড শো চলাকালীন সাদা পোশাকে মোতায়েন করা থাকে পুলিশ বাহিনী। 


আরও পড়ুন, PM’s Security Lapse: ফ্লাইওভারে আটকে মোদীর কনভয়, নিরাপত্তায় গলদের অভিযোগ উড়িয়ে সাফাই মুখ্যমন্ত্রীর


আচমকা পরিকল্পনা পরিবর্তন হলে কী করা হয়?


সবসময় 'প্ল্যান বি' প্রস্তুত থাকে প্রধানমন্ত্রীর সফরে। সুরক্ষার দিকটি বিবেচনা করেই এই কাজ করা হয়। ধরা যাক আবহাওয়ার কারণে যদি পরিকল্পনা পরিবর্তন হয়। সেক্ষেত্রে  আকাশপথে যদি না যেতে পারেন তবে কীভাবে সড়কপথে নিয়ে যাওয়া হবে কনভয় তার আগাম পরিকল্পনা ও সুরক্ষা থাকে। কোনও কিছুই শেষ মুহূর্তের জন্য রেখে দেওয়া হয় না। সূত্র জানায়," শীতকালে অনেক সময় কুয়াশার কারণে প্রধানমন্ত্রীকে সড়কপথে সফর করতে হয়। সেসব রুট আগে থেকেই পরিকল্পিত ও সুরক্ষিত করা থাকে। কোনো কারণে পথ পরিষ্কার না হলে রাজ্য পুলিশ অনুমতি দেয় না। তখন বাতিল হয় সফর।"  


কোনও প্রতিবাদ বিক্ষোভের মুখে পড়লে কী করা হয়?


যে কোনো ভিআইপি-এর সফরের আগে সেই এলাকা শান্ত রাখার দায়িত্ব থাকে রাজ্য পুলিশের হাতে। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর অফিসারদেএ ইনপুট থাকে যে কোনও দল কোনও প্রতিবাদ পরিকল্পনা করছে কি না। সেই মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। আগাম পিকেটিং করা হয়। যদি বোঝা যায় সেই পথে সমস্যা বাড়তে পারে তবে অন্য পথ নেওয়া হয়৷


Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App