রাহুল গান্ধির `না`, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে দুর্যোগের মেঘ
কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বের সঙ্কট বছরের পর বছর ধরে প্রকট হয়ে উঠেছে এবং নির্বাচনে পরাজয় এবং বর্ষীয়ান নেতাদের দল ছেড়ে যাওয়ার ফলে তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। মার্চ মাসে, সোনিয়া গান্ধী দলের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি সভা করেন। সেখানে সিনিয়র নেতাদের সামনে তার বক্তৃতায় রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রার সঙ্গে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নির্বাচনের সপ্তাহেও, কংগ্রেসের পরবর্তী প্রধান কে হবেন সেই সংক্রান্ত অচলাবস্থা কাঁটার কোনও সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না। রাহুল গান্ধীকে দলের প্রেসিডেন্ট হওয়ার অনুরধ জানানো হলেও তিনই সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে পদত্যাগ করেন তিনই। তার পর থেকে তিনি এই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন। প্রতিবার কংগ্রেস সদস্যদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি সোনিয়া গান্ধীও তাঁর স্বাস্থ্যের কারণে সভাপতি পদে ফেরার কথা অস্বীকার করেছেন। এরপরেই আলচনার কেন্দ্রে এসেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রার দিকে সকলের নজর ঘোরার মূল কারণ ১৩৭ বছর বয়সী এই দলের বেশিরভাগ সদস্য এখনও গান্ধী পরিবারকে সামনে রেখেই লড়াই করতে আগ্রহী। কিন্তু এই বছরের উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে তার বিপর্যয়কর রেকর্ড এখনও নেতার মনে রয়েছে। ঐক্যমত্যের অভাবের কারণে আজ থেকে শুরু হতে চলা কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে অনিশ্চয়তার মেঘ দেখা দিয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এই সমস্যা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেনি।
কংগ্রেস নেতা প্রবীণ ভক্ত চরণ দাস জানিয়েছেন, ‘হ্যাঁ, তিনি (রাহুল গান্ধী) বলেছেন যে তিনি আগ্রহী নন, তবে আমরা তার সঙ্গে কথা বলছি এবং তাকে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। তাকে আমাদের বলতে হবে কিভাবে এই পদটি পূরণ করা হবে’। রাহুল গান্ধী অবশ্য সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সেপ্টেম্বরে একটি বিশাল সমাবেশে ভাষণ দেবেন এবং কন্যাকুমারী থেকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করবেন।
হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা একটি সমাবেশের আয়োজন করছি এবং রাহুল গান্ধী এখানে নেতৃত্ব দেবেন। যদিও আমরা সভাপতি নির্বাচনের বিষয়ে নিশ্চিত নই’।
আরও পড়ুন: 'ওরা গান্ধীজি কে মেরেছে, আমাকে কি ছেড়ে দেবে?' প্রাণনাশের হুমকি সিদ্দারামাইয়াকে
কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বের সঙ্কট বছরের পর বছর ধরে প্রকট হয়ে উঠেছে এবং নির্বাচনে পরাজয় এবং বর্ষীয়ান নেতাদের দল ছেড়ে যাওয়ার ফলে তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।
মার্চ মাসে, সোনিয়া গান্ধী দলের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি সভা করেন। সেখানে সিনিয়র নেতাদের সামনে তার বক্তৃতায় রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদ্রার সঙ্গে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দেন। তবে তাকে নির্বাচন পর্যন্ত এই পদে থাকতে রাজি করানো হয়। শেষবার কংগ্রেসে গান্ধী পরিবারের বাইরে সভাপতি হন সীতারাম কেশরী। ১৯৯৮ সালে সভাপতি হন তিনি।
মে মাসে উদয়পুরে একটি মেগা বৈঠকের সময়, কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনের জন্য বিশদ কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। কংগ্রেস একজন নতুন সভাপতি নিরবাচনের জন্য সময়সীমা নির্ধারন করে।
যেই কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হবেন তাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিজেপির বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কঠিন কাজটি করতে হবে। কংগ্রেস ইতিমধ্যেই দুটি নির্বাচনে হেরেছে বিজেপি-র কাছে।