বিমুদ্রাকরণের পর ৯৯.৩% পুরনো নোট ফেরত এসেছে: আরবিআই
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অর্থ ব্যবস্থা থেকে কালো টাকা ধুয়েমুছে সাফ করার জন্য বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট বাতিল করেছিলেন। কিন্তু আরবিআইয়ের পরিসংখ্যান বলছে, কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যত ব্যর্থ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সবমিলিয়ে ৫০০ ও ১০০০ টাকার বাতিল নোটের ৯৯.৩% ফিরে এসেছে। এতে স্পষ্ট, অতি সামান্য টাকাই আর্থিক ব্যবস্থার বাইরে চলে গিয়েছে।
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন আর্থিক ব্যবস্থায় ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট মিলিয়ে অর্থমূল্য ছিল ১৫.৪১ লক্ষ কোটি। তার মধ্যে ১৫.৩১ লক্ষ কোটি অর্থমূল্যের নোটই ফেরত এসেছে। অর্থাত্ ১০,৭২০ কোটি অর্থমূল্যের নোট ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার বাইরে চলে গিয়েছে।
নোট বাতিলের পর কত টাকা ফিরছে, তা গুনতে দীর্ঘ সময় নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। নোট বাতিলের প্রায় দেড় বছর পর ২০১৭-১৮ বার্ষিক রিপোর্টে আরবিআই জানাল, বাতিল নোট বদল বা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার অবসান হল।
নোট বাতিলের পর পুরনো নোট বা স্পেসিফায়েড ব্যাঙ্ক নোট জমা করে নতুন নোট নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। পুরনো নোট খতিয়ে দেখা ও গণনার প্রক্রিয়া সফলভাবে শেষ হয়েছে বলে জানাল আরবিআই। দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানাল, ১৫,৩১০.৭৩ বিলিয়ন অর্থমূল্যের স্পেসিফায়েড ব্যাঙ্ক নোট ফিরে এসেছে।
নোট বাতিলের পর নতুন নোট ছাপাতে বিশাল টাকা খরচ হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। পুরনো নোটের জায়গায় নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোট চালু করা হয়। বিমুদ্রাকরণের পর ২০১৬-১৭ সালে নতুন ৫০০, ২০০০ টাকা ও অন্যান্য অঙ্কের নোট ছাপাতে ৭,৯৬৫ কোটি টাকা খরচ করেছে আরবিআই। তার আগের অর্থবর্ষে খরচ হয়েছিল ৩,৪২১ কোটি টাকা। অর্থাত্ নোট বাতিলের পর দ্বিগুণ খরচ করেছে আরবিআই। ২০১৭-১৮ (জুলাই,২০১৭-জুন,২০১৮) নোট ছাপাতে খরচ পড়েছে ৪,৯১২ কোটি টাকা।
জাল নোট, কালো টাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিমুদ্রাকরণতে হাতিয়ার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আরবিআইয়ের বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, নোট বাতিলের পর ৫০০ এবং ১০০০ টাকার জাল নোটের সনাক্তকরণ যথাক্রমে ৫৯.৭ শতাংশ ও ৫৯.৬ শতাংশ কমে গিয়েছে। তবে গত বছরের চেয়ে ১০০ টাকার জাল নোটে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। বিমুদ্রাকরণের পর ৫০ টাকার জাল নোট বেড়েছে ১৫৪.৩ শতাংশ।
আরবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থ বর্ষে নতুন ৫০০ ও ২০০০ টাকার জাল নোট পাওয়া গিয়েছে যথাক্রমে ৯,৮৯২ ও ১৭,৯২৯টি। গত অর্থবর্ষে তা ছিল ১৯৯ ও ৬৩৮। অর্থাত্ পাঁচশো ও দুহাজারির জাল নোটের সংখ্যা বাড়ছে।