নিজস্ব প্রতিবেদন : একটা-দুটো দিন নয়। ১৫ বছর তিনি কাটিয়ে ফেলেছেন অন্ধকার কুঠুরিতে। কী জন্য সাজা হয়েছিল, সেটা আজ পর্যন্ত বুঝতে পারেন না তিলক রাজ। তবে এটুকু বুঝেছেন, এই ১৫ বছরে তাঁর জীবন ও যৌবন সব ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। মা মারা গিয়েছেন। বাবাও গত হয়েছেন কিছুদিন আগে। তিনি কাউকেই আর শেষ দেখা দেখতে পারেননি। আফসোসের শেষ নেই তা নিয়ে। এমনকী স্ত্রীও ছেড়ে গিয়েছেন ১৫ বছর আগে। পাকিস্তানের অন্ধকারাচ্ছন্ন জেল হেফাজত থেকে জীবনের আলোয় ফেরার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু গ্রামে ফিরে দেখলেন, এখানেও সবই অন্ধকার। তাঁর জীবনে আর আলো নেই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-  মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছিলাম, পুলিসের ভূমিকায় খুশি, প্রতিক্রিয়া জাতীয় মহিলা কমিশনারের


সরবজিত সিং বা কৃপাল সিংরা আর পাকিস্তানের জেল থেকে ফিরতে পারেননি। তিনি ১৫ বছর পর হলেও ফিরলেন। যে জেলে সরবজিত, কৃপালদের রাখা হয়েছিল, তিনিও সেখানে ছিলেন। একদিন সকালে শুনলেন, জেলের অন্য কয়েদিরা নৃশংসভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে সরবজিতকে। তার পরই ভারতীয় কয়েদিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জেলের কোনও গোপন আস্তানায়। সেখানে আরও অন্ধকার। এমনকী নিজের হাতের আঙুলও দেখা যেত না। তিলক রাজের মুখ থেকে একের পর এক ঘটনা শুনে হাড়হিম হয়ে যাওয়ার জোগাড়। ২০০৪ সালে বিজয়পুর এলাকার পান্সর পোস্ট দিয়ে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে পড়েছিলেন তিলক রাজ। তার পর পাকিস্তানের গুজরানওয়ালা শহরে একটি হোটেলে লুকিয়ে ছিলেন ভয়ে। কিছুতেই দেশে ফেরার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এর পরই পাকিস্তানের পুলিস তাঁকে হেফাজতে নেয়।


আরও পড়ুন-  এনকাউন্টারে স্বস্তি সাধারণের, সাইবারাবাদ পুলিসের নামে জয়ধ্বনি পথে-ঘাটে


প্রায় চার বছর পুলিস অবৈধভাবে তাঁকে আটক করে রাখে। চলে অকথ্য অত্যাচার। এর পর আদালতে তাঁকে ভারতীয় গুপ্তচর বলে প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগে পাকিস্তানের পুলিস ও সেনা। পাকিস্তানের এজেন্সি আইএসআই ও এফআইইউ-ও তাঁকে গুপ্তচর বলে দাবি করে। গত ১৫ নভেম্বর সাজার মেয়াদ শেষ হয় তিলক রাজের। ২৫ নভেম্বর ওয়াঘা সীমানা পেরিয়ে গ্রামে ফেরেন তিনি। কিন্তু ফিরে এসে দেখেন, মা-বাবা কেউই আর বেঁচে নেই। স্ত্রী সংসার ছেড়ে গিয়েছেন প্রায় ১৫ বছর আগেই। এমনকী তাঁর বাড়িও জবরদখল হয়ে গিয়েছে। তিলক রাজ বললেন, ''অন্ধকার কুঠুরি আর আমার এখনকার জীবনের মধ্যে আর কোনও ফারাক নেই।''