কমলিকা সেনগুপ্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অসমে নাগরিক পঞ্জি থেকে যেসব মানুষদের নাম বাদ পড়ল, তাঁদের কি হবে? প্রশাসনের উওর, সম্ভবত নাগরিক পঞ্জিকরণ দফতরেই জানা যাবে। এই ভেবে সেদিকেই গাড়ি ঘোরালাম। কিছু দূর এগিয়েছি, এমন সময় ফোন এলো। জানলাম, রাষ্ট্রপতি ফক্রুদ্দিন আলির ভাইপোর পরিবারেরই নাম ওঠেনি এনআরসি-তে। আমি তো অবাক! রাষ্ট্রপতির পরিবারও বিদেশি তাহলে! আরও পড়ুন- অসম থেকে ফিরছি, পর্ব ৩


নাহ্, এই পরিবারটির কাছে যেতেই হবে। তাই খোঁজখবর নিয়ে রঙ্গিয়াতের দিকে রওনা দিলাম। রঙ্গিয়া, গুয়াহাটি থেকে ২ ঘন্টার পথ। সেখানে পৌঁছে ফক্রুদ্দিন আলির ভাইয়ের ছেলে জিয়াউদ্দিনের বাড়ি খুঁজে পাওয়া বড় ব্যপার। সে যাই হোক অনেক কষ্টে গ্রামের মেঠো রাস্তা দিয়ে যখন জিয়াউদ্দিনের বাড়ি পৌঁছলাম, তখন গোটা গ্রাম ওই বাড়িতেই। ঢুকেই দেখি দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির ভাইপো মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন। আগন্তুক সাংবাদিককে দেখেই তিনি বললেন, "বাবার বাবা কোথায় জন্মেছেন তা জানা নেই। বংশলতিকা নেই, তাই নাম নাই! বলেন তো কিথা করতাম? আমার জ্যাঠা তো দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তাহলে আমি কেমনে বিদেশি হইলাম?" আমার কাছে জিয়াউদ্দিনকে দেওয়ার মতো কোনও উত্তর নেই। জিয়াউদ্দিনের মাটির বাড়ির অবস্থাও মোটে ভালো না। সেখানেই বউ-ছেলেকে নিয়ে এমনভাবে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন, দেখে অবাক লাগে। দেশের প্রাক্তন প্রথম নাগরিকের পরিবারও কি তাহলে বিদেশি! আরও পড়ুন- অসম থেকে ফিরছি পর্ব ২: 'জোয়ানদের তুলে নিয়ে গেল পুলিস,' আশঙ্কার প্রহর নেলির রোজনামচায়


এত রকম ধন্দ নিয়ে এনআরসি দফতর যাওয়ারই ছিল। পরের দিন আবার তৃণমূল প্রতিনিধি দল শিলচর আসবে। সেখানে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। তাই আগে থাকতে এনআরসি অফিসের দিকে রওনা হলাম। পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল। প্রতীক হাজেলা, যাঁর উপর এনআরসি নামক কর্মযজ্ঞের ভার, তিনি স্পষ্ট জানালেন, অনেক সুযোগ দেওয়া হবে অযথা প্যানিক করা উচিত না। হাজার হাজার ডি ভোটারও সুযোগ পাবেন। তিনি এটাও স্পষ্ট করলেন যে কাগজ ঠিকঠাক না থাকলে রাষ্ট্রপতির পরিবার হোক আর যেই হোক, নাম উঠবে না। অর্থাত্, যেখানে যা আশঙ্কা করেছিলাম তাই হতে চলেছে। এরপরের গন্তব্য শিলচর। যেভাবে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে তাতে যুদ্ধ যে অনিবার্য সেটা অনুমান করতেই পারছিলাম। আরও পড়ুন- অসম থেকে ফিরছি পর্ব ১: নাম আছে? অসমজুড়ে একটাই প্রশ্ন