Viral: যোগী রাজ্যে সংখ্যালঘু স্কুলপড়ুয়াকে মারের নিদান শিক্ষকের! ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে তোলপাড়
নির্যাতিত ওই স্কুলপড়ুয়ার বাবা জানিয়েছেন, `আমার ছেলের বয়স ৭। ৭ বছরের শিশুটিকে এক থেকে দু ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়। শিক্ষক সহ ছাত্ররা বার বার মারধর করে।` মারের চোটে গাল লাল হয়ে গেলে কোমরে মারার কথাও বলেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এক ঘণ্টা ধরে সংখ্যালঘু স্কুলপড়ুয়াকে মারের নিদান! মারের নিদান স্কুলের শিক্ষকেরই! সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এমনই এক ভিডিয়ো। ঘটনাটি ঘটেছে যোগী রাজ্যে উত্তরপ্রদেশে। আর সেই ভিডিয়ো ঘিরেই চরমে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিভেদের বীজ বপন করা হচ্ছে শিশুদের নিষ্পাপ মনে। টুইট করেছেন রাহুল গান্ধী। ওদিকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূলও। রাগে ফুঁসছে নেটিজেনরা। উঠেছে নিন্দার প্রবল ঝড়। যদিও অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষকের দাবি, ওই ভিডিয়োটি সত্যি নয়। ভিডিয়োটি এডিট করা হয়েছে।
অভিযোগ, ওই সংখ্যালঘু পড়ুয়া বাড়ির কাজ না করায় তাকে চড় মারতে অন্য সহপাঠীদের নির্দেশ দেন ওই শিক্ষিক। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ওই পড়ুয়া অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তার দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। গাল ভিজে গিয়েছে কান্নায়। ওদিকে শিক্ষক তার সহপাঠীদের বলছেন, তাকে মারার জন্য! মুজাফফরনগরের একটি স্কুলের ওই ভিডিয়ো বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, শিক্ষক মারের নিদান দেওয়ার পরই সহপাঠীরা তাকে জোরে জোরে চড়-থাপ্পড় মারে। এমনকি আরও মারার জন্য উসকানি দেন অভিযুক্ত শিক্ষক। মারের চোটে গাল লাল হয়ে গেলে কোমরে মারার কথাও বলেন অভিযুক্ত শিক্ষক। নির্যাতিত ওই স্কুলপড়ুয়ার বাবা পুলিসকে জানিয়েছেন, তাঁর ছেলেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়েছিল। অপমান করা হয়। মারধর করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, "আমার ছেলের বয়স ৭। ৭ বছরের শিশুটিকে এক থেকে দু ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়। শিক্ষক সহ ছাত্ররা বার বার মারধর করে।"
এই ঘটনায় মুজাফফরনগর পুলিস জানিয়েছে, "পরিবার আগে অভিযোগ জানায়নি। ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই অভিযোগ জানায়। আমরা সম্পূর্ণ তদন্ত করেছি। শিশুটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে, আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। শিশু এবং তার পরিবারের কাউন্সেলিংও করা হচ্ছে।" যদিও বিপাকে পড়ে অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁর দোষ ঢাকার চেষ্টা করেছেন। তাঁর দাবি, এটি একটি ছোট ঘটনা। এরকম কিছু ঘটেনি। ভিডিয়োটি এডিট করা হয়েছে। কিন্তু একজন সিনিয়র পুলিস অফিসার জানিয়েছেন, তাঁরা ওই শিক্ষকের উসকানিমূলক মন্তব্যের প্রমাণ পেয়েছেন।
ভাইরাল এই ভিডিয়োর পরিপ্রেক্ষিতে এদিন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূলও। সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, 'একটা ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে উত্তরপ্রদেশের খোব্বাপুরের। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন ছাত্রকে মারার কথা বলছেন শিক্ষিক। উত্তরপ্রদেশ ভয়ঙ্কর বিভীষকাময় রাজ্যে পরিণত হয়েছে। যে কোনও নাগরিকের লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাওয়া উচিত। তৃণমূলের তরফে আমরা তীব্র প্রতিবাদ করছি। ওই শিক্ষিকাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। কোথায় গেল জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন? তারা নীরব কেন? টিম পাঠিয়েছেন?' একইসঙ্গে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন, 'এ কোন শিক্ষা?' তিনি বলেন,'ভারতবর্ষের সংবিধান নিরপেক্ষতার কথা বলে। তাকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে যারা হিংসায় এই বাচ্চাগুলোকে শিক্ষিত করছে, এর থেকে বড় লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। যোগী রাজ্যের রাগী দিদিমণি যদি এরকম হয়, তাহলে আজকে তিনি শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি হয়ে গোটা শিক্ষক সমাজকেই অপমানিত করেছেন। যাঁদের কাছ থেকে শেখার কথা, তাঁরা যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটান, তাহলে সেটা লজ্জার!'
আরও পড়ুন, PM Modi at Isro: 'ইসরো'য় কাঁদলেন মোদী! ঘোষণা করলেন 'ন্যাশনাল স্পেস ডে'র দিন...