শর্মিষ্ঠা মুখার্জি, দেরাদুন


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 


গতকাল রাত ১০ টা ৫৫ মিনিটে জানতে পারি, জোশীমঠে নন্দাদেবী হিমবাহের একটি অংশ ভেঙে গিয়েছে। খবর পাওয়ার পরই  ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে পুলিস পৌঁছয়। রাতেই সতর্কতা জারি করা হয় এলাকায়। এরপর সকালে সেই ধস আরও ভয়াবহ আকার নেয়।  সকালে দেখলাম হিমবাহ ভেঙে পড়ার পর প্রবল তোড়ে জল নেমে আসতে শুরু করেছে।


যে রাস্তাটার কথা বলা হয়েছে সেটি হল দেবপ্রয়াগ রোড। সেখানেই চামোলি, রেইনি গ্রামের কাছে গঙ্গার পাশ দিয়ে ব্রিজ তৈরির কাজ চলছে। যেখানে অনেক শ্রমিক কাজ করছিল। তাঁরা ভেসে গিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। 


এমনটা ঘটার আঁচ পেয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের কথায় আবহাওয়া যেন কু ডাকছিল। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। ৪,৫, ৬ তারিখ চামোলি, আওলি, সংলগ্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ভয়াবহ তুষারপাতও হয়। প্রবল বর্ষণে প্রকৃতি তাণ্ডব দেখানো শুরু করেছিল দিন দুয়েক আগে থেকেই। ৫ তারিখ তুষারপাতের সঙ্গে প্রবল বর্ষণ যখন ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছিল, তখনই আন্দাজ করতে পারছিলাম কিছু একটা ঘটতে চলেছে। তারপরই গতকাল রাতে হিমবাহ ভাঙার খবর আসে এলাকায়।


 



আমি গত চার দিন আগেই আওলির সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে পর্যটকের ঢল নেমেছে। গতকাল রাতেই পাহাড়ের ওপর হিমবাহ ভেঙে অনেক বাড়ি ও হোটেলের উপর আছড়ে পড়ে চাঁই চাঁই বরফ। খবর পেয়েছি, বেশ কিছু পর্যটক আটকে গিয়েছেন হোটেলে। বেশ কিছু পর্যটককে সেই বরফ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।


 



গতকাল রাতে হিমবাহে ভাঙন আর আজ তুষার ধস, যার ফলে পাহাড়ের ওপরের সঙ্গে সমতলের যোগাযোগ পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ১০ তারিখ পর্যন্ত এমনই আবহাওয়া থাকবে এই অঞ্চলে।   


শেষ যা খবর পেয়েছি তাতে স্থানীয় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত ১০০-১৫০ শ্রমিক নিখোঁজ। ITBP জানিয়েছে, দুপুর ৩টে পর্যন্ত ৩ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনাস্থলে ৪ কলম সেনা, চিকিৎসকদের ২টি দল এবং ১টি ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্কফোর্স পৌঁছেছে। রয়েছেন উত্তরখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়তও।


পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ধীরে ধীরে। এখবর পাওয়া মাত্র সবার মনেই ভিড় করে এসেছিল ২০১৩-র দুঃসহ স্মৃতি। আশা করি, এবার আর সেরকম হবে না। খুব চিন্তায় আছি আমরা। যাঁরা ভেসে গেলেন, তাঁদের উদ্ধারে জোরকদমে চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। ফিরে এলেই মঙ্গল।