লালারস সংগ্রহের দরকার নেই, গার্গেল করা জলই বলে দেবে আপনি করোনা আক্রান্ত কিনা!
গবেষণার নাম `Gargle lavage as a viable alternative to swab for detection of SARS_COV_2`। AIIMS-এর মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা এই গবেষণা করেন।
কমলিকা সেনগুপ্ত : গার্গেল করা জল দিয়েই হতে পারে করোনা পরীক্ষা। নিজের লালারস এই পদ্ধতিতে নিজেই টেস্টিংয়ের জন্য দেওয়া যেতে পারে। এতে স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন হবে না। এরফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই কিট পরে আর নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে লালারস সংগ্রহ করতে হবে না। যে নিজেকে করোনা আক্রান্ত বলে সন্দেহ করছে, সে নিজেই গার্গেল করার সময় তার গার্গল করা জল আলাদা করে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে দিয়ে আসতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে কোভিডের চিকিত্সায় খরচও কমবে। AIIMS-এর চিকিৎসকদের করা এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ-এ।
গবেষণার নাম "Gargle lavage as a viable alternative to swab for detection of SARS_COV_2"। AIIMS-এর মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা এই গবেষণা করেন। সেই দলে রয়েছেন অঙ্কিত মিত্তল নামে একজন বাঙালি চিকিৎসকও। গবেষণা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, লালারস সংগ্রহ করার সময় স্বাস্থ্যকর্মীদের বেশি করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসতে হয়। ফলে তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। নয়া এই পদ্ধতিতে সেটা থেকে বাঁচা যাবে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিকল্প পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা হলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এই বিকল্প পদ্ধতি "gargle lavage"-র সঙ্গে ন্যাসোফ্যারাইঙ্গেল ও অরোফ্যারাইঙ্গেলকে তুলনা ও করা হয়।
মে-জুন মাসে AIIMS-এ চিকিৎসাধীন ৫০ জন কোভিড রোগীর ওপর এই ক্রস ফাংশনাল গবেষণা করা হয়। আক্রান্ত হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লালারসের নমুনা ও গার্গেল করা জলের নমুনা নেওয়া হয়। এরপর RTPCR পদ্ধতিতে তার পরীক্ষা করা হয় । দেখা যায়, সব গার্গেল নমুনা পজিটিভ হয়েছে। এর পাশাপাশি শতকরা ৭৪ ভাগ রোগী লালারসের এর মাধ্যমে নমুনা নেওয়াতে অসুবিধাবোধ করেন। অন্যদিকে মাত্র ২৪ শতাংশ রোগী গার্গেলের নমুনা নেওয়াতে অসুবিধাবোধ করেন। রিপোর্টের শেষে বলা হয়েছে যে, সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে গার্গেলের মাধ্যমেও নমুনা নেওয়া যেতে পারে। যদিও আরও অনেক মানুষের থেকে নমুনা নিয়ে তা পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে এই পরীক্ষার জন্য বাড়ির জল দিয়ে গার্গেল বা বেটাডিন দিয়ে গার্গেল করা জল ব্যবহার করা যাবে না। টেস্টিংয়ের জন্য গার্গেল করার ক্ষেত্রে একদম বিশুদ্ধ পানীয় জল (Purified Water Solution) নিতে হবে। কারণ বাড়ির জলে অন্য জীবাণু থাকতে পারে। আর জলে বেটাডিন দিয়ে গার্গল করলে ভাইরাসের উপস্থিতি বোঝা যাবে না।
বিকল্প এই পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা কবে শুরু হবে তা নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ICMR। সংক্রামক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলেন, "এখন যেভাবে ন্যাসোফ্যারিংক্স ও অরোফ্যারিংক্স থেকে নমুনা নেওয়া হয় তাতে অ্যারোসল তৈরি হয়ে থাকে, যাতে স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এই পদ্ধতি শুরু হলে সেটা কমবে। গার্গেল করা জলের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ হলে স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্তের কম সংস্পর্শে আসবেন, যেটা ভালো। আর এতে খরচও কম পড়বে।" জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রণজয় মজুমদার জানান, "এটা ভালো হবে। আরও মানুষ পরীক্ষা করাতে পারবে।"
আরও পড়ুন, রাশিয়ার প্রতিষেধকে মৃত্যু হয়েছে পুতিনের মেয়ের? জানুন আসল সত্যি