হোয়াটসঅ্যাপে তিন তালাক, আদালতে একটি মেয়ে
হোয়াটস অ্যাপের মেসেজ টোন বেজে উঠল। ফোনটা আনলক করে অ্যাপে আঙুল ছোঁয়াতেই ভেসে উঠল মেসেজ...মুহূর্তে চোখের সামনে অন্ধকার দেখলেন বছর আঠাশের যুবতী। মেসেজটি পাঠিয়েছেন তাঁর স্বামী, হোয়াটস অ্যাপ মেসেজে লেখা, `তালাক। তালাক। তালাক।` প্রাথমি বিহ্বলতা কাটিয়ে এবার এই তালাকের বিরুদ্ধেই দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানালেন দিল্লির যুবতী।
ওয়েব ডেস্ক: হোয়াটস অ্যাপের মেসেজ টোন বেজে উঠল। ফোনটা আনলক করে অ্যাপে আঙুল ছোঁয়াতেই ভেসে উঠল মেসেজ...মুহূর্তে চোখের সামনে অন্ধকার দেখলেন বছর আঠাশের যুবতী। মেসেজটি পাঠিয়েছেন তাঁর স্বামী, হোয়াটস অ্যাপ মেসেজে লেখা, "তালাক। তালাক। তালাক।" প্রথমে কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তারপর প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে এই হাইটেক তালাকের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানালেন দিল্লির যুবতী।
ছয় বছর আগে রীতিমতো দেখেশুনে বিয়ে হয় এই যুবতীর। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। ইতিমধ্যেই শ্বশুরবাড়িতে শুরু হয়ে যায় অত্যাচার। আগে থেকেই পণের টাকা কম দেওয়ার 'অভিযোগ' ছিল, তার উপর কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় বাড়তে থাকে অত্যাচারের মাত্রা। মেয়েটির অভিযোগ, একদিন স্বামী তাঁর গলা টিপতেও আসেন। আর তারপরই সন্তানকে নিয়ে বাপেরবাড়ি ফিরে আসেন ওই যুবতী। কিন্তু হঠাত্ স্বামী তালাক দিয়ে দেওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁর। সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে, মেয়েটির বাবা পড়েছেন দোটানায়। একদিকে শরিয়তের প্রতি তাঁর অটল আস্থা আবার অন্যদিকে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আইনি লড়াইয়ের পথে বাধাও দিতে পারছেন না। তবে শুধু ওই যুবতীর বাবাই নয়, গোটা ঘটনায় কার্যত দ্বিধা বিভক্ত মুসলিম সমাজের অনেকেই। এভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তালাক দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ করেছে 'মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড'। বোর্ডের সভাপতি শহিস্তা আম্বের কথায়, "মেয়েদের কষ্টের কথাটা মৌলানাদের ভাবতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপে তালাক আবার হয় নাকি? সুপ্রিমকোর্টের মামলায় এই ঘটনাটিকেও অন্তর্ভূক্ত করব"। জমিয়ত-উলেমা-হিন্দ এর নেতা আব্দুল হামিদ নৌমাদিও এই ঘটনাকে 'যন্ত্রের অপব্যবহার' বলে উল্লেখ করেছেন এবং 'ছেলেটির কড়া শাস্তি' দাবি করেছেন।
তবে তিন তালাক ব্যবস্থার বিলোপ ও ইউনিফর্মড সিভিল কোড নিয়ে আদালতে ও দেশ জুড়ে বিতর্কের মধ্যেই 'হোয়াটসঅ্যাপ'-এ 'তালাক দেওয়া'র ঘটনা যে নতুন বিতর্কের খোরাক দিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। (আরও পড়ুন- 'মিথ্যা' বলে ব্যাকফুটে 'বাকপটু' মোদী)