নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনা পরবর্তি আর্থিক মন্দা সামাল দেওয়ার জন্য ২০ লাখ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। টানা কয়েকদিন ধরেই সেই প্যাকেজের বিস্তারিত একে একে ঘোষণা করছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর প্রায় প্রতিদিনই কেন্দ্রের ঝুলি থেকে বেরিয়ে আসছে বেসরকারিকরণের বেড়াল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-ব্লকস্তরে সরকারি হেল্থ ল্যাবরেটরি, ঘোষণা অর্থমন্ত্রী নির্মলার


রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে নির্মলা সীতারামন বলেন, আত্মনির্ভর ভারতের একটি শক্তি হবে পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইস নীতির ওপরে। কী সেই নীতি?  কেন্দ্রের পরিকল্পনা হল, স্ট্রাটেজিক সেক্টর কমপক্ষে একটি সংস্থা হবে সরকারি। তবে বেসরকারি সংস্থাকেও অনুমতি দেওয়া হবে। সীতারামন বলেন, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ খরচ কম করার জন্য স্ট্রাটেজিক সেক্টরে সরকারি সংস্থার সংখ্যা হতে পারে ১-৪। অন্যরা হবে বেসরকারি।


উল্লেখ্য, শনিবার নির্মলার ঘোষণার দিকে নজর রাখলেই বোঝা যাবে সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাশ আর নিজের হাতে রাখতে চাইছে না। অন্যভাবে বললে কসলা, খনিজ, এমনকি মহাকাশ গবেষণাতেও বেসরকারি সংস্থার অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে।



দেখে নিন এক নজরে-


কয়লা


# বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্পাদন করা হবে।


# সরকারের একচেটিয়া ক্ষমতা আর থাকবে না।


# কয়লা শিল্পে বেসকারিভাবে উত্তোলন করা হবে। বাজার মূল্যে কয়লা মিলবে। যারা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কয়লা উত্পাদন করবেন তারা ইনসেন্টিভ পাবেন।


# ১৫,০০০ কোটি টাকা খরচ করা হবে ইভাকুয়েশন ইনফ্রাস্ট্রাক্টারের জন্য।


# ৫০ কয়লা ব্লক নিলাম করা হবে।


খনিজ


# একপ্লোরেশন কাম প্রোডাকশন সিস্টেম চালু হবে। অংশ নেবে বেসরকারি সংস্থা।


# ৫০০ ব্লকে এই নিয়ম চালু হবে।


# মাইনিং লিজ নেওয়ার পর তা হাতবদল করা যাবে।


# খনি লিজ নেওয়ার সময় স্ট্যাম্প ডিউটি বাস্তবসম্মত করা হবে।


প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি


# কিছু অস্ত্র বিদেশ থেকে আমদানি করা যাবে না। এর একটা তালিকা তৈরি করা হবে। প্রতিবছরে এর সংখ্যা বাড়বে। এনিয়ে সেনার সঙ্গে কথা বলা হবে।


# বিদেশি বিনিয়োগ ৪৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হবে ৭৪ শতাংশ।


# অর্ডেন্যান্স বোর্ড করপোরেটাইজ করা হবে। সাধারণ মানুষ এর শেয়ার কিনতে পারবেন।


বিমান পরিবহন


# আরও ৬টি বিমানবন্দর নিলাম করা হবে। কাজ হবে পিপিপি মডেলে।


কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিদ্যুতে বেসরকারিকরন


# নতুন ট্যরিফ পলিসি ঠিক করা হবে।


# সরবারহের বেসরকারিকরণ করা হবে।


সোশ্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার


# বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ মিলবে।


মহাকাশ


# মহাকাশ সম্পর্কিত টেকনোলজিতে বেসরকারি সংস্থার প্রবেশ অধিকার মিলবে।


# সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবে। তবে সরকার সতর্ক থাকবে।


পরমাণু ক্ষেত্র


# মেডিক্যাল আইসোটোপ তৈরিতে পিপিপি মডেলে কাজ হবে।


# কৃষিতে রেডিয়েশন টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে।


আরও পড়ুন-ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার! বুধবার সন্ধ্যায় আমফান আছড়ে পড়বে সাগরদ্বীপে


বেসরকারিকরণের খারাপ দিক নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে আরএসএস সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক ব্রিজেশ উপাধ্যায় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, প্রথম ৩ দিনের ঘোষণায় যাঁরা হাওয়ায় ভাসছিলেন, দেশ ও তাঁদের জন্য আজ দুঃখের দিন। উপাধ্যায়ের কথায়,''শ্রমিক সংগঠন,প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে সংলাপ ও আলোচনায় ইচ্ছুক নয় সরকার। এটাই বুঝিয়ে দিয়েছে, সরকারের আত্মবিশ্বাসের কতখানি অভাব! এটা নিন্দাজনক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের সংগঠন বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করে আসছে। নীতি নির্ধারকদের কাছে সংস্কার ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানে দাঁড়িয়ে গিয়েছে বেসরকারিকরণ। করোনা অতিমারির অভিজ্ঞতা বেসরকারিক্ষেত্রের পঙ্গুত্ব দেখিয়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।''