যাতায়াত ও খাবারের খরচ তুলতে কুলিগিরির পেশায় মুখ্যমন্ত্রী
নির্ণয় ভট্টাচার্য্য
দেশের প্রধানমন্ত্রী 'চা-ওয়ালা' আর মুখ্যমন্ত্রী 'কুলি'। ভাবছেন এ আবার কোন দেশ! দেশটির নাম ভারত। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যে কৈশোরে চা বিক্রি করেছেন তা তো তিনি নিজেই বারংবার ফলাও করে জানিয়ে থাকেন। কিন্তু 'কুলি'টা কে? কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি? একজন কুলি একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গেলেন অথচ আপনি জানতে পারলেন না, এটা কি করে সম্ভব! নাহ্, আর আপনাকে ধোঁয়াশায় রাখব না।
ভারতের নবীনতম রাজ্য তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর) এখন তেলুগু ভূমির 'কুলি নাম্বার ওয়ান'। রাও নিজেই তাঁর নতুন 'পেশা'র কথা বড় মুখ করে প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। আর শুধু তাই নয়, রাও-এর নির্দেশ অনুযায়ী, তাঁর সরকারের সব মন্ত্রী, বিধায়ক এবং নেতাকে 'কুলিগিরি'র মাধ্যমে শারীরিক পরিশ্রম করে 'উপার্জন' করতে হবে। কিন্তু হঠাত্ 'কুলিগিরি'কে কেন নিজের পেশা বেছে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী?
নিজের দল তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির (টিআরএস) বার্ষিক কনভেনশনের খরচ তোলার জন্যই এমন অভিনব ভাবনা কেসিআরের। তিনি মনে করছেন এভাবে উপার্জিত টাকায় খাবার এবং যাতায়াতের খরচ উঠে আসবে। এক সপ্তাহ ধরে চলবে টিআরএসের এই 'কুলিগিরি'র কর্মসূচি যার পোশাকী নাম 'গুলাবি কুলি দিনালু' বা গোলাপি শ্রম দিবস (টিআরএসের দলীয় রঙ- গোলাপি)। ফলে এই সময় কালের মধ্যে, তেলেঙ্গানার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সহ তাঁর সামগ্রিক মন্ত্রীসভাকে আপনি চাইলেই মজুরির বিনিমযে কুলি হিসাবে নিয়োগ করতেই পারেন।
মূলস্রোতের রাজনৈতিক দলগুলির গায়ে যখন প্রায়শই দুর্নীতির কাদা লাগছে, তখন এধরনের 'কুলিগিরি' আসলে 'ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা' ছাড়া আর কিছুই না, এমনটাই মনে করেন সমাজতাত্ত্বিকদের একাংশ। তবে সে যাই হোক, আম জনতা সমাজতত্ত্বের এসব গূঢ় বিষয়ে আগ্রহী নয়, তাঁরা কেবল এটা শুনেই খুশি যে তাবড় নেতা-মন্ত্রীসহ খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও কুলিগিরি করে ঘাম ঝড়াবেন। অন্তত একদিনের জন্য নামে নয়, খানিকটা সময়ের জন্য হলেও নেতা-মন্ত্রীরা আম আদমি হবেন। (আরও পড়ুন- মমতাকে আক্রমণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর )