নিজস্ব প্রতিবেদন: রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর চেষ্টায় শেষপর্যন্ত সমঝোতার সিদ্ধান্ত হজম করতে হল একগুঁয়ে অশোক গেহলটকে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সচিন পাইলট ও তাঁর অনুগত ১৮ বাগি বিধায়ককে বিদেয় করার সব আয়োজনই করে রেখেছিলনে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। ১৪ অগাস্ট বিধানসভা অধিবেশনে সচিনের বিরুদ্ধে কিছু একটা ব্যবস্থা নিয়েই ফেলতেন গেহলট। তার আগেই ঘর গুছিয়ে ফেললেন সচিন। বলতে গেলে এক্সট্রা টাইমে গোল করে বেরিয়ে গেলেন পাইলট। অন্যদিকে, মধ্যপ্রদেশের পুনরাবৃত্তি মরুরাজ্যে হতে দিতে নারাজ কংগ্রেস হাইকমান্ডের তরুণ ব্রিগেড। আর দিল্লির এই সিদ্ধান্তই আমফানের মতো এসে আছড়ে পড়েছে গেহলট শিবিরে।


আরও পড়ুন-সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করছেন রেলের অফিসাররা! আসল গল্প সামনে আসতেই থ চাকরিপ্রার্থীরা


সোমবার রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে ম্যারাথন বৈঠকের পরই সচিন পাইলটের ঘরওয়াপসির দরজা খুলে যায়। এখন ফুল মালা নিয়ে গুজ্জর নেতা সচিনকে স্বাগত না জানালেও ফের মন্ত্রিসভায় ওই 'নিকম্মা', 'আংরেজি' বোলনেওয়ালাকেই সহ্য করতে হবে গেহলটকে। সবেমিলিয়ে এবার সতীনের ঘর করতে হবে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীকে।


শুধু ঘরে ফেরাই নয়, অশোক গেহলটের সরকার চালানোর 'মনমানি'-র বিষয়টিও রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কাছে তুলেছেন সচিন। রেখেছেন তিন শর্তও। তবে সংবাদমাধ্যমে সচিন শুধু এটাই বলেছেন, 'নীতির প্রশ্নে তিনি যে বিষয়গুলো তুলেছেন তা দল ও রাজ্যের স্বার্থে তুলতেই হতো।' এখন সচিনের ওইসব অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য ৩ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। সেই কমিটিতে রয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। এখানেও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন গেহলট।


রাজস্থান কংগ্রেস সূত্রের খবর, দল থেকে বাদ হতে হতে হাইকমান্ডের বদান্যতায় সচিন যেভাবে বিদ্রোহী লস্করদের নিয়ে দলে ঢুকছেন তাতে ক্ষুব্ধ গেহলট ও তাঁর অনুগামীরা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর অনুগত বিধায়কদের একপ্রকার জয়সলমিরে বন্দিই করে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন আর সেই অতি সাবধানতার কোনও অর্থই রইল না। সবাই মিলে এখন হাত কামড়াচ্ছেন হোটেলে বসে। রেগেও রয়েছে অনেকে। তাদেরকে এবার বুঝিয়ে বাগে আনতে হবে গেহলটকে।


গতকাল সচিনের দলে ফেরার রাস্তা অলক্লিয়ার হওয়ার পরই জয়সলমিরে গিয়েছেন গেহলট। সচিনের দলে ফেরা নিয়ে গেহলট সাংবাদিকদের বলেন, 'দলে শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে হবে। দলের সমস্যা নিয়ে ৩ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। বিজেপি চেয়েছিল দল ভাঙাতে। কিন্তু শেষপর্যন্ত দেখা গেল আমাদের দলের বিধায়করা একজোটই রয়েছেন।' বিরোধীদের প্রশ্ন , তাহলে আর এই সাতকাণ্ড কেন!


এদিকে, জয়সলমিরের সূর্যগড় হোটেলে বন্দি কংগ্রেস বিধায়করা চাইছেন একটা কড়া সাজা হোক সচিনের। তা না হলে কীভাবে তিনি দলে ফিরতে পারেন একজন বিদ্রোহী। এই দাবির সমর্থনে তাঁরা চাপ বাড়াচ্ছেন গেহলটের ওপরে। তাঁদের বোঝাতেই জয়সলমির দৌড়েছেন গেহলট। বোঝাতে চাইছেন, আমিতো সব চেষ্টাই করেছিলাম, সব ঘেঁটে দিয়েছেন রাহুলবাবা।


আরও পড়ুন-গল্পস্বল্প: জহরের কপালে চুম্বন এঁকে দিয়ে সুচিত্রা সেন বলেছিলেন, তুমি চলে গেলে চার্লি!


কংগ্রেস সূত্রে খবর, সোমবার সচিনের দলে ফেরার রাস্তা তৈরি হয়ে যাওয়ার পর কংগ্রেসের বড় মেজো নেতাদের ফোন করেন গেহলট। কিন্তু, ওপার থেকে শুনতে হয় পার্টি লাইন মেনে চলতে হবে।দলের সচিনকে প্রয়োজন। মধ্যপ্রদেশের ঘটনা আর কোথাও হতে দেওয়া যাবে না। কারণ ওঁত্ পেতে রয়েছে বিজেপি। 
সবেমিলিয়ে এখন যথেষ্ট চাপে গেহলট। একে তো সচিনের মাত্র ১৮ বিধায়ক দলের কাছে বেইজ্জত হওয়া, হাইকান্ডের কাছে মুখ না পাওয়া তার ওপরে দলে তাঁর অনুগত বিধায়কদের কাছে তাঁর দুর্বলতা প্রকাশ হয়ে যাওয়া। এর পর নতুন কোনও প্যাঁচ গেহলট কষেন কিনা সেটাই এখন দেখার।