নিজস্ব প্রতিবেদন: মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাফাল নিয়ে একের পর এক সওয়াল রাহুল গান্ধীর। তার পাল্টা জবাব অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিরও।  টেবিল বাজানো, মসকরা, স্লোগান, কাগজের বিমান ওড়ানো, তুমুল হইহট্টগোলের মধ্যে মুহুর্মুহু মুলতুবি হল অধিবেশন। এ ভাবেই বুধবার দিনভর রাফাল নিয়ে উত্তাল রইল লোকসভা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতকারের পর সংসদে এ দিন রাফাল নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তোলেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, রাফাল বিষয়ে আসল প্রশ্ন কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সে সব প্রশ্ন মনে করিয়ে দিয়ে রাহুল অভিযোগ করেন, কার নির্দেশে ১২৬টি রাফালের পরিবর্তে ৩৬টি রাফাল কেনার চুক্তি হয়েছে? তাঁর আরও অভিযোগ, ইউপিএ সরকারের আমলে ৫২৬ কোটি টাকার রাফাল কেন তিন গুণ দামে কেনা হচ্ছে? কেন্দ্রের যদি এতই তাড়া থাকে, তা হলে এখনও পর্যন্ত কেন দেশের মাটিতে রাফাল অবতরণ করা গেল না? রাহুলের প্রশ্ন, হ্যালের মতো যুদ্ধবিমান তৈরিতে অভিজ্ঞ সংস্থার পরিবর্তে মাত্র ১০ দিনের তৈরি সংস্থার হাতে অংশীদারিত্ব তুলে দেওয়া হল কেন? যৌথ সংসদীয় কমিটি তৈরির দাবি তুলে রাহুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে কখনও জেপিসি তদন্ত না হওয়ার কথা বলেনি। কেন্দ্র কেন চাইছে না?



আরও পড়ুন- রাফাল নিয়ে সংসদে রাহুলকে স্টাম্প আউট করলেন জেটলি


এ দিন রাহুল গান্ধীর প্রশ্নের জবাব অত্যন্ত প্রত্যয়ী সুরে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর কথায়, রাফাল কেনার আলোচনা শুরু হয় ইউপিএ জমানায়। তখন বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র-সহ বিমানের পৃথক দাম দেওয়া হয়। জেটলির কটাক্ষ, এই দুইয়ের পার্থক্য রাহুল হয়তো জানেন না। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে দেওয়া দাম ২০১৬য় নিশ্চিয়ই এক হবে না। কিন্তু তাদের জানিয়ে রাখি, ২০০৭ সালের নিরিখে শুধুমাত্র বিমান ৯ শতাংশ সস্তায় কেনা হয়েছে। আর ক্ষেপণাস্ত্র-সহ বিমান মিলেছে প্রায় ২০ শতাংশ সস্তায়। এর আগে সংসদে রাফালের দাম নিয়ে মুখ খুলতে চাননি প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে জেটিল বলেন, বিমানের প্রকৃত দাম আগেই জানানো হয়েছে। কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্র-সহ বিমানের দাম জানানো দেশের নিরাপত্তার পক্ষে ক্ষতিকারক। দাম প্রকাশ্যে এলে ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা সম্পর্কে শত্রুপক্ষ অবগত হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী এটি আইনবিরুদ্ধ কাজও ।


আরও পড়ুন- বিফলে গেল রাফালের অডিয়ো বার্তা! সংসদে সত্যতা প্রমাণে ব্যর্থ রাহুল



অনিল অম্বানীকে অংশীদারিত্ব দেওয়ার বিষয়ে কংগ্রেসকে অরুণ জেটলির কটাক্ষ,  এখনও পর্যন্ত তাদের জানা নেই অফসেট কী জিনিস! অফসেট পলিসি তৈরি হয়েছে ইউপিএ-র আমলেই। তারা যে ১.৩০ লক্ষ কোটি প্রোজেক্টের কথা বার বার বলছে তাদের জানা উচিত ওই প্রোজেক্ট ৫৮ হাজার কোটি টাকার। মেক ইন ইন্ডিয়ার নিয়ম অনুসারে রাফালের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অংশীদারিত্ব পেয়েছে অফসেট সংস্থাগুলি। এর মধ্যে অনিল অম্বানীর মতো একাধিক সংস্থাও রয়েছে।


আরও পড়ুন- শপথ নেওয়ার পরই মন্দিরে শিবপুজো করলেন রাজস্থানের মুসলিম মন্ত্রী


হ্যাল-কে নিয়ে যে অভিযোগ রাহুল তুলেছেন, তাও এ দিন সংসদে খণ্ডন করেন অরুণ জেটলি। ইউপিএ আমলে হ্যালকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, ওই সংস্থা ২.৭ গুণ বেশি ‘ম্যান-আওয়ারস’ সময় চায়। হ্যালের উপর ভরসা করলে বহু বছর লাগবে রাফাল আনতে। কিন্তু বায়ু সেনার দীর্ঘদিনের দাবি এবং দেশের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এগোনো হয়েছে বলে জানান অরুণ জেটলি। রাফাল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত সাফ উড়িয়ে দেন জেটিল। তিনি বলেন, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট নিশ্চিত করেছে গোটা প্রক্রিয়ায় কোনও ধোঁয়াশা নেই, এর পর কোনও তদন্তের প্রয়োজন হয় না। অরুণ জেটলি মনে করিয়ে দেন, রাফাল ইস্যু কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নয় যে জেপিসি-তে পাঠানো দরকার। রাফাল চুক্তিতে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কি হয়নি, সেই প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্ট ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছে। এর পর আর কোনও প্রশ্নই থাকতে পারে না!