তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বাছতে গিয়ে বেআব্রু কংগ্রেসের সেই পরিচিত গোষ্ঠীকোন্দল
তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে? এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট হল না।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ জেতার পর ফের বেরিয়ে আসল কংগ্রেসের পুরনো ছবি। মুখ্যমন্ত্রী বাছতে গিয়ে দিশেহারা হাইকম্যান্ড। রাস্তায় নেমে পড়েছেন নেতাদের অনুগামীরা। ফলে তিন রাজ্যে জয়ের পর ফের একবার বেআব্রু কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল।
জয়পুরে কংগ্রেস অফিসের সামনে গেহলট-পাইলট সমর্থকদের রীতিমতো হাতাহাতি লেগে যায়।পরের দিনই দিল্লিতে রাহুলের বাড়ির সামনে স্লোগান দিতে দেখা গেল পাইলট অনুগামীদের। মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঠিক করা তো নয় এ যেন ভোট শেষের পরও আরেকটা যুদ্ধ! দলেরই এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অন্য গোষ্ঠী। সচিন পাইলটকেই মুখ্যমন্ত্রীর পদে দেখতে চান তাঁর অনুগামীরা।
অধীর গোষ্ঠী, মান্নান গোষ্ঠী, সোমেন গোষ্ঠী..আরও কত কী! প্রদেশ কংগ্রেসে এ কোন্দল বাংলার মানুষ ভালোই জানেন। দলটা যখন কংগ্রেস, তখন কি আর একযাত্রায় পৃথক ফল হয়! বঙ্গেও যা, রাজপুতানাতেও তা। মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিসগড়, সবই এক ছাঁচে গড়া। কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর দুটো বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জোর দেন রাহুল গান্ধী। দলে হাইকমান্ড সংস্কৃতি বন্ধ করে রাজ্যের নেতাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। আর প্রবীণ নেতাদের সম্মান বজায় রেখেই নেতৃত্বে তুলে আনতে হবে তরুণদের। তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করতে গিয়ে এই নীতিতেই গোল বাধে। সিদ্ধান্ত চাপিয়ে না দিয়ে শক্তি অ্যাপে রাজ্যের নেতাকর্মীদের মতামত নেন রাহুল। আর তাতেই কংগ্রেস অফিসের সামনে গণতন্ত্রের ঢল!
রাজস্থানে যুযুধান প্রবীণ নেতা অশোক গেহলট আর তরুণ তুর্কি সচিন পাইলট।
মধ্যপ্রদেশে আবার সিনিয়র কমল নাথের সঙ্গে জুনিয়র জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার লড়াই।
ছত্তিসগড়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেশ বাঘেল, বিরোধী দলনেতা টিএস সিং দেও, পিছড়ে বর্গের নেতা তাম্রধ্বজ সাউ - সবারই চোখ কুর্সির দিকে।
রাজ্যস্তরে কোন্দল না মেটায় সে রাহুলকেই মুখ্যমন্ত্রীদের নাম চূড়ান্ত করার ভার নিতে হল। দিল্লিতে ডেকে পাঠাতে হয় যুযুধান এই নেতাদের। রাজনৈতিক মহল বলছে, তিন রাজ্যে জয়ের রেশ বেশিদিন থাকবে না। তাই এখনই, কংগ্রেস নেতাদের গোষ্ঠীবাজি বন্ধ করতে না পারলে, তার ষোলো আনা সুযোগ নিয়ে আবার উঠে আসবে বিজেপি। ফলে রাহুলের সামনে চ্যালেঞ্জ রয়েছেই। পাছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেয়, তাই ভোটের আগে কাউকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেননি রাহুল। ৩ রাজ্যে জয়ের পর কিন্তু সেই ঘরের কোন্দল আর ঘরে রাখা গেল না। বিজেপি নেতারা অবশ্য একান্তে দাবি করছেন, তিন রাজ্যেই দল জিতবে, এ আশা রাহুলও করেননি! তাই এখন এতটা আগোছালো দশা।
আরও পড়ুন- ZEE-VMR বিশ্লেষণ: ভোট বিপর্যয় হলেও ২০১৯ সালে মোদীর প্রত্যাবর্তনের আভাস